সুষ্ঠু ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা শুরুর নির্দেশ ড. ইউনূসের

শামছুল ইসলাম
Printed Edition

পুরো জাতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার মাধ্যমে আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা শুরু হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই নির্বাচনটি গুরুত্বের সাথে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রাজধানীর বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় এক বার্তার মাধ্যমে তিনি এই নির্দেশ দেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বক্স চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. নিয়াজ আহমেদ খান, পুলিশ প্রধানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচনে কোনো অস্থিরতা তৈরি হলে তাতে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ স্যাবোটেজ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়। ভোটের ফলাফলের পর হলগুলোতে বিজয়ীরা মিছিল করতে পারে। বিজয়ী মিছিল নিরুতসাহিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায়, ভোটের আগের রাতেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি করা হবে। এরপর সেই কেন্দ্রগুলোতে সকাল পর্যন্ত সিলগালা করে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় একজন উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রে জগন্নাথ হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ভোটাররা ভোট দেবেন। এরমধ্যে একই ছাত্রসংগঠনের প্রার্থীরা নিশ্চিত যে তারা সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ভোট পাবে না। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ভোটাররা ওই দুইটি হলের ভোটারদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে এ জন্য তিনটি হলের ভোটকেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক প্রবেশ ও প্রস্থান পথ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

চানখাঁরপুল এলাকায় একটি ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা পুরো বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকে। তারা নির্বাচনে প্রভাবিত করতে পারে এ জন্য ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সর্তক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়।

কোনো প্যানেল অধিকাংশ পদে বিজয়ী হলে বিজিত প্রার্থীরা ফল মেনে না নেয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাবি ভিসি ড. নিয়াজ আহমেদ খান। ফল প্রকাশের সময় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ ছাড়াও নির্বাচনের আগেই সম্ভব্য প্রার্থীদের থেকে নির্বাচন মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

সভায় ঢাবি ভিসি বলেন, আমার নানা রকমের সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে তবে ভোটে অংশ নেয়া কোনো দলের বা প্রার্থীর প্রতি আমার কোনো দুর্বলতা নেই।

সভায় বুথের প্রবেশ পথেই ভোটারদের হাতে অমোচনীয় কালি দিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যাতে তারা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ এবং বাইর হতে না পারে। ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা যেন অবস্থান না করতে পারে সে জন্য আগের দিনই মাইকিং করা হচ্ছে।