ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলাকে সার্বভৌম রাষ্ট্রের নিরাপত্তা স্বার্থ ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার অধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন অ্যাখ্যা দিয়ে এর কড়া নিন্দা জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। মধ্যপ্রাচ্যের এখনকার উত্তেজনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলই ‘দায়ী’ মন্তব্য করে পিয়ংইয়ং বলেছে, পশ্চিমারা তেল আবিবের ‘অন্তহীন যুদ্ধ ও ভূখণ্ড সম্প্রসারণকে মেনে নিচ্ছে ও উৎসাহ জোগাচ্ছে।
সোমবার উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব বলেছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। “যুক্তরাষ্ট্রের ইরান আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানায় উত্তর কোরিয়া, এ ঘটনা একটি সার্বভৌম দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা স্বার্থকে নৃশংসভাবে পদদলিত করেছে।
“ন্যায়পরায়ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত সর্বসম্মতভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের যুদ্ধবাজ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা এবং সেগুলো প্রত্যাখ্যান করা,” এক বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এমনটা বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা কেসিএনএ। ইরান ও পারমাণবিক অস্ত্রধর উত্তর কোরিয়ার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। দুই দেশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বানানোসহ সামরিক খাতে একে অপরকে নানা সহায়তা করছে বলে পশ্চিমা গোয়েন্দারা অনেক দিন ধরেই সন্দেহ করে আসছেন।
“পিয়ংইয়ং হয়তো ইরানের ধ্বংস হয়ে যাওয়া ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রগুলো পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিতে পারে; এ কেন্দ্রগুলো নতুন কোনো স্থানেও বানানো হতে পারে, যাতে নজর এড়ানো যায়,” বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কার্নেগি এন্ডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের অঙ্কিত পাণ্ডা। তবে তারা ইরানের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচির পুনর্জাগরণ বা তার গতি বাড়াতে একে অপরকে সহায়তা করবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না; কারণ, এ খাতে সংবেদনশীল নানা প্রযুক্তিগত ব্যাপার থাকে, বলছেন অঙ্কিত।
“অস্ত্রের নকশার ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট বিষয় আছে যেগুলো উত্তর কোরিয়া প্রকাশ করতে চান না, কারণ এগুলো ইরানের হাতে গেলে তা যুক্তরাষ্ট্রের হাতেও চলে যেতে পারে এবং শেষপর্যন্ত এগুলো তাদের প্রতিরোধক্ষমতা নস্যাতে যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করতে পারে,” বলেছেন তিনি। তবে পিয়ংইয়ংয়ের অস্ত্র তৈরির ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে, সেই অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তারা প্রচলিত বিস্ফোরকের ব্যাপারে তেহরানকে সহায়তা দিতেও পারে, বলেছেন অঙ্কিত। উত্তর কোরিয়া সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের আরেক মিত্র মস্কোর সাথে সামরিক সহযোগিতা নজিরবিহীনভাবে বাড়িয়েছে। তারা ইউক্রেইনের বিরদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়ায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য উপকরণের পাশাপাশি কয়েক হাজার সেনাও পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেইন ও অন্যান্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থা।