হতাশা ফুরালো না বাংলাদেশের, বাড়লো রাইজিং স্টারস এশিয়া কাপ জেতার অপেক্ষা। বাগে পেয়েও নাগাল মেলেনি শিরোপার, সুপার ওভারে পাকিস্তানের কাছে ধরাশায়ী টাইগাররা। রোমাঞ্চ ছড়িয়ে হেরে গেছে বাংলাদেশ।
১২৬ রানের লক্ষ্য, আধুনিক ক্রিকেটে বেশ সহজ সমীকরণই বলা যায়। তবে ছোট এই লক্ষ্যটাও কঠিন হয়ে উঠে শুরু থেকেই। ৯৭ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে পৌঁছে যায় হারের দোরগোড়ায়।
সেখান থেকে গফফার সাকলায়েন ও রিপন মণ্ডল ম্যাচে ফেরান বাংলাদেশকে। তবে ২ ওভারে ২৭ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেননি, ২৬ রান তুলে দলকে পৌঁছে দেন সুপার ওভারে। তবেসেখানে আর পেরে উঠেনি টাইগারা।
সুপার ওভারে ১ রান তুলতেই প্রথম উইকেট হারায় দল, দ্বিতীয় বলে ওয়াইডসহ আসে ৫ রান। পরের বলে জিশান আলম বোল্ড হলে মাত্র ৬ রানের পুঁজি আসে। যা পাকিস্তান ৪ বলেই পেরিয়ে যায়, সেই সাথে জিতে যায় শিরোপা।
এই নিয়ে রাইজিং স্টারস এশিয়া কাপের ফাইনালে দুইবার হারলো বাংলাদেশ, দুইবারই পাকিস্তানের কাছে। এর আগে ২০১৯ সালেও (তখনকার ইমার্জিং এশিয়া কাপ) পাকিস্তানের কাছে শিরোপা হাতছাড়া করে টাইগাররা।
অবশ্য শিরোপা জয়ের উপলক্ষ পেয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ১২৬ রানের লক্ষ্যে জিশান আলম ও হাবিবুর রহমান সোহান মিলে প্রথম দুই ওভারেই করেন ২১ রান। তৃতীয় ওভারে ৪ বলে ৬ করে জিশান আউট হলে ভাঙে জুটি।
চতুর্থ ওভারে ফেরেন সোহানও। সাদ মাসুদের প্রথম ৫ বলে দুই চার ও এক ছক্কা হাঁকালেও ওভারের শেষ বলে ক্যাচ দেন ১৭ বলে ২৬ রান করে। এরপরই বাংলাদেশের ইনিংসে ধস নামে, ৫৩ রানের মাঝেই হারায় ৭ উইকেট।
শুরুটা হয় মাহিদুল ইসলামকে দিয়ে। টি-টোয়েন্টি জাতীয় দলে রোববারই ডাক পেয়েছিলেন তিনি, তবে উপলক্ষটা রাঙাতে পারেননি। ৫ বল খেলে ০ রানে ফেরেন তিনি। দ্রুত ফেরেন ইয়াসির আলীও (৮)।
অধিনায়ক আকবর আলীও দলের বিপদে হাল ধরতে ব্যর্থ হন, ১০ বল খেলে ২ রানের বেশি করতে পারেননি। আর মাহফুজুর রহমান রাব্বি ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে একই ওভারে ফেরান সুফিয়ান মুকিম।
১০.৩ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে রাকিবুল হাসান টেনে তোলার চেষ্টা করলেও তা যথেষ্ট হয়নি। তাকে কেউ সমর্থন দিতে পারেননি। মেহরাব হাসান চেষ্টা করেও ফেরেন ২১ বলে ১৯ করে।
তখনও অবশ্য আশার আলো হয়েছিলেন রাকিবুল, তবে ৩ ওভারে যখন ৩০ রান প্রয়োজন তখন ফেরেন তিনিও। আহমেদ দানিয়েলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ২১ বলে ২৪ রানে শেষ হয় তার ইনিংস। ৯৬ রানে উইকেট হারায় দল।
সেখান থেকে ১৯ তম ওভারে আবারো বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান গফফার সাকলায়েন ও রিপন মণ্ডল। ৩ ছক্কায় ২০ রান নিয়ে জমিয়ে তুলেন খেলা। শেষ ওভারে তখন প্রয়োজন দেখা দেয় মাত্র ৭ রানের।
তবে ৬ রানের বেশি নিতে পারেননি সাকলায়েন (১২ বলে ১৭) ও রিপন মণ্ডল (৯ বলে ১১)। ফলে পাকিস্তানের সমান ১২৫ রানে থেমেছে ইনিংস। ফলে নাটকীয়তায় ভরপুর এই ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।
এর আগে ফাইনালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই উইকেট হারায় পাকিস্তান শাহীনস। রিপন মণ্ডলের করা ইনিংসের প্রথম বলেই রান আউট হয়ে ফেরেন ইয়াসির খান।
দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ ফাইককে ফেরান মেহেরাব হাসান। ২ রানে ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান। পরে জুটি গড়ার চেষ্টা করেছিলেন গাজী ঘুরি (৯)। তবে সেটাও বড় হতে দেননি রাকিবুল হাসান।
বাকিদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্তে হাল ধরার চেষ্টা করেন মাজ সাদাকাত। ১৮ বলে ২৩ রানে শেষ হয় তার ইনিংস। আরাফাত মিনহাসকেও দ্রুত ফেরানোর সুযোগ ছিল, তবে তার ক্যাচ হাতছাড়া করেন জিশান আলম।
১৪.২ ওভারে অধিনায়ক ইরফান খানকে হারায় পাকিস্তান, ২২ বল খেলে ৯ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। ৭৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় তারা। সেখান থেকে হাল ধরেন সাদ মাসুদ।
শেষের দিকে মাসুদের ২৬ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে ভর করে শেষ বলে অল আউট হওয়ার আগে ১২৫ রানের পুঁজি পায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের হয়ে রিপন মণ্ডল ৩টি ও রাকিবুল হাসান ২টি উইকেট নিয়েছেন।



