নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজনীতিবিদদের হাতেই রাজনীতি থাকা উচিত মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মোগল আমলের কারওয়ান বাজারের এখানে নদী ছিল। একসময় পাল তোলা নৌকা আসত, জাহাজ আসত। এই নদী আমরা রক্ষা করিনি, আমরা মনেই করিনি। তাড়াতাড়ি ভরাট কর, জায়গা দখল কর। এখানে কোনো প্লানিং ছাড়াই আমরা বাড়ি বানাব, ভাড়া দেবো অথবা বিক্রি করে টাকা আয় করব। গ্রামের জমি বিক্রি করে ঢাকায় এসে ফ্লাট কিনছে। মানুষ অতি দ্রুত বড় লোক হতে চাচ্ছে। সেই বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত, সেই নদী, সেই পুকুর আর রাখতে চাচ্ছে না। টাকাকেই ভাবা হচ্ছে দেবতা। এ কারণেই আজ সামন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমরা কেঁপে গেছি। এ জন্য আমরা বলছি, যার যে কাজ, যারা রাজনীতি করছে তাদের ওপর রাজনীতি ছেড়ে দেয়া। এখানে অন্য কেউ যদি আসে ওই উপলব্ধিটা বুঝবে না।
গতকাল রাজধানীর ভাসানী ভবনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সদ্য প্রয়াত সাইফুল ইসলাম পটুর মাগফেরাত কামনায় অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মুনাজাত পূর্ব আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
এ সময় বিগত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সাবেক ছাত্রনেতা পটুর ব্যক্তিগত জীবন ও রাজপথের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন তার সহযোদ্ধা বিএনপির যুগ্মমহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরাফত আলী সপু, সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, যুববিষয়ক সহসম্পাদক নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, সাদরেজ জামান প্রমুখ।
রিজভী বলেন, আজকে সমাজে মূল্যায়ন হয় নানাভাবে। আমি যখন ছাত্রদলের রাজনীতি শেষে স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতি করি, মিরপুরের পাইকপাড়ায় থাকতাম। পকেটে পয়সা ছিল না, সেখান থেকে রিকশা নিয়ে পরিবাগে আসতাম। সেখানে একটা খাল ছিল; এখন সেটা নেই। পার হয়ে আবার রিকশা নিয়ে নয়াপল্টন অফিসে আসতাম। বেশি দিন আগের কথা নয় ৯৭-৯৮’র দিকের কথা।
তিনি বলেন, এই ঢাকায় এত বড় বড় নেতা, গবেষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- ধোলাইখাল বন্ধ করে দেয়া হলো। এটাকে পুন:খনন করে, পরিষ্কার করে পানিটা যাতে ক্লিন থাকে সেই ব্যবস্থাটা আমরা কেন করলাম না? মিরপুরের পাইকপাড়ায়-এই এলাকায় খাল ছিল, তা গিয়ে গাবতলী গিয়ে মিলত। সেটা এখন আর দেখি না। ভূমিদস্যু ও নগর পরিকল্পনাবিদদের কাছে খাল, পরিবেশ, নির্মল বাতাস শত্রু পক্ষ। শুধু ঢাকা নয়; সারা বাংলাদেশ যেন সমাজের কর্তা, তাদের কাছে শত্রু পক্ষ। এরা কেউ ভাবেনি ধোলাই খালটা রক্ষা করতে হবে, আমাদের সন্তানদের সুস্থ রাখতে হবে। এদের সবার টাকা দরকার। এক দেড় কাঠা পৈতৃক জায়গার ওপর তলার পর তলা করে করে দশ তলাও করেছে। ভূমিকম্পের মধ্য দিয়ে আমাদের উপলব্ধি করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন রিজভী।
তিনি বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি, তাদের সবার উপলব্ধি করার সময় এসেছে। তা যদি করতে না পারি, তাহলে একটি শূণ্য গর্তে হারিয়ে যাব। আসুন আমরা বাসযোগ্য বাংলাদেশ এবং বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলি।



