২০১৬ সালে মারা যান হানিফ মোহাম্মদ। এবার চলে গেলেন তার ভাই ওয়াজির মোহাম্মদও। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ওয়াজিরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
পাকিস্তান ক্রিকেটে ওয়াজিররা চার ভাই ‘মোহাম্মদ ব্রাদার্স’ নামে বিখ্যাত ছিলেন। তাদের মধ্য থেকে এখন বেঁচে আছেন শুধু সাদিক মোহাম্মদ এবং মুস্তাক মোহাম্মদ।
‘মোহাম্মদ ব্রাদার্স’র মধ্যে সবচেয়ে বড় ভাই রইস মোহাম্মদ। তিনি কখনো পাকিস্তানের হয়ে খেলেননি। বাকি চারজনই দলটির হয়ে টেস্ট খেলেছেন।
পাকিস্তান ক্রিকেটের একদম শুরুর দিকে খেলেছেন ওয়াজির। দেশের হয়ে ২০টি টেস্ট খেলেছেন। দু’টি শতরানসহ ৮০১ রান রয়েছে তার। লোয়ার অর্ডার ব্যাটার হিসাবে তার ২৭.৬২ গড় হয়তো খুব ভালো নয়। তবে ক্রিকেটবিশ্বে পাকিস্তানকে প্রতিষ্ঠিত করতে ওয়াজিরের অবদান ছিল অনেক।
ওয়াজিরের অনেক স্মরণীয় ইনিংসের মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে ভালোটি খেলেছেন ১৯৫৪ সালে ওভাল টেস্টে। বিশ্বের প্রথম দল হিসেবে প্রথম ইংল্যান্ড সফরেই টেস্ট জিতেছিল পাকিস্তান। সেই সিরিজ ১-১ ড্র হয়েছিল। ১২টি উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন ফজল মাহমুদ। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়াজির লড়াই না করলে পাকিস্তান জয়ের জায়গায় থাকত না।
মাত্র ৮৫ রানে এগিয়ে ছিল পাকিস্তান। হাতে ছিল দু’টি উইকেট। আট নম্বরে নেমে ওয়াজির ৫৮ রানের জুটি গড়েন জুলফিকার আহমেদের সাথে। শেষ উইকেটে ২৪ রান যোগ করেন মাহমুদ হুসেনের সাথে। চার ঘণ্টা লড়াই করে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন ওয়াজির। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান জেতে ২৪ রানে।
দুই বছর বাদে করাচিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি টেস্টে দলের রান যখন ৭০ রানে ৫ উইকেট, তখন অধিনায়ক আব্দুল হাফিজ কারদারের সাথে ১০৪ রানের জুটি গড়েন ওয়াজির। পাকিস্তান সেই ম্যাচে ৯ উইকেটে জেতে। ওয়াজির করেছিলেন ৬৭।
১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও ভালো খেলেছিলেন। সেই সিরিজ বিখ্যাত গ্যারি সোবার্সের ৩৬৫ রানের কারণে। হানিফও ৩৩৭ রান করেছিলেন একটি ম্যাচে, যেখানে ভাই ওয়াজিরের সাথে শতরানের জুটি ছিল তার। সেই সিরিজি দু’টি শতরানসহ ৪৪০ রান ছিল ওয়াজিরের। তার মধ্যে একটি ১৯৬৭ পর্যন্ত পাকিস্তানের হয়ে দ্রুততম শতরান ছিল। পোর্ট অফ স্পেনে ১৮৯ করে পাকিস্তানকে জিতিয়েছিলেন ওয়াজির।