সেনাদের ভার্চুয়াল হাজিরার আবেদনে ট্রাইব্যুনাল

সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান

আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে উল্লেখ্য করে তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি কারাগারে আছেন এবং তাকে ফিজিক্যালি আদালতে অ্যাটেন্ড করতে হয়। একই সাথে অ্যাপিলেট ডিভিশনের বিচারক, সিনিয়র মন্ত্রী এবং অন্যান্য পর্যায়ের আসামিরাও সশরীরে আদালতে নিয়মিত হাজিরা দেন। ফলে এই সেনাকর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো বিবেচনায় ভার্চুয়াল হাজিরার অনুমতি দেয়া অপ্রয়োজনীয়।

নিজস্ব প্রতিবেদক
Printed Edition
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের হাজির করা হয়
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের হাজির করা হয় |নয়া দিগন্ত

  • জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিচার
  • মানবতাবিরোধী অপরাধ

দেশের সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান-এই মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) টিএফআই (র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন) ও জেআইসিতে (সেনাবাহিনীর জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল) গুম ও নির্যাতনের দুই মামলায় গ্রেফতার সেনাকর্মকর্তাদের সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অনলাইনে (ভার্চুয়াল) হাজিরা দেয়ার জন্য আসামিপক্ষের করা আবেদন রোববার খারিজ করে দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল-১।

গতকাল আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ সালাউদ্দিন তার মক্কেলদের ভার্চুয়াল উপস্থিতির আবেদন নিয়ে শুনানি করেন। এ সময় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার কড়া মন্তব্য করে বলেন, ‘ ল’ ইজ ইকুয়্যাল ফর অল অর্থাৎ আইন সবার জন্য সমান। প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের সবচেয়ে সিনিয়র বিচারপতি নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। সিনিয়র মোস্ট মন্ত্রীরা হাজিরা দিচ্ছেন। তার পরও আপনি (আসামিপক্ষ) চাইলে হিয়ারিং করতে পারেন।’

পরে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় ১৩ সেনাকর্মকর্তাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে। একটি মামলায় শুনানি হবে ৩ ডিসেম্বর, অন্যটিতে ৭ ডিসেম্বর।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম পরে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে বলেন, আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি কারাগারে আছেন এবং তাকে ফিজিক্যালি আদালতে অ্যাটেন্ড করতে হয়। একই সাথে অ্যাপিলেট ডিভিশনের বিচারক, সিনিয়র মন্ত্রী এবং অন্যান্য পর্যায়ের আসামিরাও সশরীরে আদালতে নিয়মিত হাজিরা দেন। ফলে এই সেনাকর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো বিবেচনায় ভার্চুয়াল হাজিরার অনুমতি দেয়া অপ্রয়োজনীয়।

তিনি বলেন, ‘অ্যাপিলেট ডিভিশনের বিচারক, সিনিয়র মন্ত্রী, বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ যারা আসামি হয়েছেন, তারা রেগুলারলি আদালতে সশরীরে এই হাজিরা দেন। সুতরাং এখানে ডিফারেন্ট কোনো ঘটনা ঘটেনি, যে কারণে অন্য কোনো বিশেষ বিবেচনায় কাউকে ভার্চুয়ালি হাজিরা দেয়ার বিষয়টা অ্যালাউ করতে হবে।’

এই বিষয়টা আদালত প্রয়োজন মনে করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা মনে করেন, সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান। সবাইকে ইকুয়াল ট্রিটমেন্ট দেয়া উচিত। তারপরও যেহেতু ডিফেন্স পক্ষ বলেছেন তারা এই অ্যাপ্লিকেশনগুলো পরবর্তীতে আবার শুনানি করতে চান। আদালত বলেছেন, হ্যাঁ সময় হলে উনি আবার শুনবেন।’

এই দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এ সময় প্রসিকিউশন ও আসামি পক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিন সকাল ১০টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে প্রিজনভ্যানে করে ১৩ সেনাকর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ছিল সেনা, পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যদের কঠোর নিরাপত্তা।

