প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবি মেনে নিন : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

Printed Edition

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণের দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। গত রোববার থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্যপরিষদের উদ্যোগে স্বীকৃত নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। সারা দেশ থেকে আগত শিক্ষক-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে প্রেস ক্লাব এলাকা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির মঞ্চে পরিণত হয়েছে। তাদের এই দাবির প্রতি সমর্থন জানাতে গতকাল সোমবার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক এ বি এম ফজলুল করীম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ইসলামিক এডুকেশন সোসাইটির পরিচালক অধ্যক্ষ ড. ইকবাল হোসাইন ভূঁইয়া, বাআশিফের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক রবিউল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি রাশিদুল ইসলামসহ প্রমুখ।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আজকের এই কর্মসূচি কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, এটি শিক্ষকদের টিকে থাকার আন্দোলন। যারা জাতি গঠনের কারিগর, আজ তাদের জীবন চলছে মানবেতর কষ্টে। বহু বছর ধরে সরকারের স্বীকৃতি পাওয়া সত্ত্বেও নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি। অথচ শিক্ষকরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে, শিক্ষার্থীদের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছেন। শিক্ষকদের এই অবদান রাষ্ট্রের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন তবুও শিক্ষকরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

তিনি আরো বলেন, সরকার বারবার আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন আমরা দেখিনি। একজন শিক্ষক যখন ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হন, তখন পুরো শিক্ষাব্যবস্থাই দুর্বল হয়ে পড়ে। আমরা সরকারের কাছে বিনীত কিন্তু দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানাই অবিলম্বে সব স্বীকৃত নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করতে হবে। শিক্ষক সমাজের প্রতি ন্যায়বিচার না হলে শিক্ষকরা বাধ্য হবে আরো কঠোর কর্মসূচির পথে যেতে।

বিশেষ অতিথি বক্তব্যে অধ্যাপক এ বি এম ফজলুল করীম বলেন, সারা দেশে প্রায় দুই সহস্রাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে যারা সরকারের সব শর্ত পূরণ করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান নিজ প্রতিষ্ঠানের নামে বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে, ভালো ফলাফল করছে, শিক্ষার মান বজায় রাখছে। তবুও তাদের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকে দারিদ্র্যের কষ্টে জীবন পার করছেন। এটি শিক্ষকদের জন্য যেমন অপমানজনক, তেমনি রাষ্ট্রের জন্যও এক গভীর ব্যর্থতার চিত্র। তিনি আরো বলেন, আমরা আর প্রতিশ্রুতি চাই না, আমরা বাস্তবায়ন চাই। সরকার যদি সত্যিই শিক্ষার মান উন্নয়নে আন্তরিক হয়, তবে শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এক দেশের মধ্যে দুই নীতি চলতে পারে না, কেউ এমপিওভুক্ত সুবিধা পাবে, কেউ বঞ্চিত থাকবে- এটা কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত নয়। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে সব স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হোক।

বিশেষ অতিথি শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমরা দেশের নাগরিক, আমাদের অধিকারও সমান। শিক্ষকরা জাতির ভিত্তি তৈরি করেন, অথচ তাদের জীবন অনিশ্চয়তায় ভরপুর। সরকারের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া, নইলে শিক্ষক সমাজ বাধ্য হবে কঠোর আন্দোলনের পথে যেতে।