এস এম রহমান পটিয়া-চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম)
দক্ষিণ চট্টগ্রামে শীতকালীন আগাম শাকসবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে আগাম জাতের মুলা, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, লাশশাক ও শিম বাজারে এসে গেছে। শীতের আগাম সবজি ভালো দামে বিক্রির পাশাপাশি ভালো উৎপাদনের প্রত্যাশায় কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। জেলায় ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে ৬ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিকটন শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অপর দিকে সেই প্রত্যাশা পূরণে জেলায় বসতবাড়িতে সবজি চাষে ৫ হাজার ও মাঠে সবজি চাষে ৯ হাজারসহ ১৪ হাজার কৃষকের মাঝে সরকারিভাবে কৃষি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলের চাষিরা হরেক রকম শাকসবজি চাষে লাভবান হয়ে আসছেন। এর ফলে শাকসবজি চাষের পরিধিও যেমন বাড়ছে তেমনি সবজি চাষির সংখ্যাও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ সমগ্র জেলায় শীতকালীন সবজির মধ্যে মুলা, বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, বরবটি লাউ, মিষ্টিকুমড়া, ঢেঁড়স, শালগম, গাজর, লালশাক, পালংশাক, কপিশাক, ডাঁটা, ডাঁটাশাকসহ নানা জাতের শীতকালীন শাকসবজি চাষ করেন এ অঞ্চলের চাষিরা।
গতকাল সরেজমিন দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারীর পূর্ব দোহাজারী শঙ্খ নদীর দুই-তীরে চাষিদের শীতের আগাম শাকসবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। চন্দনাইশ দোহাজারী এলাকার সবজি চাষি আবদুল করিম বলেন, শীতের আগাম শাকসবজি ৫ কানি জমিতে চাষের টার্গেট নিয়ে কাজ করছেন। তিনি এবার মুলা, বরবটিসহ কয়েক রকম শাকসবজি আবাদ করেছেন। তিনি বলেন, মুলা, লালশাক ও বেগুন বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন। তার আশা, এবার আবহাওয়া ভালো থাকলে শঙ্খ নদীর তীরের হাজার হাজার চাষি লাভবান হবেন। সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি অফিসার জানিয়েছেন ইতোমধ্যে শীতের আগাম শিম, মুলা, বেগুন, লালশাক, মিষ্টিকুমড়া ও লাউসহ বেশ কয়েকটি আগাম সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। উপসহকারী কৃষি অফিসার বাবু সম্ভু দাশ জানান, আর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই পুরোদমে বাজারে আসতে শুরু করবে শীতকালীন শাকসবজি।
চট্টগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার ২০২৫-২০২৬ শীতকালীন মৌসুমে জেলায় প্রতি হেক্টরে গড়ে ২০ মেট্রিকটন সবজি উৎপাদন ধরে ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে ৬ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিকটন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে প্রায় ৮২৫ হেক্টর পটিয়ায় এক হাজার ৭০ হেক্টর কর্ণফুলীতে ২৭০ হেক্টর, আনোয়ারায় এক হাজার ৩১৩ হেক্টর, চন্দনাইশে দুই হাজার ২৪০ হেক্টর, লোহাগাড়ায় এক হাজার ৩৫০ হেক্টর, সাতকানিয়ায় দুই হাজার ২১০ হেক্টর, বাঁশখালীতে তিন হাজার ১৩০ হেক্টর সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক আপ্রু মার্মা চলতি বছর সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করে বলেন, মৌসুমে এবার জেলায় ১৪ হাজার চাষিকে সরকারিভাবে কৃষি প্রনোদনা দেয়া হয়েছে।



