সাগর পাড়ে দাঁড়িয়ে চিৎকার দিয়ে কাঁদছিলেন ফাতেমা। সাগরের ক্রমাগত ঢেউয়ের গর্জনে হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছিল এই কান্নার শব্দ। সাগরের ওপাড়ে কক্সবাজারের হাসপাতালে ভর্তি ফাতেমার মা। মায়ের চিকিৎসার জন্য রক্ত লাগবে। কোথায় মিলবে সেই রক্ত। ছোট্ট মেয়ে ফাতেমার পক্ষেও যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ বঙ্গোপসাগরের মোহনা আর বাঁকখালী নদী ট্রলারে পেরিয়ে কক্সবাজার যেতে ১৫০০ টাকা ট্রলার ভাড়া লাগবে। সেই টাকাও তো নেই। গরিব জেলের মেয়ে ফাতেমা। এত টাকা কোথায় পাবে। তাই সাগর পাড়ে দাঁড়িয়ে কাঁদা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। এই দৃশ্য ২০০৮ সালের মার্চ মাসে সোনাদিয়া দ্বীপের সাগর পাড়ের। তখন আমি সোনাদিয়া দ্বীপে গিয়েছিলাম। ২০২৫ সালের মে মাসে আবার যাওয়া সেই সোনাদিয়া দ্বীপে। ১৭ বছর পর গিয়েও অবস্থার কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি। সেই আগের মতোই দুরবস্থা সোনাদিয়া দ্বীপের বাসিন্দাদের। মহেশখালী উপজেলার একটি ওয়ার্ড এই সোনাদিয়া দ্বীপ।
কক্সবাজার শহর থেকে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে ৯ কিলোমিটার আয়তনের দ্বীপ সোনাদিয়া। কক্সবাজার থেকে সোনাদিয়া দ্বীপের যেতে নির্দিষ্ট কোনো ট্রলার বা বোট নেই। ফলে ভাড়া করা ট্রলারে করে পর্যটকদের যেতে হয় কক্সবাজারে। দ্বীপের মধ্যেও নেই কোনো বাহন। ফলে হাঁটা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই দ্বীপবাসীর। অথচ এই অবহেলিত দ্বীপই পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময়। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাব এবং দ্বীপে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা যেমন মোটামুটি মানের থাকার হোটেল, খাবার হোটেলের অনুপস্থিতি। তাই পর্যটকদের সেভাবে টানছে না সাদাবালি, লাল কাঁকড়া এবং জলপাই ও নীল রঙের কাছিমের এই দ্বীপে। অবশ্য কম পর্যটক যাওয়ার কারণে সোনাদিয়া দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশটা এখনও বহাল।
‘এই স্পটটি কিন্তু খুবই সুন্দর। তবে প্রচণ্ড গরম।’ ওই যে প্রচণ্ড গরম শব্দ এটা উল্লেখ করলেন এক পর্যটক। যিনি পেশায় আইনজীবী। সেই গরম কিন্তু কয়েক কিলোমিটার দূরের কক্সবাজারেও। কিন্তু মে মাসে বাঁকখালী নদীর এক পাড়ে হাজার হাজার পর্যটক আর পশ্চিম পাড়ে হাতেগোনা ৬-৭ জন পর্যটকের উপস্থিতির নেপথ্য, পশ্চিমের সোনাদিয়া দ্বীপে পর্যটকবান্ধব আধুনিক কোনো পরিবেশই নেই। যেখানে বিদ্যুৎই পৌঁছায়নি সেখানে আধুনিকতার কি থাকবে। গরমে কষ্টতো পাবেনই ভ্রমণপিপাসুরা। এরপরও সেখানে