চট্টগ্রাম-১৩ আসন

সরব বিএনপি-জামায়াত, মাঠে অন্যান্য দলের ৪ প্রার্থী

Printed Edition

নুরুল কবির আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনীভূত হচ্ছে। শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। ঐতিহ্যগতভাবে আসনটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী শাসনামলে আসনটি তাদের কব্জায় রেখেছিল। গণঅভুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালানোর ফলে আ’লীগ নেতাদের অনুপস্থিতিতে রাজনীতির মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিএনপি। প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই জামায়াতে ইসলামীও। একক প্রার্থী দিয়ে জোর প্রচারণায় ব্যস্ত সময় করছে দলটির।

দীর্ঘদিন বিএনপির শক্ত অবস্থানের কারণে এ আসনটি জাতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আস্থা রেখেছেন তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সরওয়ার জামাল নিজামের প্রতি। এবারও দলটির প্রার্থী ও নেতাকর্মীরা মাঠে সরব, বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুধু বিএনপি-জামায়াত নয়, মাঠে সক্রিয় বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক মুভমেন্ট (এনডিএম)।

প্রতিটি দলই নিজ নিজ সংগঠনকে চাঙ্গা করতে নিয়মিত বৈঠক, সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছেন। এ আসনে ইতোমধ্যে সরব নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করেছে জামায়াতে ইসলামী। দক্ষিণ জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন নিয়ে সক্রিয়ভাবে গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে জোর নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন মনোনীত প্রার্থী ও তার পক্ষে নেতাকর্মীরা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে উঠে আসা তরুণ নেতৃত্ব জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপজেলা প্রধান সমন্বয়কারী লায়ন মোহাম্মদ উল্লাহ মাহমুদও নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সৈয়দ মোহাম্মদ শাহাজাহানও নির্বাচনী প্রচারণায় সরব আছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে উঠান বৈঠক করছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা এরফানুল হক হালিমকে প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচারে নেমেছে দলটি। এনডিএম’র কেন্দ্রীয় নেতা এমরান চৌধুরীও পিছিয়ে নেই নির্বাচনী প্রচারণায়। দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মিটিং-মিছিলে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে গণ অধিকার পরিষদ এখনো তেমন সক্রিয়তা দেখাতে পারেনি।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বহুদলীয় সক্রিয়তার কারণে এ আসনে ভোটের সমীকরণ আগের চেয়ে আরো জটিল হয়ে উঠছে। বিএনপি তাদের ঘাঁটিকে শক্তিশালী মনে করলেও মাঠে অন্য দলগুলোর সংগঠিত উপস্থিতি শেষ মুহূর্তে ভোটের প্রবাহে ভিন্ন প্রভাব ফেলতে পারে। আসনটিতে কোন দল শেষ পর্যন্ত কতটা সমর্থন ধরে রাখতে পারবে তা নির্ভর করবে দলীয় ঐক্য, প্রচারণার কৌশল ও নেতৃত্বের গ্রহণযোগ্যতার ওপর।

বর্তমানে আসনটিতে মোট ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে আনোয়ারায় ১১টি এবং কর্ণফুলীতে ৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। আনোয়ারায় ভোটার দুই লাখ ৭৩ হাজার ৪৩০ জন এবং কর্ণফুলীতে এক লাখ ৭ হাজার ৮৯৪ জন। প্রায় সাড়ে তিন লাখ ভোটারের মধ্যে আনোয়ারার ভোটার সংখ্যাধিক্য থাকায় প্রধান দলের প্রার্থীরা এখান থেকেই আসতে পারেন বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।