ক্রীড়া প্রতিবেদক
আফগানিস্তান সফর শেষে বাস্তবতার আয়নার সামনে বাংলাদেশ দল। ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ, টপ অর্ডারের ধারাবাহিক ব্যর্থতা এবং রশিদ খানের স্পিনের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ- সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন আত্মসমালোচনার সময় পার করছে। সাথে যোগ হয়েছে দর্শক-ভক্ত-সমর্থকদের অসহনীয় কটূক্তি-সমালোচনা। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু মনে করেন, এই সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটিং দুর্বলতা পুরোপুরি উন্মোচিত হয়ে গেছে।
বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশে হতাশ লিপু বলেন, ‘এমন একটা পারফরম্যান্স আমরা যারা ক্রিকেট দেখি বা ক্রিকেটের সাথে যুক্ত, এমনকি যারা খেলেছে, আমার মনে হয় কেউই আশা করেনি এমন রেজাল্ট হতে পারে। এটা একদম এক্সপোজড হয়েছে আমাদের দুর্বলতা। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ের দিকটা একেবারেই বাজেভাবেই ফুটে উঠেছে। যত দ্রুত সম্ভব আমাদের ওভারকাম করতে হবে।’
টি-২০তে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের প্রশংসা করলেও লিপু বলেন, ‘দেখুন, সম্প্রতি আমরা সাদা বলের ক্রিকেটে কিছু ভালো সাফল্য পেয়েছি। কিন্তু আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই ব্যর্থতা আমাদের নিকট অতীতের সাফল্যগুলোকে পুরোপুরি মøান করে দিয়েছে।’
আফগানিস্তানের তারকা লেগ স্পিনার রশিদ খানের সামনে পুরো সিরিজেই ব্যর্থ বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তিন ম্যাচে তিনি ১১ উইকেট নিয়ে ধস নামিয়েছেন টাইগার শিবিরে। রশিদের ইকোনমি রেট ছিল মাত্র ২.৭৩, যা বাংলাদেশের ব্যাটিং দুঃস্বপ্নের প্রতিচ্ছবি। লিপু বলেন, ‘রশিদের মতো স্পিনারের বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতা আমাদের ব্যাটারদের আরো অর্জন করতে হবে। এই ঘাটতি স্পষ্ট হয়ে গেছে সিরিজে।’
আগামী ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ নিয়ে কিছুটা আশাবাদী লিপু, ‘এখন আমরা মিরপুরে খেলব, যেখানে রশিদের মতো স্পিনার নেই। এটা আমাদের জন্য কিছুটা স্বস্তির। তবে আফগানিস্তান সিরিজের মানসিক চাপ এখনো কাটেনি। খেলোয়াড়দের সেটা জয় করতে হবে। বাংলাদেশের ব্যাটিং সমস্যাটা সাময়িক নয়, বরং কাঠামোগত। শীর্ষ ব্যাটারদের টেকনিক, মানসিক প্রস্তুতি ও শট নির্বাচনে ঘাটতি থাকলে ভবিষ্যতেও একই সমস্যা ফিরে আসবে।’
‘আমরা মানুষ-ঘৃণা নয়-ভালোবাসা দিন’
আফগানিস্তান সিরিজ শেষে গত বুধবার রাতে দেশে ফিরেই জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা সমর্থকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। বিমানবন্দরে নিকট অতীতে এমন পরিস্থিতি হয়নি। কেউ শুনেছেন দুয়ো, কেউবা পরিবারের সামনে অপমানের শিকার হয়েছেন। এরপর নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক আবেগঘন বার্তায় নাঈম লিখেন, ‘জানি, আমরা যখন হেরে যাই, তখন আপনাদের কষ্ট হয়, রাগ হয়, কারণ আপনারাও এই দেশটাকে আমাদের মতোই ভালোবাসেন। আমরা মানুষ, ভুল করি; কিন্তু কখনও দেশের প্রতি ভালোবাসা-চেষ্টার ঘাটতি রাখি না। প্রতিটা মুহূর্তে চেষ্টা করি দেশের জন্য, মানুষের জন্য, আপনাদের মুখে হাসি ফোটাতে। ভালোবাসা চাই, ঘৃণা নয়।