ইকবাল খান
প্রকৃতিতে অনেক ধরনের সম্পর্ক থাকে। কেউ বন্ধু হয়, কেউ শত্রু। বেজি আর সাপের সম্পর্কও এমনই যে তারা একে-অপরের শত্রু। বেজি হলো ছোট, নরমদেহী পোকামাকড়জাত প্রাণী, যা প্রায়ই জঙ্গলের আড়ালে থাকে। অন্য দিকে সাপ হলো বেজির শিকারি।
বেজি ও সাপের মধ্যে শত্রুতা শুরু হয় খাবারের জন্য। সাপ ক্ষুধার্ত হলে বেজিকে খাওয়ার চেষ্টা করে। বেজিও নিজের জীবন বাঁচাতে পারে। সে তার চার পাশের পরিবেশকে বুঝতে চতুর হয়ে ওঠে। বেজি দেখতে ছোট ও দুর্বল হলেও, সে অনেক কৌশল জানে। সাপের চোখে ধরা না পড়ার জন্য বেজি ছদ্মবেশ নেয় বা লুকিয়ে থাকে।
শত্রুতা শুধু খাওয়ার জন্য নয়, প্রতিরক্ষার জন্যও ঘটে। সাপ যদি বেজির আঙ্গুল বা লেজ ধরে ফেলতে চায়, তখন বেজি ঝাঁপিয়ে পালাতে বা পুঁজে ছড়িয়ে দিতে পারে। তার এই প্রতিরক্ষা পদ্ধতি সাপকে বিরক্ত করে। অনেক সময় বেজির দ্রুত চলাফেরা এবং চতুর কৌশল সাপকে হেরে দেয়। এই কারণে বেজি ও সাপের মধ্যে একটি চিরস্থায়ী প্রতিযোগিতা জন্মায়।
বেজির শত্রুতা কখনো কখনো প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী জন্ম নেয়। বেজির লুকানোর জায়গা যদি সাপের শিকার এলাকা হয়ে যায়, সাপ বেজির তাড়া শুরু করে। বেজিও পালাতে গিয়ে নতুন কৌশল শিখে। একে-অপরকে বুঝতে বুঝতে তারা প্রতিনিয়ত চতুর হয়ে ওঠে।
শিশুদের জন্য এটি একটি শিক্ষণীয় বিষয়। দেখানো যায় যে, ছোট প্রাণী হলেও বুদ্ধি এবং সতর্কতার মাধ্যমে বড় শত্রুরা মোকাবেলা করা যায়। বেজি আর সাপের সম্পর্ক প্রকৃতিতে একটি উদাহরণ যে, শত্রুতা কখনো শুধু শক্তির ওপর নয়, কৌশল ও সচেতনার ওপরও নির্ভর করে। বেজি ও সাপের মধ্যে শত্রুতা থাকলেও, তারা একে অপরের জন্য অপরিহার্যও। বেজি সাপকে শিকার দেয়, আর সাপ বেজিকে সতর্ক থাকতে শেখায়। এই প্রক্রিয়ায় প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় থাকে। শিশুদের শেখানো যায়, শত্রু থাকলেও তাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার পরিবর্তে সতর্কতা ও চতুরতা দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো যায়।
তাই বলা যায়, বেজি আর সাপের শত্রুতা হলো জীবনের এক ধরনের সম্পর্ক, যা খাওয়া, নিরাপত্তা এবং বেঁচে থাকার চেষ্টার সাথে জড়িত। তারা একে অপরকে চ্যালেঞ্জ দেয়, আর এই চ্যালেঞ্জ প্রকৃতির নিয়ম ও জীবনের শিক্ষার অংশ। বেজি হয়তো ছোট, কিন্তু চতুর, আর সাপ বড় হলেও বেজির কৌশল তাকে হেরে যেতে বাধ্য করে।