- বিএনপি ও সমমনা বাদে বেশির ভাগ দল উচ্চকক্ষে পিআর চায় সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন
- কমিশনের সিদ্ধান্তের পর প্রতিক্রিয়া জানাবে বিএনপি : সালাহউদ্দিন
- একটি বা তিনটি দল না চাইলে পিআর পদ্ধতি আটকানো ইনজাস্টিস হবে : ডা: তাহের
- রাষ্ট্রের ভাঙাপায়ে ব্যান্ডেজ করে বিএনপি হাড় জোড়া লাগানোর প্রয়োজন মনে করছে না : আখতার
নিম্ন ও উচ্চ তথা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের পক্ষে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল। তবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনপ্রক্রিয়া কিভাবে হবে তা নিয়ে চার দিনের আলোচনাতেও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি দলগুলো। চার দিনের আলোচনায় উচ্চকক্ষে ভোটের আনুপাতিক হারে (পিআর) প্রতিনিধি নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, এবি পার্টি, গণ অধিকার পরিষদসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল। তবে বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দল শুরু থেকেই প্রচলিত আসনভিত্তিক নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। গতকাল মঙ্গলবার এ নিয়ে আলোচনার চতুর্থ দিনেও অনড় অবস্থানে ছিল দলটি। ফলে কোনো রকম সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক। আগামী রোববার ফের কমিশনের বৈঠক বসবে।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত দ্বিতীয় দফার ১৪তম দিনের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো: এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো: আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপ শেষে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ও জোট দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সমর্থন দিয়েছে। তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ের আলোচনায়ও সংখ্যাগরিষ্ঠ দল এ মত প্রকাশ করেছে। তবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনপ্রক্রিয়া সম্পর্কে আজও ঐকমত্য হয়নি। এ ব্যাপারে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল বলছে ভোটের সংখ্যানুপাতে যেন উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়। অন্যদিকে আসনের সংখ্যানুপাতেও উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব আছে। তিনি আরো বলেন, যেহেতু রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলো এ বিষয়ে একাধিক আলোচনার পরও ঐকমত্যের জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি, সেহেতু দল এবং জোটগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার কমিশনের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। ঐকমত্য কমিশন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট বিষয়ে নিজেদের মধ্যে এবং পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আগামী সপ্তাহে একটি অবস্থানে আসার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বিদ্যমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অন্তর্ভুক্তির পর ভবিষ্যতে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনোরকম মতভিন্নতা নেই বলে এই ব্যবস্থা পরিবর্তনে গণভোটের কথা বলা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নিয়োগের ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আলোচনায় সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গেছে বলে উল্লেখ করে কমিশনের সহসভাপতি বলেন, যদি উচ্চকক্ষ গঠিত না হয় বা উচ্চকক্ষ হওয়া পর্যন্ত সংবিধানের সংশোধনের জন্য সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থনের প্রয়োজন হবে। তবে, সুনির্দিষ্ট কিছু অনুচ্ছেদ যেমন প্রস্তাবনা, রাষ্ট্রের মূলনীতি, অনুচ্ছেদ ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাবিষয়ক ৫৮খ, ৫৮গ, ৫৮ঘ এবং ৫৮ঙ অনুচ্ছেদের দ্বারা সংবিধানে যুক্ত হলে তা সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে।
