রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্যকোটা পুনর্বহাল ও শিক্ষক নিপীড়নের ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পরস্পরবিরোধী অবস্থানে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্যকোটা বাতিলের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্থায়ীভাবে পোষ্যকোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু রাকসু নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে সেটি পুনর্বহাল করে প্রশাসন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা পুনরায় আন্দোলন শুরু করলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী পরস্পরবিরোধী অবস্থান তৈরি হয়। একপর্যায়ে আন্দোলন চলাকালে ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টরসহ একদল শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সাথে শিক্ষার্থীদের বাগি¦তণ্ডার জেরে ধস্তাধস্তি এবং একপর্যায়ে সম্মানিত শিক্ষকদের হেনস্তার মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সেইসাথে আমরা মনে করি পোষ্যকোটা পুনর্বহাল ও শিক্ষক হেনস্তার এ ঘটনা রাকসু নির্বাচন বানচালের নামান্তর।
শিক্ষক হেনস্তার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে, প্রোভিসিকে তার বাসভবনে প্রবেশ করতে বাধা দিয়ে ও সিঁড়ি থেকে ফেলে দিয়ে এবং এক কর্মকর্তার দাড়ি ধরে লাঞ্ছিত করার মাধ্যমে আন্দোলনকে একটি চক্র ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছে। একটি যৌক্তিক আন্দোলনকে অস্বাভাবিক আচরণের মাধ্যমে বিতর্কিত করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। মূলত এর মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে রাকসু বানচালের পাঁয়তারা করছে, যা ইতোমধ্যে স্পষ্ট।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আন্দোলন প্রতিবাদের ভাষা হলেও তা হতে হবে শান্তিপূর্ণ ও গঠনমূলক। সম্মানিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক হেনস্তার মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা কোনোভাবেই আন্দোলনের ভাষা হতে পারে না। অনেকেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিক্ষক হেনস্তার দায় ছাত্রশিবিরের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছেন, অথচ ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে এ ঘটনার সাথে কারা জড়িত। আমরা এমন মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
শিবির নেতারা বলেন, অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে অযৌক্তিক পোষ্যকোটা বাতিল ও যথাসময়ে রাকসু আয়োজন করে বর্তমান সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান করার আহ্বান জানাচ্ছি। বিজ্ঞপ্তি।