রাইয়ান ই ফেরদৌস তোয়া
সেদিন হঠাৎ আমার মনে হলো- শেষ কবে আমি খালি পায়ে মাটিতে হেঁটেছি? উত্তরটা নিজেই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তাই আমি পরিবার, বন্ধু, এমনকি শিক্ষকদেরও জিজ্ঞেস করলাম। কেউ বললেন এক মাস আগে, কেউ আবার মনে করতে পারলো না, আদৌ কবে তাদের পায়ের সাথে আসলে মাটির স্পর্শ হয়েছিল। কী অদ্ভুত! অথচ আমরা প্রতিদিন মাটির এতো কাছে থেকেও তার সাথে আমাদের কোনো যোগাযোগই নেই বললে চলে। আমাদের চারপাশ এখন ইট-সিমেন্ট, পাথর আর টাইলসে ঘেরা। শহরের ফ্ল্যাট, পাকা রাস্তা, ধুলোবালি আমাদের মাটি থেকে আলাদা করে দিয়েছে। এমনকি গ্রামের বাড়িগুলোতেও আগের মতো কাঁচা উঠান আর নেই, প্রায় সবই পাকা বা টাইলস করা। ফলে খালি পায়ে হাঁটার মতো প্রাকৃতিক মাটি হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। কিন্তু এই হারিয়ে যাওয়া অভ্যাসের আছে অসাধারণ উপকারিতা। বিজ্ঞানীরা একে বলেন গ্রাউন্ডিং বা আর্থিং। যখন শরীর সরাসরি মাটির সংস্পর্শে আসে, তখন মাটি শরীরের অতিরিক্ত বৈদ্যুতিক চার্জ শোষণ করে নেয়। এর ফলে দেহ-মন হালকা লাগে, টেনশন কমে যায় এবং স্বস্তি অনুভূত হয়।
শারীরিক উপকারিতা : রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। পায়ের হাড় ও পেশি মজবুত হয়। শরীরের ব্যথা ও প্রদাহ কমে। ঘুম আরামদায়ক হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
মানসিক উপকারিতা : মন শান্ত ও সতেজ থাকে। উদ্বেগ ও টেনশন কমে। প্রকৃতির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। মনোযোগ ও একাগ্রতা বাড়ে। আজকের আধুনিক জীবনে খালি পায়ে মাটিতে হাঁটার সুযোগ সত্যিই কমে যাচ্ছে। তবুও যদি আমরা প্রতিদিন মাত্র ১০-১৫ মিনিট খালি পায়ে মাটিতে হাঁটার অভ্যাস করতে পারি, তাহলে শরীর-মন উভয়ই সুস্থ থাকবে। শুধু তাই নয়, আমরা আবারো প্রকৃতির সাথে আমাদের সম্পর্কটা ফিরে পাব।



