সক্রিয় আ’লীগ সিন্ডিকেট

কক্সবাজারে ৭০ লবণ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ

আতিকুর রহমান মানিক, ঈদগাঁও (কক্সবাজার)
Printed Edition

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর শিল্প এলাকায় পরিবহন নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের প্রভাব বিস্তারকারী ট্রান্সপোর্ট সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তাদের তৎপরতায় এলাকায় প্রায় ৭০টি লবণ কারখানায় গত দুই দিন ধরে উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধ হয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন ১০ সহস্রাধিক শ্রমিক ও ব্যবসায়ী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার ও বুধবার থেকে ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদ- ইজারাকৃত লবণ রফতানি শুল্ক আদায়কে কেন্দ্র করে ট্রান্সপোর্ট মালিকরা লবণবাহী ট্রাক শিল্প এলাকায় প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। এতে প্রক্রিয়াজাত লবণ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো বন্ধ হয়ে গেছে।

ইসলামপুর লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি শামসুল আলন আজাদ বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের বৈধ ইজারার টোল আদায়কে কেন্দ্র করে পরিবহন মালিকরা দুই দিন ধরে ট্রাক প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। দ্রুত সমাধান না হলে মিল মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।’

ইজারাদার নূরুল আমিন ও মনির আহমদ অভিযোগ করেন, ইউনিয়ন পরিষদের প্রকাশ্য নিলামে ইজারা নেয়ার পরও গত সাত মাস ধরে সরকার অনুমোদিত টোল আদায়ে বাধা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ- ঘনিষ্ঠ একদল পলাতক নেতা। বরং তারা ইজারাদারের নামে কয়েক গুণ বেশি টাকা ট্রাক চালকদের কাছ থেকে আদায় করছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। মঙ্গলবার থেকে তারা নিজেরা টোল আদায় শুরু করতে গেলে ট্রাক ঢুকতে দেয়া হয়নি।

বগুড়া থেকে আসা ট্রাকচালক সিরাজ শেখ বলেন, ‘টোলের টাকা এতদিন ট্রান্সপোর্ট সিন্ডিকেটই কেটে রাখত। এখন আবার মিল এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছে না। দুই দিন ধরে আমরা ট্রিপ ছাড়া বসে আছি।’

স্থানীয়রা জানান, অপসারিত জেলা পরিষদ সদস্য মো: আরিফ, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক মো: শরিফসহ কয়েকজন নেতা দীর্ঘদিন ধরে ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায় একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছেন। তাদের নেতৃত্বে গঠিত সিন্ডিকেটই এলাকায় অচলাবস্থার মূল কারণ।

ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন বলেন, ‘এতদিন আওয়ামী সিন্ডিকেট নামমাত্র মূল্যে ইজারা নিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এবার নিয়ম মাফিক ইজারা দেয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে বৈধ টোল আদায়ে বাধা দিচ্ছে।’

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহন মালিক জানান, মিল মালিকদের সাথে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। গত বুধবার রাতের মধ্যেই সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঈদগাঁও থানার ওসি ফরিদা ইয়াছমিন বলেন, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিমল চাকমা জানান, ‘বৈধ টোল আদায়ে বাধা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’