নাইম শেখকে ‘ভুয়া’ বলা ব্যক্তিকে খুঁজছে পুলিশ

এশিয়া কাপ ও আফগানিস্তান সফর শেষে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে ক্রিকেটার নাইম শেখকে ‘ভুয়া’ বলে অপমানের ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খুঁজছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
বিমানবন্দরেই ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়ো দেয়া হয় নাইম শেখদের
বিমানবন্দরেই ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়ো দেয়া হয় নাইম শেখদের |সংগৃহীত

আফগানিস্তানের কাছে ধবলধোলাই হয়ে দেশের ফেরার পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সাক্ষী বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। বিমানবন্দরেই হেনস্থা করা হয় নাইম শেখদের, ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়ো দেয়া হয় তাদের। এমন ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

আরব আমিরাতে এশিয়া কাপ ও আফগানিস্তানের সাথে টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে সিরিজ শেষে বুধবার রাতে দেশে ফেরে বাংলাদেশ দল। তবে প্রায় ৪০ দিনের এই সফর শেষে টাইগাররা দেশে ফিরেন বিধ্বস্ত হয়ে।

তবে দেশে ফিরেই অপ্রত্যাশিত এক অভিজ্ঞতার শিকার হন নাইম শেখরা। বিমানবন্দর থেকে বের হতেই লাঞ্ছিত হন তারা। কেউ কেউ ব্যঙ্গ করতে থাকেন তাদের। কেউ ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান তুলে দিতে থাকেন দুয়ো।

এদিকে বাংলাদেশ দলের খেলা নিয়ে ঘটেছে আরেক ঘটনা। এক ফেসবুক পোস্টে একজন মিরপুরে বাংলাদেশ দলের খেলা দেখতে গেলে দর্শকদের ‘শায়েস্তা’ করার হুমকি দিয়ে বসেছেন। টিম গঠন করে বেধড়ক পেটানোর ঘোষণা দেন তিনি।

পোস্টে বলা হয়, ‘মিরপুরের কিছু ভাই ব্রাদার মিলে একটা টিম গঠন করতেসি, যারা এই অবস্থায়ও মাঠে এই দলের খেলা দেখতে আসবেন, তাদের শায়েস্তা করার জন্য। খেলা দেখতে এসে কেউ বেধড়ক মার খেলে কেউ মিরপুরবাসীকে দায় দিতে পারবেন না।’

তবে অপর এক পোস্টে তিনি সারকাজম পোস্ট বলে দাবি করেছেন। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ক্রিকেটের এক প্রকার পাগল সাপোর্টার আমি, তাই দেশের সব খেলাই টিভিতে কিংবা সুযোগ থাকলে মাঠে গিয়ে দেখি, সেই সাথে এখনো নিজেও ক্রিকেট খেলি। সেই অনুযায়ী দলের জয় কিংবা পরাজয়, দুই ক্ষেত্রেই ক্রিকেট নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত আমার পর্যবেক্ষণ ভিডিও কিংবা লেখা প্রকাশ করে থাকি যার প্রায় সবগুলোই হয় সার্কাস্টিক।’

এদিকে এমন সব ঘটনায় বেশ উদ্বিগ্ন ক্রিকেট বোর্ড। জানা গেছে, ইতোমধ্যে আইনি পথে হাঁটছে তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির এক পরিচালক এক জাতীয় গণমাধ্যমকে এই বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘দু’টি বিষয়ই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর নজরে আনা হয়েছে। তারা এই দুই ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। সরকার বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সাথে নিয়েছে।’

বিসিবির সেই পরিচালক আরো জানান, ‘খেলায় খারাপ ফলাফল হতে পারে। সে জন্য সমালোচনাও হতে পারে। কিন্তু এমন হুমকি কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা স্টেডিয়ামকে ক্রিকেটার ও দর্শকদের জন্য নিরাপদ রাখতে চাই।’

উল্লেখ্য, এশিয়া কাপটা অম্লমধুর কাটে বাংলাদেশের। শুরুটা ভালো হলেও শেষটা রাঙাতে পারেনি। খুব কাছে গিয়েও মেলাতে পারেনি ফাইনালে উঠার সমীকরণ। হারের চেয়েও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল হারের ধরন, লড়াই করতে পারেনি দল।

এশিয়া কাপ শেষে আরব আমিরাতেই আফগানিস্তানের আতিথ্য নেয় বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি হয় তারা। যেখানে বাংলাদেশের সঙ্গী হয় ভিন্ন দুই অভিজ্ঞতা।

টি-টোয়েন্টি সিরিজটা দারুণ খেলে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানকে পাত্তা না দিয়েই জিতে নেয় সিরিজ, এমনকি ধবলধোলাই দেয় রশিদ খানদের। তবে উল্টা অভিজ্ঞতা হয় ওয়ানডে সিরিজে, ধবলধোলাই হয় টাইগাররাই।

জয়-পরাজয় অবশ্য বড় নয়, মাথা ব্যথার কারণ হারের ধরন। একেবারেই ছন্নছাড়া ছিল দলের অবস্থা। ব্যাট হাতে সবাই ছিল সবাই ছিল নিদারুণ ব্যর্থ। এমনকি শেষ ম্যাচে সবাই মিলে ১০০ রানেই পৌঁছাতে পারেননি দলকে।

ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের সাথে প্রথমবার ধবলধোলাই হওয়ার তিক্ত স্বাদ নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় দেশে ফেরেন। এরপরই ঘটতে থাকে অপ্রত্যাশিত এমন সব ঘটনা।