লাইফস্টাইল হোক পরিচ্ছন্ন

Printed Edition
লাইফস্টাইল হোক পরিচ্ছন্ন
লাইফস্টাইল হোক পরিচ্ছন্ন

মীযান মুহাম্মদ হাসান

ইসলাম আল্লাহপ্রদত্ত একটি জীবনবিধান। যাতে রয়েছে প্রত্যেকটি বিষয়ের পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এমন কোনো বিষয় নেই; যেখানে যে বিষয়ে ইসলাম আমাদেরকে সঠিক নির্দেশনা দেয়নি। হ্যাঁ, পবিত্রতা তথা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে ইসলাম অনেক বেশি গুরুত্বারোপ করেছে। সহিহ মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, রাসূল সা: বলেন, ‘পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক অংশ’।

আর পবিত্রতা অর্জনের জন্য পানি ব্যবহার করা। পানি না পাওয়া গেলে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করার বিধানও রয়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন ইবাদতের আগে পবিত্র অর্জন করা জরুরি।

যেমন-আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেন-‘হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাজে দাঁড়াও, তোমাদের মুখমণ্ডল ধৌত করো এবং দুই হাত কনুইসহ ধৌত করো। আর মাথা মাসাহ করো এবং দুই পা টাখনুসহ ধৌত করো।’ (সূরা মায়িদা-৬)

উপর্যুক্ত হাদিস ও কুরআনের আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, পবিত্রতা তথা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করা, বিশেষত নামাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত সম্পন্ন করার আগে পবিত্রতা অর্জন করা জরুরি। এ থেকে বাহ্যিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করার গুরুত্বও উঠে এসেছে। বাস্তবিকই অজু বা গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করার ফলে শরীর ও দেহ মন ভালো থাকে। মানসিক প্রশান্তি অনুভব হয়।

অন্যথায় শরীরে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু বা ময়লা জমে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাথে যুক্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। যা থেকে চুলকানি হওয়ারও ঝুঁকি থাকে। কাজেই এমন কিছু বিষয় রয়েছে। যেগুলো পরিষ্কার বা কর্তন করার মাধ্যমে অর্জিত হতে পারে মানসিক প্রফুল্লতা। লক্ষ করুন! হাদিসে নবীজি সা: এমন গুরুত্বপূর্ণ কয়টি বিষয় উল্লেখ করেছেন। যেসব মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। আর এসব বিষয়ে যতœশীল হওয়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতারই প্রমাণ বহন করে। যা সুস্থ রুচির পরিচায়কও বটে। এ জন্য সচেতন প্রত্যেকটি মানুষের উচিত হবে নি¤েœাক্ত বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি মনোযোগী হওয়া। নিয়মিত নখ, চুল ও অবাঞ্ছিত লোম ইত্যাদি পরিষ্কার করা। নিয়মিত পরিধান করার পোশাকও পরিষ্কার করা জরুরি।

সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা রা: বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূল বলেছেন, ‘পাঁচটি বিষয় স্বভাবজাত : ১. খতনা করা; ২. নাভির নিচের অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা; ৩. মোচ-গোঁফ কাটা; ৪. নখ কাটা; ৫. বগলের লোম পরিষ্কার করা।’ (বুখারি ও মুসলিম)

সাহাবি হজরত আনাস রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূল সা: মাথায় অত্যধিক তেল ব্যবহার করতেন। (শামায়েলে তিরমিজি)

আর সহিহ বুখারির বর্ণনায় এসেছে, মাঝে মধ্যে উম্মুল মুমিনিনগণও রাসূল সা:-এর মাথায় চিরুনি করে দিতেন। তথা চুল আঁচড়ে দিতেন। চুল পরিপাটি করে রাখতেন।

হাদিস দু’টি আমাদেরকে সুন্দর জীবনাচার বা সুস্থ সুরুচি সম্পন্ন লাইফস্টাইলের প্রতিই উদ্বুদ্ধ করে। অন্যথায় এলোমেলো চুল, মুখভর্তি গোঁফ ও নখবিশিষ্ট মানুষকে অনেকটা অদ্ভুত পাগলের মতো দেখাবে। যা সুস্থ রুচির পরিচয় হতে পারে না। এ জন্য আমাদের লাইফস্টাইল হওয়া দরকার সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও পরিপাটি।

লেখক : খতিব, ভবানীপুর মাইজপাড়া হক্কানি জামে মসজিদ, গাজীপুর