এশিয়া কাপ ক্রিকেট

নবম শিরোপায় চোখ ভারতের তিনে পাকিস্তান

জসিম উদ্দিন রানা
Printed Edition

১৯৮৪ সালে শুরু হওয়া এশিয়া কাপের ৪১ বছরের ইতিহাসে ১৭তম আসরের ফাইনালে আজ প্রথমবারের মতো মুখোমুখি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান ও ভারত। যদিও বৈশ্বিক আসরে বেশির ভাগ জয় পাওয়ায় ভারত তাদেরকে আর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মানতে নারাজ। তবে পাকিস্তান এবার ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতে চিরস্মরণীয় করে রাখতে চায় এবারের এশিয়া কাপ। ১৩ বছর পর এশিয়া কাপের তৃতীয় শিরোপায় চোখ পাকিস্তানের। অন্য দিকে রেকর্ড নবমবারের মতো এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় তুলতে মুখিয়ে আছে ভারত। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে পাকিস্তান-ভারত ক্রিকেট যুদ্ধ।

গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ঘটে যাওয়া যুদ্ধের রেশ লক্ষ্য করা গেছে দু’দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে। চলতি আসরে গ্রুপ পর্বে এবং সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে টসের শুরুতে ও ম্যাচ শেষে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সাথে হাত মেলায়নি ভারত। আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ম্যাচ রেফারি পাইক্রফটকে সরানোর দাবি জানায় পিসিবি। তবে পিসিবির অভিযোগ আমলে নেয়নি আইসিসি। এতে পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক ঘণ্টা দেরি করে মাঠে আসে পাকিস্তান।

গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানকে সাত উইকেটে হারায় ভারত। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৭ রান করে পাকিস্তান। জবাবে ২৫ বল বাকি থাকতে জয় তুলে নেয় ভারত। সুপার ফোরেও দেখা হয় পাকিস্তান ও ভারতের। প্রথমে ব্যাট হাতে নেমে ২০ ওভারে পাঁচ উইকেট ১৭১ রান করে পাকিস্তান। জবাবে ওপেনার অভিষেক শর্মার ৩৯ বলে ৭৪ রানের ঝড়ো ইনিংসে সাত বল হাতে রেখে জয়ের স্বাদ পায় ভারত। দুই পর্ব মিলিয়ে এবার ভারতের ছয়টিতেই জয়, আর পাকিস্তানের চার জয় ও দুই হার।

সুপার ফোরে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের শেষ ম্যাচটি ছিল অঘোষিত সেমিফাইনাল। যারা জিতবে তারাই ফাইনালের টিকিট কাটবে। লো-স্কোরিং ম্যাচে বাংলাদেশকে ১১ রানে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পায় পাকিস্তান।

সর্বশেষ ২০২২ সালের টি-২০ ফরম্যাটের টুর্নামেন্টে ফাইনালে উঠে শ্রীলঙ্কার কাছে ২৩ রানে হেরেছিল তারা। এ ছাড়াও ১৯৮৬, ২০০০, ২০১২ ও ২০১৪ সালে এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছিল পাকিস্তান। এরমধ্যে ২০০০ ও ২০১২ সালে জিতেছে শিরোপা।

১৩ বছর পর আবারো এশিয়া কাপের শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর পাকিস্তান। দলের অধিনায়ক সালমান আগা বলেন, ‘২০১২ সালের পর পাকিস্তান এশিয়া কাপের শিরোপা জিততে পারেনি। মাঝে দু’বার শিরোপা জয়ের সুযোগ থাকলেও, সেগুলো কাজে লাগাতে পারেনি তার দল। এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। প্রথমবারের মোকাবেলায় শিরোপা জিতেই দেশে ফিরতে চাই।’

মোট ১১ বার ফাইনাল খেলে এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি আটবার ১৯৮৪, ১৯৮৮, ১৯৯০-৯১, ১৯৯৫, ২০১০, ২০১৬, ২০১৮ ও ২০২৩ সালে শিরোপা জিতেছে টিম ইন্ডিয়া। এবার নবমে চোখ তাদের। চলতি এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত একমাত্র অপরাজিত দল তারা। সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে সুপার ওভারে হারায় টিম ইন্ডিয়া। হাই স্কোরিং ওই খেলায় হারতে হারতে বেঁচে যায় ভারত। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের কথা, ‘অপরাজিত থাকার ধারাটা ফাইনালেও রাখতে চাই। দলের সবাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আমরা রেকর্ড নবম শিরোপা জয়ের জন্যই মাঠে নামব।’

টি-২০ ফরম্যাটে সব মিলিয়ে ১৫ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। এরমধ্যে ভারত ১১বার ও পাকিস্তান তিনবার জিতেছে। একটি ম্যাচ টাই হয়। টাই হওয়া ম্যাচ বল আউটে জয় পায় ভারত। এশিয়া কাপে ওয়ানডে ও টি-২০ ফরম্যাটে ২১ বারের দেখায় ভারতের জয় ১২ ও পাকিস্তানের ছয়। তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।

পাকিস্তান : সালমান আগা (অধিনায়ক), আবরার আহমেদ, ফাহিম আশরাফ, ফখর জামান, হারিস রউফ, হাসান আলি, হাসান নাওয়াজ, হুসেইন তালাত, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ হারিস (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ নাওয়াজ, মোহাম্মদ ওয়াসিম, সাহিবজাদা ফারহান, সাইম আইয়ুব, সালমান মির্জা, শাহিন শাহ আফ্রিদি ও সুফিয়ান মুকিম।

ভারত : সূর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), শুভমান গিল (সহ-অধিনায়ক), অভিষেক শর্মা, তিলক ভার্মা, হার্দিক পান্ডিয়া, শিভম দুবে, অক্ষর প্যাটেল, জিতেশ শর্মা (উইকেটরক্ষক), জসপ্রিত বুমরাহ, আর্শদীপ সিং, বরুন চক্রবর্তী, কুলদ্বীপ যাদব, সঞ্জু স্যামসন, হার্ষিত রানা ও রিংকু সিং।