অনলাইন জুয়ায় বিপর্যস্ত কেন্দুয়া, নীরব প্রশাসন

আবু বকর ছিদ্দিক, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা)
Printed Edition

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় অনলাইন জুয়ার দৌরাত্ম্য ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও অ্যাপসের মাধ্যমে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে অলিগলি, যত্রতত্র চলছে এই জুয়ার লেনদেন। অ্যাডমিন ও এজেন্টদের প্ররোচনায় রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্নে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ জড়িয়ে পড়ছে সর্বনাশা এ নেশায়। অথচ প্রশাসন নীরব, এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, অনলাইন জুয়ার নেটওয়ার্কে রয়েছে একাধিক অ্যাডমিন ও এলাকাভিত্তিক মানি সাপ্লাইয়ার বা এজেন্ট। তারা নতুন খেলোয়াড় খুঁজে গোপনে বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত করে, দেখায় আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন। বাজি ধরা থেকে শুরু করে নানা কৌশল শিখিয়ে জুয়ার প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে। স্থানীয়দের দাবি, এই অনলাইন জুয়া কেবল বিনোদনের আড়ালে চলছে না; বরং এটি বিদেশে টাকা পাচারেরও একটি বড় মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

জুয়া খেলে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ, দেখা দিচ্ছে পারিবারিক অশান্তি ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা। মাঝে মাঝে পুলিশ মোবাইল জব্দ ও কয়েকজনকে আটক করলেও অদৃশ্য কারণে কিছুক্ষণ পরই তাদের ছেড়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি উপজেলা হলরুমে জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিষয়টি জোরালোভাবে আলোচনা হলেও বাস্তবসম্মত কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, কয়েকজন এজেন্ট রাতারাতি পরিবর্তন হয়ে উঠেছে বড়লোক। আগে ছোটখাটো ব্যবসা করলেও এখন দামি মোবাইল হাতে বাইকে ঘুরে বেড়ায়, যেন ‘শিল্পপতি’ এমন মন্তব্য অনেকেরই।

কচন্দরা গ্রামের ইদ্রিস আলী, বিদ্যাবল্লভ গ্রামের আমিনুল ইসলাম তালুকদার, রামচন্দ্রপুরের খায়রুল আলম ভূঁইয়া, পৌরসদরের অর্ক ইসলাম ও মাসকার জুয়েল রানা বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহারে ছাত্র, যুবকসহ সাধারণ মানুষ সর্বস্ব হারাচ্ছে। তাদের দাবি, সুষ্ঠু সমাজ গঠনে অনলাইন জুয়া বন্ধে জরুরি উদ্যোগ নেয়া এখন সময়ের দাবি।