কিছু স্মার্ট পর্যটক যান। তারা সেখানে প্রাকৃতিক পরিবেশেই পর্যটন সেবা নেন। নির্মল প্রকৃতি উপভোগ করেন। সোনাদিয়া দ্বীপ পূর্বপাড়া আর পশ্চিমপাড়া এই দুই ভাগে বিভক্ত। লোকবসতি এই দুই পাড়াতেই। এই দ্বীপে লোক বসতি শুরু আড়াইশত বছর আগে। কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এখানে এসে বসতি গড়ে। বিভিন্ন সময়ের ঝড়ে এই দ্বীপের বহু মানুষ মারা গেছে।
এখন সোনাদিয়া ট্যুরিজমের সাথে জড়িত একটি প্রতিষ্ঠান ক্যাম্প ফায়ার সোনাদিয়া। এর মালিক মোহাম্মদ শামীম। তার দাদা ১৯৬১ সালের ঝড়ে ভেসে গিয়েছিলেন। দুই দিন পর তার লাশ পাওয়া যায়। তার দুই সন্তানও (শামীমের চাচা) ভেসে গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের জীবন রক্ষা করেছেন। তাদের জীবন্ত উদ্ধার করা হয়েছিল। অথচ এখন পর্যন্ত সেভাবে সাইক্লোন সেন্টার গড়ে উঠেনি সোনাদিয়া দ্বীপে। পূর্বপাড়ায় একটি সাইক্লোন সেন্টার আছে, যা একই সাথে প্রাইমারি স্কুলও। এতে সবমিলিয়ে তিনশত মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন ঝড়ের সময়। মোহাম্মদ শামীমের দাবি, এই দ্বীপের জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য দুই হাজার লোকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করলে তবেই এলাকাবাসীর বিশেষ উপকার হবে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময়।
২০০৫ সালে প্রথম এই দ্বীপে যাওয়া। তখন এই সাইক্লোন সেন্টারে রাত যাপন করেছিলাম। এরপর দ্বিতীয়বার যাওয়া ২০০৮ সালে। আর এবার ফের গেলাম ১৭ বছর পর। লম্বা এই সময়ে দ্বীপের পরিবর্তন বলতে এখন সেখানে ক্যাম্পিং করে থাকা পর্যটকদের জন্য সুব্যবস্থা আছে। তাঁবু ভাড়া দেন স্থানীয়রা। এই তাঁবুর ভাড়া ১২ শত টাকা আর ১৬ শত টাকা। বাঁশ আর গাছের ডাল দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে কয়েকটি কটেজ। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা টয়লেট আছে। রয়েছে ছোট্ট একটি খাবার হোটেলও। অবশ্য তা পর্যটন সেবা দেয়া কর্তৃপক্ষের। তারাই পর্যটকদের খাবার রান্না করে দেয়। অর্ডার করলে এই খাবার সরবরাহের পর্ব শুরু। সামুদ্রিক মাছ আর মুরগি গোশতের সাথে থাকে ভাত বা খিচুড়ি। প্রতি সকালে খিচুড়ি আর ডিম ভাজি। পর্যটকরা একেবারেই সাগর থেকে ধরে আনা তাজা মাছ দিয়ে খাবার খেতে পারেন। তাঁবু ভাড়া আর খাবারের খরচ এক সাথেই। ২০১৫ সাল থেকে শুরু তাঁবুতে থাকা পর্যটকদের। আর ২০১৯ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে তাঁবুর ব্যবহার
