- ৩৪ হাজারের বেশি প্রধান শিক্ষকের পদ ফাঁকা
- সাড়ে ১৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু
শিক্ষক সঙ্কটের কারণে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিশেষ করে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানেই প্রধান শিক্ষকরে পদ শূন্য থাকায় পাঠদান ছাড়াও অন্যান্য নিয়মিত প্রশাসনিক কাজেও তৈরি হয়েছে স্থবিরতা। মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য মতেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখন অনুমোদিত প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ৬৫ হাজার ৫০২টি। তবে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ৩১ হাজার ৩৯৬ জন কর্মরত রয়েছেন। আর শূন্যপদ রয়েছে ৩৪ হাজার ১০৬টি। অন্য দিকে সহকারী শিক্ষকদের পদও অবসরজনিত কারণে ফাঁকা হচ্ছে। তবে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে সাড়ে ১৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়ারও প্রক্রিয়াও ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
এ দিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদগুলো পূরণে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে সরাসরি নিয়োগযোগ্য দুই হাজার ৩৮২টি পদে নিয়োগের চাহিদার তথ্য জানিয়ে সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) চিঠি দেয়া হয়েছে। শিগগির এসব পদে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে এসব পদ শূন্য থাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সমস্যা নিরসনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদগুলো দ্রুত পূরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সূত্র জানায়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপরীতে অনুমোদিত প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ৬৫ হাজার ৫০২টি। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ৩১ হাজার ৩৯৬ জন কর্মরত। শূন্যপদ রয়েছে ৩৪ হাজার ১০৬টি। অবশ্য শূন্যপদগুলোর মধ্যে সরাসরি নিয়োগযোগ্য দুই হাজার ৬৪৭টি। সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদগুলোর ১০ শতাংশ পদ সংরক্ষণ করে অবশিষ্ট দুই হাজার ৩৮২টিতে স্বতন্ত্রভাবে সরাসরি নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সচিবালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। সরাসরি নিয়োগযোগ্য প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণের জন্য শিগগির পিএসসি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে।
এ দিকে জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের গ্রেডেশন-সংক্রান্ত ৭৩/২০২৩ নং সিভিল আপিল মামলা নিষ্পত্তি হওয়ামাত্র সহকারী শিক্ষক হতে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতিযোগ্য ৩১ হাজার ৪৫৯টি পদ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হবে। এ নিয়োগ সম্পন্ন হলে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর জনবলের ঘাটতি পূরণ হবে। পাশাপাশি বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম আরো উন্নত ও গতিশীল হবে। অন্য দিকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাড়ে ১৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা মহানগরী ও পূর্বাচলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দনকরণ প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু নূর মো: শামসুজ্জামান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে যা যা করা দরকার, আমরা তাই করব। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে সাড়ে ১৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।