লাদাখে বিক্ষোভের জেরে রাতভর পুলিশি অভিযান : গ্রেফতার ৫০

Printed Edition

এনডিটিভি

ভারতের বৃহত্তম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে রাতভর অভিযান চালিয়ে ৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সহিংসতায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের।

পৃথক রাজ্যের মর্যাদা প্রদানের দাবিতে গতকাল বুধবার থেকে বিক্ষোভ শুরু হয় লাদাখের রাজধানী লেহ-তে। বিক্ষুব্ধ জনতা লেহ-তে বিজেপির কার্যালয় এবং নগর প্রশাসন ভবনে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। এতে চারজন নিহত এবং কমপক্ষে ৯০ জন আহত হয়েছেন।

বিক্ষোভ উসকে দেয়ার জন্য জলবায়ুকর্মী সোনাম ওয়াংচুক এবং তার উসকানিমূলক বক্তব্যকে দায়ী করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এ ছাড়া উসকানি দেয়ার অভিযোগে লেহ নগর প্রশাসনের কাউন্সিলর এবং কংগ্রেস নেতা ফুন্তসোগ স্তানজিন সেপাগের বিরুদ্ধে মামলা করেছে লেহ পুলিশ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, বিক্ষোভ সংগঠিত করা এবং বিজেপি কার্যালয় ও নগর প্রশাসন ভবনে আগুন দেয়ায় নেতৃত্ব দিয়েছেন সেপাগ।

অভিযান চালিয়ে যে ৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে কংগ্রেস নেতা সেপাগ থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। লাদাখকে রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে বরাবরই সোচ্চার আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জলবায়ু আন্দোলনকর্মী এবং ভারতের কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলটির বাসিন্দা সোনাম ওয়াংচুক। এই দাবিতে গত ১৫ দিন আগে অনশন শুরু করেন তিনি।

এই ১৫ দিন ধরে তার ভক্ত-অনুসারীরা সবসময়েই তাকে ঘিরে ছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, গত বুধবার দুপুরের দিকে দিকে ভক্ত-অনুসারীদের উদ্দেশে নেপালের সাম্প্রতিক জেন-বিক্ষোভের সাফল্যকে তুলে ধরে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি। তার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর সমাবেশ থেকে বেশ কয়েক জন উঠে সড়কে উঠে বিক্ষোভ শুরু করেন। অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে এ সময়েই।

গতকাল বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্য গত ১৫ দিনে সোনাম ওয়াংচুককে অনেক নেতা অনুরোধ করেছেন, কিন্তু সেসব অনুরোধ উপেক্ষা করেছেন তিনি। তথাকথিত আরব বসন্ত এবং নেপালের সাম্প্রতিক জেন জি আন্দোলনের উদাহারণ দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে নিজের অনুসারীদের ক্ষেপিয়ে তুলেছেন তিনি।’

‘সোনাম ওয়াংচুকের উসকানিমূলক বক্তব্যের পরেই যে লেহ-তে মব সহিংসতা শুরু হয়েছে, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে।’ প্রসঙ্গত, গত তিন বছর ধরেই রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন চলছে লাদাখে। জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির বাসিন্দাদের মতে, লাদাখের ভূমি, সংস্কৃতি ও সম্পদ রক্ষার জন্য এই স্বীকৃতি জরুরি।