এই দ্বীপে পর্যটক বা স্থানীয়দের নৌকা বা ট্রলার থেকে ঘরে নামার জন্য কোনো সুব্যবস্থা নেই। ট্রলার থেকে লাফিয়ে পানিতে নেমে শরীর ভিজিয়ে কুলে পৌঁছাতে হয়। সেই ২০০৫ সালে যে অবস্থায় দেখেছিলাম। ২০০৮ পেরিয়ে এবারো তাই। নির্দিষ্ট কোনো বোট যাওয়া আসা করে না সোনাদিয়া দ্বীপ থেকে। মহেশাখলী থেকে এই দ্বীপকে বিভক্ত করেছে একটি খাল। এই খালের একটি ঘাট হলো পূর্বপাড়া ঘাট। এই খাল দিয়ে মহেশখালী থেকে কেউ এলে ট্রলার বা নৌকা থেকে লাফিয়ে পাড়ে নেমে এরপর সোনাদিয়ায় প্রবেশ করে। ২০০৫ সাল ও এবার আমি সাগরতীরেই ট্রলার থামিয়ে পরে গন্তব্যে যাই। ২০০৮ সালে অবশ্য সেই খাল দিয়েই এসেছিলাম। তখন সে পথ অনুসরণ করে অবশ্য মহেশখালী ও সোনাদিয়ার মধ্যবর্তী সাগরের অংশে ডলফিনের রেস দেখার সুযোগ হয়েছিল। ডলফিনের রেস যে দেখা যাবে সে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তখন আমাদের মাঝি ফেরদৌস। কক্সবাজারের নাজিরার টেক থেকে চার হাজার টাকা ভাড়া করে ট্রলারে যাওয়া আসা করা যায়। আর ৬নং ঘাট থেকে ট্রলার ভাড়া লাগে ৬ হাজার টাকা। আবার মহেশখালী দিয়েও যাওয়া যায়। এই যাওয়াটা নির্ভর করে জোয়ার আসার ওপর।
প্রথমবার প্রচণ্ড শীতের সময় বা ডিসেম্বরে মাসে সেখানে যাই। ২০০৮ সালে মার্চ মাসে। আর এবার মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। তাই গরমে কষ্ট পেতে হয়েছিল। আমার আগে সেখানে পৌঁছা ঢাকার দুই আইনজীবীও গরমের কষ্টের কথা উল্লেখ করলেন। কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে দুই হাজার টাকায় ফাইবারের বোট ভাড়া নিয়ে আমার যাওয়া আসার পর্ব। আমি একা ছিলাম বলে দুই হাজার টাকা ভাড়া নিয়েছিল ট্রলার মালিক। দুপুরে গরমের মধ্যে নাজিরারটেক থেকে আধা কিলোমিটারের বেশি লম্বা গরম বালু প্রান্তর ডিঙ্গিয়ে ট্রলারের কাছে যাওয়া। ৩৫-৪০ মিনিটের মতো সময় লেগেছিল সমুদ্রের এই অংশ পেরুতে। পাড়ে বোটটি পৌঁছালেও সেখান থেকে শুকনো পা নিয়ে তীরে নামার কোনো সুযোগই ছিল না। বোটে থাকা গাছের ডালের সিঁড়ি বেয়ে হাঁটু পানিতে ভিজে তীরে নামলাম। তীরে আরো দু’টি পৃথক পানির ধারা। একটিতে পায়ের গোঁড়ালি পর্যন্ত পানি। অপরটিতে হাঁটু পর্যন্ত তলিয়ে যায়। এই অংশে চোরাবালুর উপস্থিতি। সুতরাং সতর্ক থাকতেই হবে। বালুতে পা দিলেই পা দেবে যায়। এই দুই অংশ খালি পায়ে অতিক্রম করলেও এরপর আর খালি পায়ে এগোনোর কোনো সুযোগই ছিল না। মে মাসের গরমে বালু প্রচণ্ডরকম উত্তপ্ত। একেবাবে পা পুড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। জুতা পায়ে দিয়ে সেই অংশ অতিক্রম করে ঝাউ বনে ঢুকে পড়লাম। এরপর সবুজ ঘাসের প্রান্তরে মিনিট ১৫ এর মতো হেঁটে পৌঁছলাম বাঁশ আর গাছের ডালের তৈরি কটেজে।
