নিজাম হাজারীর স্ত্রীর ৪৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ, মামলার সিদ্ধান্ত

কাস্টমস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

Printed Edition

নিজস্ব প্রতিবেদক

৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ৪৩ কোটি ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৮০৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে ফেনী-২ আসনের সাবেক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীর স্ত্রী নুরজাহান বেগমের নামে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অপর দিকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে কাস্টমস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল মঙ্গলবার দুদক মহাপরিচালক মো: আক্তার হোসেন মামলার বিষয় জানান।

নিজাম উদ্দিন হাজারীর স্ত্রী নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। তার পারিবারিক ব্যয় বাদ দিয়ে ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়।

অভিযোগে আরো বলা হয়, অভিযুক্ত ২০১৯ সালের মে মাস থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি হিসাবে ৪৩ কোটি ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৮০৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে নিজাম হাজারীর নামে একাধিক মামলা করেছে দুদক।

নিজাম উদ্দিন হাজারী গত তিন সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে এমপি হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন, ঢাকা, ফেনীসহ বিভিন্ন জেলায় নামে-বেনামে জমি ও বাণিজ্যিক ভবন কেনা এবং বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

কাস্টমস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে কাস্টমস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গতকাল দুদকের সহকারী পরিচালক সায়েদ আলম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।

মামলায় আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে এক কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার ৭৮৪ টাকার সম্পদের মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫৯ লাখ ১০ হাজার ৪১১ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখার অভিযোগও রয়েছে।

দুদকের মামলার নথিতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর কমিশনের আদেশে আহসান হাবিবকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। পরের মাসে, ১০ ডিসেম্বর, তিনি সম্পদ বিবরণী জমা দেন। তাতে তিনি ৯ লাখ ২৯ হাজার ৬১২ টাকার স্থাবর এবং ৫০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেন।

কিন্তু দুদকের যাচাইয়ে দেখা যায়, আহসান হাবিবের নামে ও দখলে মোট এক কোটি ৪৯ লাখ ৮৯ হাজার ৩৯৬ টাকার সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক জমা, নগদ অর্থসহ এক কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার ৭৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য তিনি গোপন করেছেন।

তদন্তে আরো জানা যায়, সম্পদ বিবরণী দাখিলের পর তার নামে এক কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র, সোনালী ব্যাংকে ৩৩ লাখ টাকার এফডিআর, পাঁচ লাখ ৭২ হাজার ৫৯৭ টাকার মেডিকেয়ার ডিপোজিট স্কিম এবং তার মেয়ের নামে পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র পাওয়া যায়। দুদকের হিসেবে আহসান হাবিবের বৈধ আয়ের উৎসে পাওয়া গেছে ৯০ লাখ ৭৮ হাজার ৯৮৫ টাকা। সেই হিসেবে তার ৫৯ লাখ টাকার বেশি সম্পদের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।