শেরপুর পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার প্রধান ও অপ্রধান সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ ও গর্ত। নিম্নমানের কার্পেটিং, যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে ব্যর্থ ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে এসব সড়ক বছরের প্রায় ছয় মাস ধরেই পানিতে ডুবে থাকে। ফলে গর্ত আর খানা-খন্দে ভরা রাস্তাগুলোতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। নিত্যদিন তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীকে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কগুলো টেকসইভাবে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন নগরবাসী ভুক্তভোগীরা। পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের ৪১টি মহল্লায় প্রায় ২৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনে বিস্তৃত ২২৪ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১২২ কিলোমিটার পাকা ও ১০২ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে। এর বেশিরভাগই এখন জরাজীর্ণ। নিউ মার্কেট ও এটিআই সড়ক, ডিসি অফিস গেট থেকে তিনআনী বাজার মোড়, পশু হাসপাতাল থেকে বটতলা, আনারকলি সেলুন মোড় থেকে রাজবল্লভপুর, খরমপুর মোড় থেকে ইয়াতিমখানা মোড়, ডায়াবেটিক হাসপাতাল থেকে ইলিয়াস চেয়ারম্যান বাড়ি পর্যন্ত বিস্তৃত সড়কগুলোতে দীর্ঘ দিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী অবস্থার পড়ে আছে।
নবীনগর হয়ে পুলিশ লাইন সড়ক এবং ঢাকলহাটি হোসেন মোল্লার খলা ও শেখহাটি বাজার মোড় পর্যন্ত সড়ক দু’টি সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। বিগত দিনের টানা বৃষ্টিতে খানা-খন্দে ভরা রাস্তাগুলোতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। ছোট-বড় দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চালক ও যাত্রীরা। শেরপর শত বছরের পুরনো প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও নাগরিকদের দুর্ভোগ নিরসনে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই- এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। সড়কে মাঝে মধ্যে জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার কাজ করা হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই তা আবার নষ্ট হয়ে যায়। এতে অপচয় হয় সরকারি অর্থ কিন্তু নগরবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হয় না। নবীনগরের বাসিন্দা রবিন, রোকন, মিজান, রফিক ও ফোরকান জানান, নবীনগর-পুলিশ লাইন সড়কটি সংস্কারের কিছু দিনের মধ্যেই আবার খানা-খন্দে ভরে গেছে। এতে করে রোগী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বাগরাক্সা এলাকার ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার নাগরিক হয়েও আমরা ন্যূনতম সুবিধা পাই না। অধিকাংশ সড়ক ভাঙাচোড়া, ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকার্যকর। রাস্তার পাশে জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করার কেউ নেই। কোনো কোনো স্থানে বিদ্যুতের বাতিও জ্বলে না। মনে হয় এই পৌরসভার কোনো অভিভাবকই নেই।
চাপাতলীর বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন জানান, খরমপুর মোড়-ইয়াতিমখানা মোড় সড়কটি সংস্কারের অভাবে দুর্ভোগে পড়েন পথচারী ও যাত্রীরা। ভুক্তভোগীরা জানান, সংস্কারের সময় সঠিক তদারকি না থাকায় মানসম্মত কাজ হয় না, অল্প দিনেই আবার নষ্ট হয়ে যায়। এতে যেমন জনগণের কষ্ট বাড়ে, তেমনি রাষ্ট্রের অর্থও অপচয় হয়। শেরপুর পৌরসভার প্রশাসক আরিফা সিদ্দিকা বলেন, নবীনগর পুলিশ লাইন সড়কটি ‘লোকাল গভর্নমেন্ট, রেসপন্স অ্যান্ড রিকভার প্রজেক্ট’-এর আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রাক্কলন তৈরি করা হয়েছে, চলতি অর্থবছরেই কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া অন্যান্য সড়কের কাজ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বরাদ্দ অনুযায়ী চলছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপি বরাদ্দও পাওয়া গেছে, যার ভিত্তিতে প্রকল্প যাচাই-বাছাই চলছে এবং পর্যায়ক্রমে সড়ক সংস্কার সম্পন্ন হবে।