চার-পাঁচটি কটেজ। কিছু পর্যটক তাঁবু টানিয়েই থাকেন। এ ছাড়া বসে খাবারের জন্য ব্যবস্থা আছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষই রান্নাবান্না করে দেয়। নামাজের ব্যবস্থাও আছে। রয়েছে টাইলস লাগানো টয়লেট। গাছের ডাল দিয়ে তৈরি করা চেয়ারও বসানো হয়েছে। কটেজের ৭০-৮০ মিটার দক্ষিণেই সাগর পাড়। আগে এই বিচ আরো ছোট ছিল। তবে এখন এর বিস্তৃতি বেড়েছে। ঝাউ বনের ভেতর দিয়ে হেঁটে চলে গেলাম সাগর পাড়ে। সেখানে সাদা বালুর বিচ। বিশাল এলাকা জুড়ে এর অবস্থান। বিচ আর বনের সংযোগস্থলে নিশিন্দা গাছ। রয়েছে বালিয়াড়িও। মে মাসে আমার সুযোগ হয়েছিল থোকায় থোকায় নিশিন্দা গাছের বেগুনি ফুল দেখার। এই গাছের পাতা স্থানীয়রা শস্যকে পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করতে ব্যবহার করে গোলা বা মটকাতে।
সোনাদিয়া দ্বীপ বিখ্যাত শুঁটকি মাছের জন্য। সাগরের জেলেরা মাছ ধরে তা শুঁটকি করেন এখানে। এখন প্রচুর তরমুজ উৎপাদিত হয় এর বালু চরে। বেশ মিষ্টি সোনাদিয়ার তরমুজ। এই তরমুজ রফতানি হয় অন্যত্র। ধান চাষ হয়। আর লবণের চাষতো বহু আগ থেকেই। এ ছাড়া সামুদ্রিক কাছিমের ডিম পাড়ার আদর্শ স্থান এই সোনাদিয়ার সাগর পাড়। ২০০৫ ও ২০০৮ সালে একটি এনজিওর পক্ষ থেকে আমাদের দেখানো হয়েছিল কাছিমের ডিম পাড়ার স্থান সংরক্ষণের জায়গা। ২০০৮ সালে সমুদ্র সৈকতে বিশাল এক কাছিমের খোলস দেখেছিলাম। এবার দু’টি খোলস দেখেছি। এরপর একটি ক্রিকেট বল আকৃতির কাছিমের মাথার খুলি পেয়েছি সৈকতে। হয়তো ডিম পাড়তে আসার সময় বা ডিম পেড়ে সাগরে ফিরে যাওয়ার সময় কোনো না কোনোভাবে মারা গিয়েছিল এ দুই কাছিম।
সে সাথে লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ এই দ্বীপে। সামুদ্রিক কাকড়া খাওয়া হয়। তবে লাল কাঁকড়া কোনোভাবেই খাওয়া হয়নি। ট্রলারচালক রবিউল আলম জানান, এই লাল কাঁকড়া কেন খাবো। এগুলোতো সৌন্দর্যের অংশ।
নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশের সোনাদিয়া দ্বীপে বিশাল এলাকাজুড়ে প্যারাবন ছিল। যেখানে ছিল সামুদ্রিক এবং অন্য পাখিদের অবাধ বিচরণস্থল। কিন্তু দ্বীপের ঘটিভাঙ্গা এলাকায় এই প্যারাবন ধ্বংস করে চিংড়ি ঘের করা হয়। এতে ধ্বংস হয়ে যায় সেই প্যারাবন। ২০০৫ সালে গিয়েও যেমন তা দেখেছিলাম। এবারও তাই। রাতের অন্ধকারে প্যারাবন পুড়ে ফেলা হয়েছে। এরপর সেখানে চিংড়ি ঘের করা হয়। স্থানীয়দের একজন জানান, ওপরের মহলকে ম্যানেজ করেই এই শতাব্দির শুরুর দিকে চিংড়ি ঘের করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এখনো তা চলছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশ। প্যারাবনের থাকা প্রাণীগুলোও আবাস হারিয়েছে।
