পায়রা বন্দর প্রকল্পের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতিসাধনের অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে অভিযোগের বেশ কিছু অসঙ্গতি পাওয়ার পর নথিপত্র তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট টিম।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের ঢাকা কার্যালয় থেকে একটি বিশেষ টিম অভিযান পরিচালনা করে বলে জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম।
অভিযান পরিচালনাকারী টিমের দুদক কর্মকর্তা জানান, পায়রা বন্দর প্রকল্পের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতিসাধনের অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৫ সালের ১ জুলাই এক হাজার ১২৮.৪৩ কোটি টাকায় বন্দরটির অবকাঠামো ও সাপোর্ট ফ্যাসিলিটি নির্মাণের জন্য মূল ডিপিপি অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরে সময় ও ব্যয় উভয়ই একাধিকবার বাড়ানো হয়। অবকাঠামো ও সাপোর্ট ফ্যাসিলিটি নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সংশোধিত ডিপিপি (২০২০) তিন হাজার ৩৫০.৫১ কোটি টাকা, দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপি (২০২৩) চার হাজার ৩৭৪.৪৭ কোটি টাকা, আর প্রকল্পের সমাপ্তি ২০২৪ সালের ৩০ জুন। এ ছাড়া পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল প্রকল্প ২০১৯ সালে শুরু হয়ে ৩১ ডিসেম্বর, যা ২০২১ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা এখন ২০২৬ সাল পর্যন্ত গড়িয়েছে। এই প্রকল্পের ব্যয়ও পাঁচ হাজার ৪২৭.৯৪ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। প্রকল্প এলাকাজুড়ে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রাবনাবাদ চ্যানেলের ড্রাফট কম থাকায় ফিডার ভেসেল চলাচল নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক ড্রেজিং প্রয়োজন হচ্ছে বলে টিম তথ্য পায়, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। অথচ বন্দরটি দিয়ে এখনো উল্লেখযোগ্য আমদানি-রফতানি কার্যক্রম শুরু হয়নি। ফলে এ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের আয় না হয়ে বরং সচল রাখার জন্য ব্যয় হচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য নেতিবাচক বলে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়।
এনফোর্সমেন্ট টিম সংগৃহীত রেকর্ডপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পাশাপাশি আরো কিছু নথি চেয়েছে, যা বিশ্লেষণ শেষে কমিশন পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানিয়েছে দুদক।