ফ্যাশনের ফ্রেমে, অভিনয়ের মঞ্চে প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী দীপ্তি

সাকিবুল হাসান
Printed Edition
ফ্যাশনের ফ্রেমে, অভিনয়ের মঞ্চে প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী দীপ্তি
ফ্যাশনের ফ্রেমে, অভিনয়ের মঞ্চে প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী দীপ্তি

চঞ্চল চোখে স্বপ্ন দেখে এমন কিছু মানুষ, যারা শুধু জীবনের সাধারণ নিয়মে চলেন না- তারা নিজের মতো করে পথ তৈরি করেন। তেমনই একজন প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী। খুব বেশি দিন হয়নি ক্যামেরার সামনে তার যাত্রা শুরু। তবু এর মধ্যেই আলোচনায় চলে এসেছেন। সম্প্রতি নেপালে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বর্ষা সুন্দরী প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে দেশের নাম তুলে ধরেছেন গর্বের সাথে। সেই বিজয় যেন তার ক্যারিয়ারে নতুন এক দিগন্তের সূচনা।

ছোটবেলা থেকেই নাচ ও অভিনয়ের প্রতি ছিল প্রিয়াঙ্কার টান। রাজধানীর পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ওয়ারিতে শৈশব কাটানো এই মেয়ে স্কুলজীবনেই পা রেখেছিলেন মঞ্চে। নাচের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন একাধিক জায়গায়। স্কুলের অনুষ্ঠানে নাচে অংশ নিয়ে পুরস্কারও পেয়েছেন। শুধু শিল্পই নয়, খেলাধুলার প্রতিও আগ্রহ ছিল সমান। ফুটবল খেলতেন স্কুল টিমে। সময় পেলে লং টেনিসেও দেখা যেত তাকে।

পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে সবসময়ই দায়িত্ব নিয়ে চলতে শিখেছেন। বাবা একজন চিকিৎসক, মা গৃহিণী- তাদের কাছ থেকেই শৃঙ্খলা আর আন্তরিকতার শিক্ষা পেয়েছেন তিনি। সেই শিক্ষা তার ক্যারিয়ারেও প্রতিফলিত হয়েছে। কাজের প্রতি তিনি ভীষণ সিরিয়াস, সময়জ্ঞান ও পেশাদারত্ব মেনে চলেন কঠোরভাবে।

প্রিয়াঙ্কার ক্যারিয়ার শুরু হয় ফ্যাশন ফটোশুট দিয়ে। ‘সেলিব্রিটিস চয়েস’ ফ্যাশন হাউজে মডেল হিসেবে প্রথম কাজ করার পর থেকেই নজর কাড়েন তিনি। একের পর এক ফ্যাশন হাউজের ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়ে অল্প সময়ে মডেলিং দুনিয়ায় জায়গা করে নেন। কিন্তু তার লক্ষ্য এখানেই সীমাবদ্ধ নয়।

আমি শুধু র‌্যাম্পে হাঁটার জন্য আসিনি। আমি নিজেকে চরিত্রে ভাঙতে চাই, গল্পে ডুবে যেতে চাই -প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এই তরুণী পড়াশোনার পাশাপাশি অভিনয়কেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছেন। তার চোখে রয়েছে বড় স্বপ্ন- একদিন পর্দায় এমন চরিত্রে অভিনয় করবেন, যা মানুষের মনে থেকে যাবে অনেক দিন। তিনি চান এমন গল্পে কাজ করতে, যেখানে তার প্রতিভা এবং আবেগ প্রকাশের সুযোগ থাকবে। অনেক বড় বড় শিল্পীর অভিনয় দেখে বড় হয়েছি। মনে হয়েছে, যদি কখনো এমন একটা চরিত্র পাই- আমি নিজেকে উজাড় করে দেবো -বলেন প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী। তার মধ্যে রয়েছে এক ধরনের পজিটিভ একাগ্রতা। কারো কাছে অনুগ্রহ নয়; বরং নিজেকে প্রমাণ করে জায়গা করে নেয়াতেই বিশ্বাস রাখেন তিনি। মিডিয়ায় অনেকেই আসেন, অনেকে হারিয়ে যান। প্রিয়াঙ্কা জানেন, টিকে থাকতে হলে শুধু প্রতিভা নয়, লাগবে ধৈর্য, কঠোর অনুশীলন এবং মানসিক প্রস্তুতি। প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী বলেন, ‘এই পথ সহজ না, জানি। কিন্তু আমি যেখানেই থাকি না কেন, আমার কাজ দিয়ে আমি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করব। সময় লাগুক, তবু টিকব।’ বাংলাদেশের মিডিয়ায় এক ঝলক নতুন আলোর মতো এসেছেন প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী। তার সৌন্দর্য, বাচনভঙ্গি, শরীরী ভাষা আর মিষ্টি হাসির পেছনে লুকিয়ে রয়েছে অজস্র পরিশ্রম আর স্বপ্ন। সেই স্বপ্নেই তিনি বিশ্বাস রাখেন, বাঁচেন এবং প্রতিনিয়ত এগিয়ে চলেন।