পুলিশের জন্য কেনা হচ্ছে ১৭ হাজার শটগান

সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১৭ হাজার ৫০টি ১২ বোর শটগান ক্রয় করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সাথে আগামী নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ২৫ কোটি টাকায় একটি ফার্ম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই ফার্মকেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিনা টেন্ডারে।

বিশেষ সংবাদদাতা
Printed Edition

বিনা টেন্ডারে বা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১৭ হাজার ৫০টি ১২ বোর শটগান ক্রয় করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সাথে আগামী নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ২৫ কোটি টাকায় একটি ফার্ম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই ফার্মকেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিনা টেন্ডারে।

গতকাল মঙ্গলবার ‘অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’তে এ সংক্রান্ত দুইটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে এ বিষয়ে সব বিধিবিধান অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুমতি দিয়েছে কমিটি।

সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।

বৈঠকে শটগান কেনার প্রস্তাবের বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘বিষয়টি কমিটি অবহিত হলো। প্রস্তাবক মন্ত্রণালয় সব বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ এই অস্ত্র ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে তুরস্ক থেকে কেনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আসন্ন নির্বাচনকালীন সময়ে দায়িত্ব পালনে এগুলো ব্যবহার করা হতে পারে।

এ ছাড়া বৈঠকে ই-পাসপোর্ট বুকলেট ক্রয় ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকটি পৃথক প্রস্তাব জি-টু-জি-এর আওতায় ‘সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে’ ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর’ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই ই-পাসপোর্ট বুকলেট ও প্রশিক্ষণ সেবা ক্রয় করা হবে। এ কাজের জন্য মনোনীত প্রতিষ্ঠান হচ্ছে জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৬ কোটি টাকা।

প্রচার প্রচারণায় ২৫ কোটি টাকায় ফার্ম নিয়োগ

এদিকে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করতে প্রচার প্রচারণায় ২৫ কোটি টাকায় একটি ফার্মকে নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মূলত জনগণের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচারের অংশ হিসেবে দেশের ৬৪টি জেলা এবং ৩০০টি উপজেলায় টিভিসি, ভিডিও ডকুমেন্টারি ইত্যাদি তৈরি করে প্রচারের জন্য এলইডি অ্যাকটিভেশন ক্যারাভানের মাধ্যমে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। দরপত্র ছাড়াই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ব্র্যান্ড সলিউশন লিমিটেডকে এই কাজ দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে, এসংক্রান্ত কাজ নভেম্বরে শুরু করার নির্দেশনা থাকায় সময় স্বল্পতার জন্য উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা সম্ভব নয়। তাই রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে সরকারি ক্রয় বিধিমালা (পিপিপিআর) অনুসারে ব্র্যান্ড সলিউশন লিমিটেডকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব নিয়ে আসে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদ প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

নিরাপত্তা জোরদারে বডি ওর্ন ক্যামেরা দেয়া হবে

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে নিরাপত্তা জোরদার করতে স্পর্শকাতর জায়গায় (কেন্দ্রে) বডি ওর্ন ক্যামেরা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।

গতকালের বৈঠকের পর অর্থ উপদেষ্টা সংবাদিকদের বলেন, বডি ওর্ন ক্যামেরা নিয়ে অনেক পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই ক্যামেরা প্রথমত ছিল অনেকগুলো (৪০ হাজার), সেজন্য আমরা বলেছি যে আপনারা পর্যালোচনা করে আসেন। সংখ্যাটা কমবে, তবে সেটা কত কমবে, যখন প্রপোজালটা আসবে, তখন জানা যাবে।

প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, সব জায়গায় তো বডি ওর্ন ক্যামেরা দেওয়া সম্ভব নয়। এগুলো মনিটরিং করার ব্যাপার আছে। ছবি আসবে, অ্যাকশন নিতে হবে তো। এমতাবস্থায় শুধু সেনসিটিভ (স্পর্শকাতর) যে সব জায়গা আছে, ওইখানে আমরা অর্থাৎ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাজেস্ট করেছে। আর সেনসিটিভ জিনিসগুলো তারা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলাপ করে কিনবেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অন্যদিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রকিউরমেন্টটা কীভাবে হবে, একটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যেন হয়, আমরা সে বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি।

কবে নাগাদ বডি ক্যামেরা কেনা হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিগগিরই। হয়ত আগামী সপ্তাহেই ক্রয় প্রস্তাব নিয়ে আসবে।