জসিম উদ্দিন রানা
আসরের শুরু থেকেই ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে বিপাকে বাংলাদেশ। কিছুতেই যেন রানের দেখা পাচ্ছিলেন না শারমিন আক্তার-নিগার সুলতানারা। অবশেষে ব্যাটিং ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙল টাইগ্রেসরা। নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টপ অর্ডার ব্যাটারদের গড়ে দেয়া শক্ত ভিতে দাঁড়িয়ে রীতিমতো ঝড় তুললেন স্বর্ণা আক্তার। তার ঝড়ো ফিফটিতে রেকর্ড গড়া সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশাখাপটনামে টস জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৩২ রান তোলে বাংলাদেশ। এটি নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। বিশ্বকাপে এর চেয়ে বেশি রান কেবল একবারই করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ২০২২ সালে পাকিস্তানের বিপে ৭ উইকেটে ২৩৪ রান করেছিল দলটি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩৭ ওভারে সাউথ আফ্রিকার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৪৪। পাঁচে নামা কাপ ৪০ রানে ও সাতে নামা ট্রায়ন ৩৪ রানে অপরাজিত থেকে ব্যাট করছেন।
স্বর্ণা মাত্র ৩৪ বলে ফিফটি করেন। যা বাংলাদেশের নারী ওয়ানডে ইতিহাসে দ্রুততম অর্ধশতক। আগের রেকর্ডটি ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির। গত এপ্রিলে লাহোরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ডের বিপে ৩৯ বলে ফিফটি করেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
বাংলাদেশ ইনিংসের সূচনা করেন দুই ওপেনার রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক ও ফারজানা হক। ওপেনিং জুটিতে আসে ৫৩ রান। ব্যক্তিগত ২৫ রানে আউট হন ঝিলিক। তিন নম্বরে নেমে দায়িত্ব নেন শারমিন আক্তার সুপ্তা, যিনি দলের ইনিংসকে মজবুত ভিতে দাঁড় করান।
ফারজানা ৩০ রান করে ফিরলেও সুপ্তা ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। তার সঙ্গে যোগ দেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। দু’জনের জুটিতে কার্যকর ৭৭ রানের পার্টনারশিপ। জ্যোতি ৪২ বলে ৩২ রান করে আউট হলেও শারমিন ফিফটি পূর্ণ করে ফেরেন রান আউট হয়ে (৭৭ বলে ৫০)।
ইনিংসের শেষ ভাগে নামেন স্বর্ণা আক্তার। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে দুইশর ঘরে পৌঁছে দেন। শেষ দিকে তার সাথে যোগ দেন রিতু মনি। দু’জনের তাণ্ডবে শেষ ১০ ওভারে আসে ঝড়ো রান। ৩৫ বলে অপরাজিত ৫১ রান করেন স্বর্ণা, যেখানে ছিল তিনটি করে চার ও ছক্কা। ৩৪ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি করেন স্বর্ণা; যা বাংলাদেশের নারী ওয়ানডে ইতিহাসে দ্রুততম। রিতু মনি ৮ বলে দ্রুতগতির ১৯ রান যোগ করে দলের রান ২৩২-এ নিয়ে যান। দণি আফ্রিকার হয়ে ননকুলুলেকো ম্লাবা ২ উইকেট নেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ছন্দময় না হলেও মিডল অর্ডারে বাংলাদেশী বোলারদের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ান মারিজান কাপ ও চলয় ট্রায়ন। টাইগার স্পিন কিংবা পেস আক্রমণ প্রতিহত করেন দক্ষতার সাথে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও হয়েছিল এমনটা। পাঁচ-ছয় উইকেট পতনের পরও মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা ম্যচটি জিতে নিয়েছিল ইংলিশরা। গতকালও সেটির পুনরাবৃত্তি দেখেছে টাইগ্রেসরা। একটি করে উইকেট নেন নাহিদা, রাবেয়া, ফাহিমা, রিতু মনি। টাইগ্রেস দলের আকর্ষণ মারুফা এখন পর্যন্ত উইকেট পাননি।
এর আগে অধিনায়ক উলভার্ট পাঁচ বাউন্ডারিতে ৩১ রান করে রান আউট হয়। অবশ্য শুরুতে ১.১ ওভারে তাজমিন ব্রাইট নাহিদার ঘুর্নিতে খালিহাতে ফিরেন। রিতুমনির শিকার ২৮ রান করা বোস ফিরেন দলীয় ৬২ রানে। ডার্কসেনকে দুই রানের বেশি করতে দেননি রাবেয়া খান। ফাহিমাও ৪ রানে ফেরান সিনালো জাফটাকে।