কমিশনের সিদ্ধান্তের পর প্রতিক্রিয়া জানাবে বিএনপি : এদিকে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে সংবিধান সংশোধন ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে টানা চার দিন আলোচনা করেও ঐকমত্যে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। তাই এসব বিষয় নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তের আগেই মন্তব্য করতে চান না বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষ নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যেহেতু নি¤œকক্ষে নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে কারো দ্বিমত নেই। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে বিভিন্ন রকমের মতামত থাকার কারণে সাড়ে তিন দিন আলোচনা হয়েছে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ব্যাপারে মোটামুটি অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত। কিন্তু তার গঠনপ্রক্রিয়া কী রকম হবে এবং পাওয়ার ফাংশন কিভাবে হবে সেটি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক আছে।
দলের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমরা সেই জায়গাতেই আছি। আমাদের ৩১ দফার ভিত্তিতে আমরা যে আইডিয়া নিয়ে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে বলেছিলাম। সেটি হলো, যারা দেশের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার বিশিষ্টজন, যাদের জাতিগঠনে অবদান আছে এবং যারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, তাদের মেধা, প্রজ্ঞা এবং অভিজ্ঞতার অবদান যেন জাতিগঠনের কার্যক্রমে প্রতিফলিত হয়। জাতি যাতে সমৃদ্ধ হয় সেই আইডিয়া থেকেই আমরা এই প্রস্তাবটি রেখেছিলাম। সেখানে আমরা উচ্চকক্ষে ১০০টি আসন রাখার জন্য বলেছিলাম। আমরা বলেছি, বিদ্যমান নারী সংরক্ষিত আসনে যেভাবে আসনের অনুপাতে নির্ধারণ করা হয় সেভাবে উচ্চকক্ষেও হবে।
বিতর্কের ব্যাপারে তিনি বলেন, এই বিষয়টা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হচ্ছে তিন-চার দিন যাবৎ। কেউ চান পিআর পদ্ধতিতে। এখানে আবার পাওয়ার ফাংশনের বিষয় আছে। সাধারণ বিল কিভাবে পাস হবে, সংবিধান সংশোধন হলে উচ্চকক্ষে কিভাবে পাস হবে ইত্যাদি। তো ব্যাপক আলোচনার ভিত্তিতে কোথাও ঐকমত্যে আসা যায়নি। এখন বাংলাদেশের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রয়োজন আছে কি না সে প্রশ্নও অনেক দল তুলছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, সব বিষয়ে সবার সাথে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন একটা সিদ্ধান্তে আসার কথা। সেই সিদ্ধান্ত জানানোর পরই আমাদের প্রতিক্রিয়া বা সম্মতি-অসম্মতির বিষয়ে জানাতে পারব। সেজন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। সংবিধানের সংশোধন কিভাবে হবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি একটি অতিরিক্ত প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সেটি মোটামুটি সবাই গ্রহণ করেছে। গণভোট নিয়ে বেশকিছু মতামত আছে। সেগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
একটি বা তিনটি দল না চাইলে পিআর পদ্ধতি আটকানো ইনজাস্টিস হবে : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, পিআর ভোটের আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে মেজরিটি দল পক্ষে আছে। কোনো এক জায়গায় একটা সলিউশন বের করতে হবে। কোনো একটি দল বা তিনটি দল না চাইলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) আটকে দেয়াটা ইনজাস্টিস বা বৈষম্য হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ডা: তাহের বলেন, মেজরিটি সংখ্যক দলই পিআর পদ্ধতিকে সাপোর্ট দিচ্ছে। শুধু এক লাইনে ব্যাখ্যা দিতে চাই, পিআরের পক্ষে জনসমর্থনের দিক থেকে পাঁচটা-ছয়টা দল হলো- এনসিপি, চরমোনাই পীর, সব ইসলামী দল, গণ অধিকার পরিষদ। আর আমরাও (জামায়াতে ইসলামী) পিআরের পক্ষে আছি।
তিনি আরো বলেন, উচ্চকক্ষ পিআর পদ্ধতিতে না হলে যদি সংসদীয় আসনের সংখ্যানুপাতিক হয়, তবে এটা তো আবার ডাবলই হলো, সেম রিপ্রেজেন্টেশন, সেম সেন্টিমেন্ট, সেম ডিসিশন। যদি সব সেম সেম হয় তাহলে দরকার কী?
ডা: তাহের বলেন, সবাই আমরা একমত হয়েছি যে দ্বিকক্ষ পার্লামেন্ট চাই। দ্বিকক্ষ পার্লামেন্ট চায় না, এমন বোধ হয় একটি বা দুটি দল বলেছে, আর সবাই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের পক্ষে। তবে কিছুটা ডিফারেন্স হচ্ছে এটা ফরমেশন বিষয় নিয়ে যেমন, কিভাবে এটা ফর্ম করবে এবং এটার ফাংশন কী হবে? সে নিয়ে কমিশনের প্রস্তাব আসছে। এগুলো কনক্লুড করা হয়েছে। কমিশন সব শুনেছে ও বক্তব্য রেখেছে এবং কমিশন বলেছেন, আগামী রোববার কমিশনই এ বিষয়টা চূড়ান্ত করবে। কমিশন এটা ফাইনাল সিদ্ধান্ত আকারে পেশ করবে, আলোচনা আকারে নয়।
নারীদের জন্য ১০০ আসনের পক্ষে একমত জামায়াতে ইসলামী জানিয়ে দলটির এই নেতা বলেন, এ প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আমাদের ডিফারেন্ট থিংকিং আছে। নারী আসনে নারীরাই ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। এটা পিআর পদ্ধতিতে যদি হয়, তাহলে এখানে তাদের জন্য এটা সহজতর হবে এবং ভোটার যারা আছে, তাদের জন্যও সহজ হবে। এ প্রস্তাবটি পেন্ডিং আছে।
আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একটা কোয়ালিটিফুল পরিবর্তন চায়। একটা চেঞ্জ চায় এবং এমন একটি সিস্টেমকে আনতে চায়, যেটা আমরা বারবারই সহজ করে বলি ফ্যাসিস্ট যেন ফিরে না আসে। এজন্য যত ছিদ্র আছে সেগুলোকে বন্ধ করতে হবে। যদি ছিদ্র ছোটও রাখেন; এটি অনেক সময় বড় হয়ে যায়। এখানে সাপও ঢুকতে পারে। সুতরাং ছিদ্র রাখা যাবে না।
রাষ্ট্রের ভাঙাপায়ে ব্যান্ডেজ করে বিএনপি হাড় জোড়া লাগানোর প্রয়োজন মনে করছে না: এ দিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি-সদস্যসচিব আখতার হোসেন সংলাপ প্রসঙ্গে বলেছেন, মৌলিক সংস্কারের প্রশ্ন যখন আসছে, যখন সাংবিধানিক এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোতে একটা সমন্বিত নিয়োগ কমিটির কথা আসছে, তখন সেখানে বিএনপি বেঁকে বসছেন। যখন চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের জন্য উচ্চকক্ষের পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের কথা আসছে, তখন দলটি সেখান থেকে সরে এসেছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র একটা ভাঙা পা নিয়ে চলছে। সেই ভাঙা পায়ে বিএনপি ব্যান্ডেজ করেছে। তারা স্যাভলন দিয়েছে। কিন্তু হাড়টাকে জোড়া লাগাতে হবে, সেই জায়গাটাতে এসে দলটি বেঁকে বসেছে। তাদের (বিএনপির) কথা হলো ব্যান্ডেজ করেছি, স্যাভলন দিয়েছি। এটাই যথেষ্ট। এটাই মেনে নাও। হাড়টাকে জোড়া লাগানো এতদূর পর্যন্ত যাওয়ার প্রয়োজন নাই। কথা স্পষ্ট, মৌলিক সংস্কারের প্রশ্নে জাতীয় নাগরিক পার্টি কোনো ছাড় দেবে না।
আখতার বলেন, উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে দলগুলোর অন্তত এক শতাংশ ভোট রয়েছে তারাও যদি উচ্চকক্ষে অংশগ্রহণের সুযোগ পায় সেক্ষেত্রে একটা বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক চর্চার জায়গা আমরা নিশ্চিত করতে পারব। অধিক দল পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের আসনবিন্যাসের ব্যাপারে একমত হলেও বিএনপি এবং তার সাথে গুটিকয়েক দল পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের নির্বাচন চায় না। এবং সেই না চাওয়ার জায়গাটিকে উচ্চকক্ষের এজেন্ডাকে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার আলাপ থেকে বাইরে রাখার একটা প্রবণতা খেয়াল করছি। সংস্কারের আলাপগুলোকে এখন সংখ্যাতাত্ত্বিক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির মধ্য দিয়ে নির্বাচন হতে হবে। এটাকে আমরা অবশ্যই একটি মৌলিক সংস্কারের অংশ মনে করি। এবং গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক সংস্কারের অংশ বলেই আমরা এটাকে মনে করি। মৌলিক সংস্কারের মোটা দাগের যে বিষয়গুলো আছে সেই প্রশ্নটা উত্থাপিত হলেই বিএনপির তরফ থেকে এবং তাদের সাথে আরো গুটিকয়েক দল তারা সেখানে বাধা তৈরি করছেন এবং তারা সেখানে ঐকমত্যের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছেন। এজেন্ডাগুলো যাতে ঐকমত্যের আলোচনার মধ্যেই না থাকে তেমন ধরনের একটা পরিবেশ এখানে তৈরি করার চেষ্টা করছেন।
অধিকাংশ দল একমত হলেও কূলকিনারা হচ্ছে না
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে আজকে তৃতীয় দিনের মতো আলোচনা হয়েছে। তারপরও আসলে কোনো কূলকিনারা পাওয়া যাচ্ছে না। কেন পাওয়া যাচ্ছে না এটা আমরা বুঝতেছি না। মোটামুটি সব দলই কিন্তু একমত যে, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ তারা চায়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপিও ২০১৭ সাল থেকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের কথা বলছে।
একটি ইস্যু নিয়ে বারবার আলোচনার ব্যাপারে বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে অনেক দলেরই কাছাকাছি মত। অর্থাৎ, উচ্চকক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো যারা নির্বাচনে অংশ নেবে তাদের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। নি¤œকক্ষ বিদ্যমান পদ্ধতিতে থাকবে। এখানে অনেক দল মোটামুটি একমত। কিন্তু তিনবার এটি নিয়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আলোচনা হয়েছে। একটা ইস্যু নিয়ে যদি এতবার আলোচনার পরও উপসংহারে না আসা যায়, তাহলে কিন্তু আলোচনায় অনেকের ধৈর্য বা আগ্রহ থাকে না।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে গতকালের বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।