নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকায় একটি বাসায় স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের অফিসার মো: নজরুল ইসলামকে (৪০) কুপিয়ে হত্যার ৯ দিন পার হলেও শনাক্ত করা যায়নি আসামিদের। নিহত নজরুল ইসলামের বড় ভাই নুরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও শাশুড়ি মিলে গলা কেটে তাকে হত্যা করেছে। আমরা সবধরনের প্রমাণ দেয়ার পরেও পুলিশ আসামিদের ধরা তো দূরের কথা এখন পর্যন্ত শনাক্ত করতে পরেনি। পুলিশ শুধু বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই তারা পদক্ষেপ নেবে।
নুরুল ইসলাম বলেন, আমার ছোট ভাইয়ের বউ মোছা: সায়মা শারমিন ও তার শাশুড়িকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ২৭ সেপ্টেম্বর আমাদের সবাইকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে; কিন্তু ছোট ভাইয়ের বউ ও তার শাশুড়ি স্বীকার করতে চাচ্ছে না। তারা এটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চাচ্ছে। এটা কোনো আত্মহত্যা নয়, একটি হত্যাকাণ্ড। কারণ মরার আগে মাকে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করেছিল। তা ছাড়া সে নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে হাতসহ তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত হয়।
এই বিষয়ে লালবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মমলার তদন্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা বিয়ষটি নিয়ে কাজ করছি। নিহত নজরুল ইসলামের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না এলে সঠিক কারণ বলা যাবে না। রিপোর্ট আসতে কিছু দিন সময় লাগতে পারে। তারপরেও আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পুরান ঢাকার লালবাগে আরএনডি রোডে জমজম মদিনা টাওয়ারের ছয়তলার একটি বাসায় মো: নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যাংকারকে স্ত্রী ও শাশুড়ি মিলে গলা কেটে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন তার বড় ভাই নুরুল ইসলাম। পরে নিহতের বড় ভাই বাদি লালবাগ থানায় একটি মামলা করেন। তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে তার স্ত্রী এবং শাশুড়ি মিলে হত্যা করেছে।
হত্যার অভিযোগে নুরুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই যখন ঘুমিয়েছিল তখন তার স্ত্রী সায়মা শারমিন (৩৫) বঁটি দিয়ে গলায় কোপ দেয়। আমার ভাই তখন লাফিয়ে উঠে বঁটি ধরতেই হাত কেটে যায়। আমার ভাই রক্তাক্ত অবস্থায় মাকে বলেছিল ‘মা, বঁটিটা নাও, বঁটিটা নাও’ কিন্তু ভাইয়ের স্ত্রীর হাত থেকে ওই বঁটিটা আর ছাড়াতে পারেনি। ঘটনার পর ছোট ভাইয়ের শরীরের গলাসহ বিভিন্ন জায়গায় কোপানোর চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমার ছোট ভাই লালবাগ স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের অফিসার পদে চাকরি করত। ঢাকায় বদলি হওয়ার পর থেকে সে তার স্ত্রী শারমিন ওরফে নোভা, তার দুই ছেলে এবং শাশুড়িকে নিয়ে ওই বাসায় থাকত। তিন মাস আগে আমার মা ওই বাসায় এসে থাকা শুরু করেন। ঢাকায় আসার পর থেকে আমার মাকে নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। আমরাও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম মাকে নিয়ে যাবো। এরই মধ্যে আমার ছোট ভাইকে তার শাশুড়ি ও স্ত্রী মিলে হত্যা করেছে। নজরুলের সাত বছর ও চার বছরের দু’টি ছেলে সন্তান আছে।