ঢাকায় ঝম ঝম বৃষ্টি। কোনো কোনো রাস্তায় মুহূর্তেই জমে গেছে হাঁটু পানি। নিচু এলাকার নিচতলার বাসাতেও ঢুকে পড়েছে। অনেক সময় ধরে মোটামোটি ভারী মানের বৃষ্টি হওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন পথচারীরা। এমন বৃষ্টির প্রত্যাশা কেউ করেননি।
বৃষ্টির কারণে রাজধানীর মতিঝিলের বিভিন্ন এলাকা, শাজাহানপুর, মগবাজার, বাড্ডার নিম্নœাঞ্চল, বাসাবোর নিম্নœাঞ্চল, যাত্রাবাড়ী, শনিরআখরা এলাকায় হঠাৎ বৃষ্টিতে কোথাও কোথাও হাঁটু পানি জমে গেছে। নিম্নœাঞ্চলের কিছু কিছু এলাকায় বাসার নিচতলায় পানি ঢুকে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বৃষ্টি হলে ঢাকা শহরে তাৎক্ষণিক যানজট লেগে যায়। এ সময় অনেক বেশি রিকশা রাস্তায় নেমে পড়ে। বৃষ্টি না থাকলে যারা হেঁটে গন্তব্যে যেতে চান বৃষ্টি হলে তারা ভেজার ভয়ে রিকশা নিয়ে থাকেন। এ কারণে বৃষ্টিতে ঢাকা অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে। গতকালও এমন ঘটনা ঘটেছিল। তবে রাস্তায় পানি দীর্ঘক্ষণ থাকছে না, নেমে যাচ্ছে।
এ দিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাচ্ছে আরেকটি লঘুচাপ। তা থেকে নিম্নচাপ অথবা ঘূর্ণিঝড় হবে কি না তা সময়ই বলে দেবে। নভেম্বর মাসে বঙ্গোপসাগরে কমপক্ষে একটি নিম্নœচাপ অথবা ঘূর্ণিঝড় হয়ে থাকে। অতীতে নভেম্বরে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। এবার ঘূর্ণিঝড়টি কখন হবে আবহাওয়াবিদরা তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে না পারলে কেউ কেউ পূর্বাভাস দিয়েছেন ঘূর্ণিঝড় হলে তা নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে হতে পারে।
শুধু ঢাকাতেই নয়; দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে একসাথে বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগ ছাড়া দেশের প্রায় সর্বত্রই বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, দেশব্যাপী এ বৃষ্টিটা ভারতের অন্ধ্র উপকূলে ওঠে আসা ঘূর্ণিঝড় মোন্থার প্রভাবে হয়েছে।
গত ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যার পর মোন্থা উপকূলে ওঠেছে এবং গতকাল শনিবার পর্যন্ত এর প্রভাব ছিল। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অফিস বলেছে, দক্ষিণ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় মোন্থার দুর্বল অবস্থা সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়ে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে একেবারেই দুর্বল হয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশে গতকালকের বৃষ্টিটা ছিল মোন্থার প্রভাবে শেষ বৃষ্টি।
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে আরো একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হলেও আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল বলেছেন, ‘আগামী প্রায় সাত দিন বাংলাদেশের আবহাওয়া থাকতে পারে রৌদ্রকরোজ্জ্বল ঝলমলে।’ এর সাথে যদি আবহাওয়ায় আর্দ্রতা কমে যায় তাহলে দেশব্যাপী কিছুটা হলেও শীতের আমেজ পাওয়া যাবে।
আজ রোববার সারা দেশের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।



