খান জাহান আলী চৌধুরী নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মুখে গতবছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বদলে গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের চিত্র। এই আসনটি ২১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত।
এ আসনে বিএনপিতে রয়েছে ডজন খানেক মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা শহর থেকে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে জামায়াতের দলীয় মনোনীত প্রার্থী সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের আইনজীবী আব্দুল বাতেন রয়েছে সুবিধাজনক অবস্থানে। ৫ আগস্ট জুলাই বিপ্লব দিবসকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি চার ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আসনটি নিজেদের দখলে আনতে প্রতিটি পাড়া মহল্লায় নিজ দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী। মূলত এ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করেন ভোটাররা।
এ ছাড়া গণঅধিকার পরিষদেও রয়েছে একাধিক প্রার্থী। ইসলামী আন্দোলন, সিপিবি ও খেলাফত মজলিসের একক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও দেখা মেলেনি এনসিপির প্রার্থীর। অন্যদিকে নির্বাচনী মাঠে না থাকলেও আলোচনায় রয়েছে সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল কামরুজ্জামান ও লীরা গ্রুপের কর্ণধার বিএনপি নেতা শিল্পপতি আলমগীর ইকবাল। স্বাধীনতার পর এ আসন থেকে আওয়ামী লীগ ১২, জাতীয়পার্টি তিনবার ও বিএনপি দুইবার জয়লাভ করে।
আসনটিতে মোট ভোটার চার লাখ ৬৯ হাজার ৭৩৭। পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৪৫ হাজার ৪২১ জন, নারী ভোটার দুই লাখ ২৪ হাজার ৩১৪ জন, হিজরা ভোটার চারজন।
নবীনগর থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও কৃষকদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ১৯৯৬ সালে দলের মনোনীত প্রার্থী তকদীর হোসেন মোহাম্মদ জসিম। মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন বিএনপির জেলা কমিটির সাবেক আহ্বায়ক ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আইনজীবী এম এ মান্নান, সাবেক এমপি কাজী আনোয়ার হোসেনের ছেলে ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কাজী নাজমুল হোসেন তাপস। সাবেক ছাত্রনেতা ও কেন্দ্রীয় জাসাসের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কারা নির্যাতিত নেতা সালাহউদ্দিন ভূঁইয়া শিশির। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে ও নবীনগরের বিএনপি দলীয় নির্যাতিত নেতাকর্মী সামর্থ্যরে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক ও ব্রা??হ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য আইনজীবী রাজিব আহসান চৌধুরী পাপ্পু।
কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক কে এম মামুনুর রশীদ। এ ছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ডাকসুর সূর্যসেন হলের সাবেক জিএস সায়েদুল হক সাঈদ, কারা নির্যাতিত কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা আলী আজ্জম জালাল, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল করীম, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আইনজীবী আবদুল্লা আল বাকী, ঢাকা মহানগর দণি কৃষক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুল হাসনাত আলম রাজিব ভূঁইয়া। এ ছাড়া গণঅধিকার পরিষদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন আইনজীবী মেহেদী হাসান ও কাজী রাজীউর রহমান তানভীর। অপরদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সিপিবি প্রার্থী শাহীন খান, খেলাফত মজলিসের প্রার্থী আব্দুল কাইয়ুম ফারুকী।
এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে সৌদি আরব প্রবাসী নজরুল ইসলাম নজুর।
সাবেক ছাত্রনেতা তকদির হোসেন মোহাম্মদ জসিম বলেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ভীড়ে যখন এ আসনে বিএনপির কোনো অস্তিত্ব ছিল না সে সময় বিএনপিকে প্রতিষ্ঠিত করি।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনোনয়ন প্রত্যাশী আইনজীবী এম এ মান্নান বলেন, বিগত ৪০ বছর ধরে নবীনগরের মাঠে বিএনপির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের আইনজীবী, সুপ্রীম কোর্ট বারের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জামায়াতে ইসলামের প্রার্থী আবদুল বাতেন বলেন, প্রচারণায় বেশ সাড়া পাচ্ছি। দলের নেতাকর্মীসহ আমজনতা আমার পে কাজ করে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি নবীনগরের উত্তোলিত গ্যাস নবীনগরে ব্যবহার ও অবকাঠামো উন্নয়নের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে। শিা ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তনসহ নবীনগরের স্বার্থে কাজ করাই হলো আমার মূল ল্য। কর্মসংস্থান সৃষ্টির ল্েয কারিগরি শিার ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে।