গাজীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে যুবক খুন

Printed Edition

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ্যে ছুরি বহন ও প্রদর্শন করে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রতিবাদ করায় গাজীপুরে কিশোর গ্যাং সদস্যদের ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তার নাম মারুফ হোসেন (৩০)। তিনি কুনিয়া তারগাছ এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। এ সময় জামিল (২৪) নামে এক যুবক আহত হন। আহত জামিল মারুফ হোসেনের বন্ধু ও একই এলাকার আতাউল্লাহর ছেলে। তিনি একটি সিগারেট কোম্পানির কর্মী। গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মহানগরীর গাছা থানাধীন কুনিয়া (তারগাছ) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা রবি ও তার সহযোগী সাব্বিরকে গ্রেফতার করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে গাছা থানা পুলিশ জানায়, জামিল তার বাড়ির পাশের এক দোকানে সিগারেটের বিল কালেকশন করতে যায়। এ সময় ওই দোকানের আশেপাশে স্থানীয় কিশোর গ্যাং সদস্য রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ তাদের পাঁচজন সহযোগী হাতে ছুরি নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। জামিল উন্মুক্ত স্থানে ছুরি নিয়ে ঘোরাফেরা করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জামিলের বন্ধু মারুফ ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। কিছু বুঝে উঠার আগেই রবি ও তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে জামিল ও মারুফকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত মারুফকে স্থানীয় তাইরুন্নেসা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আহত জামিলকে বড়বাড়ী ইসলামিয়া হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।

আহত জামিল ও স্থানীয়রা জানান, কিশোর গ্যাং সদস্য রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ তাদের ১০ জন সহযোগী দীর্ঘদিন ধরে সংঘবদ্ধ হয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই মাদকসেবনসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও নির্যাতন করছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপির) গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আহত জামিলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।

জিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মো: জাহিদুল হাসান বলেন, মারুফ হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবিকে (২৪) তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া এলাকা থেকে এবং এজাহারনামীয় দ্বিতীয় আসামি সাব্বির হোসেন (১৮) গাছা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার পেছনের প্রকৃত কারণ উদঘাটন ও পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।