নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ প্রদান এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থী সব সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণ পরিষদের উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষা-গবেষণা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও ওলামায়ে কেরাম উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা এ টি এম মা’ছুম বলেন, গান-বাজনা ইসলাম সম্মত নয়। শতভাগ মুসলিম জনগোষ্ঠীর সন্তানদের নাচ-গানের শিক্ষা দিয়ে নৈতিক মূল্যবোধ ধ্বংস করা যাবে না।
যদি এই জাতি বিধ্বংসী সিদ্ধান্ত বাতিল না করা হয়, আমরা গণমানুষকে সাথে নিয়ে রাজপথে নামতে বাধ্য হবো।
এ সিদ্ধান্ত ইসলামী চেতনা ও জুলাই সনদের শহীদদের ত্যাগের পরিপন্থী। কারণ জুলাইয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম সন্তানরাই জীবন দিয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমেদ বলেন, সমাজে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, ঘুষ-অনিয়ম এসবের অন্যতম কারণ হলো ধর্মীয় শিক্ষার অভাব। নৈতিক, সুশিক্ষিত এবং আলোকিত জাতি গঠনের জন্য ধর্মীয় শিক্ষকের ভূমিকা অপরিহার্য।
তাই আমরা দাবি করছি- গনের শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে অবিলম্বে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। নইলে একটি সুন্দর দেশ গঠন সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ইতোমধ্যে আমরা লক্ষ্য করেছি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারে কিছু শাহবাগী ও ধর্মবিরোধী মানসিকতার তথাকথিত সুশীল ব্যক্তিদের প্রভাবে ধর্মপ্রাণ মানুষের ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত হচ্ছে।
আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই এ দেশের মানুষ ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী। তাই অবিলম্বে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। অস্থিতিশীলতার দোহাই দিয়ে আমাদের থামাতে পারবেন না, এর দায় আপনাদেরই নিতে হবে। আবু সাঈদ-মুগ্ধদের নতুন বাংলাদেশে ধর্মবিদ্বেষ চলবে না।
জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করিম আবরার বলেন, আমরা দেখছি বিদ্যালয়গুলোতে নামমাত্র ইসলাম শিক্ষা বই থাকলেও, কিন্তু পড়ানোর মতো ধর্মীয় শিক্ষক নেই। ইসলাম ধর্ম পড়ায় হিন্দু শিক্ষক অথবা যিনি কুরআনও শুদ্ধভাবে পড়তে পারেন না।
পাঁচ আগস্টসহ ফ্যাসিস্ট বিরোধী সব আন্দোলন ও এ দেশের গণমানুষের যেকোনো অধিকার প্রতিষ্ঠায় এ দেশের ঈমানদার মুসলমানরাই অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন।
অথচ আজ সেই ধর্মপ্রাণ মানুষদের মৌলিক দাবি উপেক্ষা করা হচ্ছে। পরিষ্কার ভাষায় বলছি, অবিলম্বে গানের শিক্ষক নিয়োগসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিল করুন এবং সারা দেশে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজি ও সোশ্যাল অ্যাকটিভিস্ট রুহুল আমীন সাদী প্রমুখ।



