বিভিন্ন অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগে ২০২৬ সালের মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণীর বিনামূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণের ৬০০ কোটি টাকার অনুমোদন দেয়নি সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) প্রেরিত প্রস্তাব ফেরত দিয়েছে উপদেষ্টা কমিটি। ফলে বিভিন্ন লটে ভাগ করা একাধিক টেন্ডারও আটকে গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে নতুন শিক্ষাবর্ষের তিনটি শ্রেণীর প্রায় ১২ কোটি বইয়ের টেন্ডার আটকে গেলে ২০২৬ সালের বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তিন শ্রেণীর জন্য মোট ২৮০টি লটে ১১ কোটি ৮৯ লাখ ৩২ হাজার ৮৭২ কপি বইয়ের জন্য মোট মূল্য নির্ধরণ করা হয়েছিল ৬০৩ কোটি ৩৭ লাখ ৮৫ হাজার ৭১৭ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল মূলত ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত তিনটি শ্রেণীর বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল মাদরাসা এবং কারিগরি প্রতিষ্ঠানের বিনামূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণে ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির অনুমোদনের জন্যই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। এনসিটিবির নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই প্রস্তাব পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। তবে শুরু থেকেই টেন্ডার প্রক্রিয়া এবং দরদাতা প্রতিষ্ঠান নিয়ে নেতিবাচক খবর সব মহলেই চাউর হয়েছিল। বিশেষ করে পতিত আওয়ামী লীগের এক মন্ত্রীর ভাই যিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন তাকে একটি বড় সংখ্যার বই মুদ্রণের টেন্ডারে কাজ পাইয়ে দেয়ার বিষয়ে এনসিটিবির বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশের বিষয়েও অভিযোগ রয়েছে। তার পরেও এনসিটিবির চেয়ারম্যান জোড় গলাতেই আওয়া লীগের ঐ নেতার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। তিনি বরাবরই দাবি করেছেন কেউ যদি সর্বনিম্ন দর দাখিল করে বই মুদ্রণের কাজ পায় তা হলে এনসিটিবি কিভাবে তা ঠেকাবে? যদিও গোপনে চেয়ারম্যানসহ বইয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়ার সাথে সরাসরি জড়িত এমন কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও নানা ধরনের আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ আগে থেকেই ছিল। মেম্বার পদের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তো কাগজের মিল মালিকদের সাথে আঁতাত করে প্রেস মালিকদের জোর করে সেই মিল থেকে কাগজ কিনতে বাধ্য করার অভিযোগও করেছেন অনেক প্রেস মালিক। এমনি এক অভিযোগে গত সপ্তাহে এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক মো: হাফিজকে বদলি করা হয়েছে।