- ১৮ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার পুঞ্জীভূত ঋণ ৬৩ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা
- এক বছরে বেড়েছে ১৫ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা
রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পুঞ্জিভূত ঋণ বেড়েই চলেছে। এই সকল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা রয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংকে ১৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বকেয়া ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৩৫৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এর আগের অর্থবছর (২০২৩-২৪) শেষে এসব সংস্থার দেনার স্থিতি ছিল ৪৭ হাজার ৬৩৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে মোট পুঞ্জিভূত ঋণ বেড়েছে ১৫ হাজার ৭২৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
অর্থ বিভাগ সম্প্রতি এই হিসাব চূড়ান্ত করেছে। অর্থনৈতিক সমীক্ষায় ২০২৫-এ তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আটটি প্রতিষ্ঠানের ঋণের কিছু অংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে। এর পরিমাণ ৪২৯ কোটি টাকা।
তথ্য অনুযায়ী, পুঞ্জিভূত দেনার শীর্ষে রয়েছে ‘বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন’ (বিএডিসি)। গত জুন শেষে সংস্থাটির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সংস্থাটির দেনার পরিমাণ বেড়েছে ৪ হাজার ১০৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। গত বছর (জুন, ২০২৪) একই সময়ে বিএডিসির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৯৫৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
দেনার দায়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন’ (বিপিসি)। সংস্থাটির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫৭৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সংস্থাটির দেনার পরিমাণ বেড়েছে ৯ হাজার ৪০৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। গত বছর একই সময়ে বিপিসির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ১৭৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
ঋণের ভারে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ‘বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন’ (বিএসএফআইসি)। সংস্থাটির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৬২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সংস্থাটির দেনার পরিমাণ বেড়েছে ৩৬০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। গত বছর একই সময়ে বিএসএফআইসির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ২৬৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ‘বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন’ (বিসিআইসি)। সংস্থাটির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৩৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সংস্থাটির দেনার পরিমাণ বেড়েছে ৫৮৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। গত বছর একই সময়ে বিসিআইসির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৬৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে ‘ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ’ (টিসিবি)। প্রতিষ্ঠানটির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৩৩৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সংস্থাটির দেনার পরিমাণ বেড়েছে ৩ হাজার ১৭৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। গত বছর একই সময়ে টিসিবির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ১৬০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে ‘বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড’ (বিপিডিবি)। প্রতিষ্ঠানটির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৪৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সংস্থাটির দেনার পরিমাণ বেড়েছে ৪ হাজার ৫৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। গত বছর একই সময়ে বিপিডিবির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৮৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
সপ্তম অবস্থানে রয়েছে বিবিসি। প্রতিষ্ঠানটির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩০৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ৩১৫ কোটি ৪ লাখ টাকা কমেছে। গত বছর একই সময়ে বিবিসির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৬২১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে- ‘বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন’ (বিজেএমসি)-এর পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ৬৬৭ কোটি ৮ লাখ টাকা (গত বছর ছিল ৬৮৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা)। বিডব্লিউডিবির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ৫৬১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা (গত বছর ছিল ৯৭ লাখ টাকা)। বিআইডব্লিউটিসির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ১৮১ কোটি ৭২ লাখ টাকা; ‘বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল সংস্থা’ (বিএসইসি)-এর পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ১৯৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা (গত বছর ছিল ৫৯৭ কোটি ৮ লাখ টাকা)। বিওজিএমসির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ১২৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা; পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ৬৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। ঢাকা ওয়াসার পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ৮১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ‘বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের (বিটিএমসি) পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ২৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ও বিটিবির পুঞ্জিভূত ঋণের পরিমাণ ৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা।