এই সোনাদিয়া দ্বীপে গভীর সমুদ্র বন্দর করতে চেয়েছিল আগের সরকার। শেষে আর হয়নি তা। এতে অবশ্য স্থানীয়রা খুশি। কারণ গভীর সমুদ্রবন্দর করা হলে উচ্ছেদ করা হতো স্থানীয়দের। বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি (বেজজা) এখানে ইকো ট্যুরিজম করতে চেয়েছিল। সরকারের কাছ থেকে এই দ্বীপ তাদের ১০০ বছরের জন্য লিজ নেয়ার কথা ছিল। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই ইকো ট্যুরিজমের এই পরিকল্পনা বাতিল। এখন সোনাদিয়া দ্বীপ বুঝিয়ে দিতে যাচ্ছে বন বিভাগের কাছে। এতে এই অনিন্দ্য সুন্দর সোনাদিয়া দ্বীপে প্রাকৃতিক পরিবেশই বজায় থাকবে। আর স্থানীয়রাও উচ্ছেদ আতঙ্কে থাকবেন না। জানান স্থানীয় পর্যটন সেবা দেয়া মোহাম্মদ শামীম।
সোনাদিয়ার এই সমুদ্র সৈকত কয়েকটি কারণে বিখ্যাত। সাদা বালুর বিচ, লাল-কাঁকড়া, সামুদ্রিক কাছিম ছাড়াও ছোট আকৃতির অতিথি পাখি গ্রেট নট, গ্রিন সাঙ্কের দেখা মিলবে এই দ্বীপে। এই দ্বীপে দেখা মেলে চামুচ ঠুটো পাখির। অর্থাৎ এই অতিথি পাখির ঠোট ঠিক চামচের মতো চ্যাপ্টা। সাথে প্যারাবনের কিছু অংশ এবং সাগর পাড়ে খাবার সংগ্রহ করা স্থানীয় পাখিতো আছেই। এই উপকূলে দেখা মিলবে দুই ধরনের ডলফিনের।
অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যটকরা বেশি মাত্রায় আসেন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনশত জন ভ্রমণ পিপাসু আসেন।
দ্বীপের ওপর দিয়ে গেছে বিদ্যুতের লাইন। তবে এলাকায় কোনা বিদ্যুতের সুবিধা পান না। স্থানীয় শামীম জানান, ইচ্ছে করেই আমাদের বিদ্যুৎসংযোগ দেয়া হয়নি। মূলত আমাদের উচ্ছেদ করা হবে। বিদ্যুৎসংযোগ দিলে তো আর উচ্ছেদ করা যাবে না। দ্বীপের আনসার ক্যাম্পে ঠিকই বিদ্যুৎ আছে। কিন্তু স্থানীয়রা সেই বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগই পায় না। তার মতে, ২০২২ সালে বেজার জন্যই এই বিদ্যুৎসংযোগের ব্যবস্থা। এখন বেজার সেই অফিস পাহারা দেয় আনসার। বিদ্যুৎ সুবিধা পায় শুধু আনসাররাই।
দ্বীপে কোনো পাকা সড়ক নেই। পূর্বপাড়া খেয়াঘাট থেকে মাটির রাস্তায় হেঁটে আসতে হয় দক্ষিণে সাগর পাড়ের লোক বসতিতে। তাই পর্যটন সেবা দেয়া শামীমের দাবি কর্তৃপক্ষ যেন পর্যটকদের জন্য নির্দিষ্ট ঘাটের ব্যবস্থা করে। সে সাথে নিয়মিত যেন বোট সার্ভিস চালু হয় কক্সবাজার থেকে সোনাদিয়া পর্যন্ত। তার জোর দাবি দ্বীপবাসীর জন্য বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করা। যে সার্ভিস পর্যটকরাও পাবেন। শামীমের মতে, যদি সরকার এবং পর্যটন করপোরেশন যথাযথ উদ্যোগ নেয় সোনাদিয়ার পর্যটন শিল্প ব্যাপক উন্নয়ন হবে। এতে দ্বীপের জনগণ এবং পর্যটকরা উপকৃত হবেন।