চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা আঞ্চলিক সড়ক জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি নাজুক হয়ে জনদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। সংস্কারের দেড় বছরের মধ্যেই সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত, উঁচুনিচু অংশ, উঠে গেছে বিটুমিন। মাত্র কয়েক সপ্তাহ ভালো থাকার পরই সড়কটি ভেঙে পড়তে শুরু করে। স্থানীয়দের অভিযোগ, উন্নয়নের আড়ালে হয়েছে লুটপাট, আর কোটি টাকার প্রকল্পের বড় অংশই গিয়েছে ঠিকাদারি চক্রের পকেটে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চুয়াডাঙ্গা কারাগার থেকে ডুগডুগি বাজার পর্যন্ত ৯.৭ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের প্রকল্প নেয়া হয় ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। ব্যয় ধরা হয় ৮ কোটি ৬২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। কাগজে ঠিকাদার ‘জহিরুল লিমিটেড’ হলেও স্থানীয়দের দাবি, প্রকল্প বাস্তবে নিয়ন্ত্রণ করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আরফিন আলম রঞ্জু। সংস্কার কাজ শেষ হয় সেই বছরের নভেম্বরে। কিন্তু স্থানীয়দের ভাষ্য, ভালো থাকা অবস্থাটা স্থায়ী হয়নি ১৫ দিনের বেশি।
এখন প্রায় ১০ কিলোমিটারজুড়ে সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও সড়ক উঁচু, কোথাও আবার গভীর খাদ। বিটুমিন উঠে খণ্ড খণ্ড অংশ তৈরি হয়েছে বহু স্থানে। এই পথে প্রতিদিন যাতায়াত করে বাস, ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, মোটরসাইকেলসহ অসংখ্য যানবাহন। দর্শনা, মুজিবনগর, জীবননগর ও কালিগঞ্জকে সংযুক্ত করা হওয়ায় সড়কটি অত্যন্ত ব্যস্ত; অথচ সড়কটি এখন যেন মৃত্যুফাঁদ।
দর্শনার ওসমান আলি বলেন, সংস্কারের পর মাত্র ১৫ দিন রাস্তা ভালো ছিল। এরপর একের পর এক গর্ত, অন্তত দশবার জোড়াতালি দিয়েছে, কিন্তু কিছুই টেকে না। উজিরপুরের রাজিবুল হাসান বলেন, কোটি টাকার প্রকল্প কিন্তু চলাচলই অসম্ভব। যারা কাজ করেছে, তারা শুধু টাকা তুলতেই ব্যস্ত ছিল। ফকিরপাড়ার কামাল উদ্দীন জানান, রাস্তার কারণে দুর্ঘটনা নিত্যদিনের ঘটনা। কয়েকজন মারাও গেছেন।
সওজ বলছে, বড় ধরনের পুননির্মাণ ছাড়া স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। চুয়াডাঙ্গা সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ সুজাত কাজী বলেন, এই সড়কে শুধু কার্পেটিং করাই ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। এখানে সম্পূর্ণ পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন। কিছু অংশ সমতল করা হচ্ছে, তবে বড় প্রকল্প ছাড়া পুরোপুরি ঠিক হবে না।