র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে আটকে রেখে নির্যাতনের মামলার ১৭ আসামির মধ্যে গ্রেফতার ১০ জনকে এ দিন ট্রাইব্যুনালে নেয়া হয়। তারা হলেন- র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: জাহাঙ্গীর আলম; র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার; র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: কামরুল হাসান; র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: মাহাবুব আলম; র‌্যাবের সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো: মশিউর রহমান জুয়েল; র‌্যাবের সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন; র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন; র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে); র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল কে এম আজাদ; র‌্যাবের সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) কর্নেল মো: সারওয়ার বিন কাশেম; ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ এ মামলার সাত আসামি পলাতক রয়েছেন। সেনাবাহিনীর জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে ( জেআইসি) আটকে রেখে নির্যাতনের মামলায় ১৩ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হওয়া তিনজনকে ট্রাইব্যুনালে নেয়া হয়। তারা হলেন- ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: মাহবুবুর রহমান সিদ্দিক; ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিক; ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) মেজর জেনারেল শেখ মো: সারওয়ার হোসেন; ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ এ মামলার ১০ আসামি পলাতক রয়েছেন।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর তিন মামলায় গ্রেফতার মোট ১৫ সেনাকর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল। অন্য আসামিরা জুলাই-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রীতে ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি।

জিয়াউল গুম করে লাশের পেট কেটে নদীতে ফেলেছেন : তাজুল

এ দিকে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে গুম করে মানুষকে হত্যা এবং লাশের পেট কেটে নদী-নালায় ফেলে দেয়ার শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

গতকাল রোববার দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেসব্রিফিংয়ে গুমের দায়ে জিয়াউল আহসানের মামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন চিফ প্রসিকিউটর। জিয়াউলের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে কিছু আবেদন জমা দেন তারই বোন আইনজীবী নাজনীন নাহার। এ নিয়ে তার সাথে প্রসিকিউশনের কিছুটা উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আদালতের কাছে যেকোনো আবেদন করতে হলে আইন-বিধান বা ধারা উল্লেখ করতে হবে। কিন্তু আইনজীবীকে দিয়ে একটা ঢালাও আবেদন করেছেন জিয়াউল। কখনও বলছেন আমার ফোনের কল রেকর্ড-মেসেজ পেতে চাই। যা এ মামলার সাথে সম্পর্ক নেই। এ ছাড়া তার মামলায় এখন পর্যন্ত অভিযোগপত্র দাখিল হয়নি। তাহলে তিনি এসব পেতে হলে ভিন্ন ফোরামে যাবেন। অথচ যেকোনো কিছুর জন্য তিনি ট্রাইবুনালের কাছে আসছেন, যা আইনের বিধানের বাইরে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় একই কক্ষে নিজের আইনজীবীর উপস্থিত থাকা নিয়ে আরেকটি আবেদন করেছেন। এ আইন নিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় তদন্তকারী কর্মকর্তার সামনে আইনজীবীকে বসে থাকার কোনো বিধানই আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে নেই। কিন্তু স্বচ্ছতার স্বার্থে একজন আইনজীবীকে আসামিকে যখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তখন পার্শ্ববর্তী কোনো কক্ষে উপস্থিত থাকার অনুমতি দিয়ে থাকেন এই আদালত। ২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই নিয়মটি মানা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রয়োজন হলে আসামির সাথে দেখা করতে পারবেন আইনজীবী। পাশাপাশি একজন ডাক্তারকেও রাখা হয় যেন অসুস্থতা বোধ করলে চিকিৎসা দেয়া যায়। আইনে না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে এসব করেন আদালত। কিন্তু উনি (আইনজীবী) বলতে চাচ্ছেন জিজ্ঞাসাবাদের সময় আসামির পাশে বসে থাকবেন, যা বাস্তবসম্মত নয়।

চিফ প্রসিকিউটর আরো বলেন, আইনজীবী হলেও সম্পর্কে আসামির বোন হন তিনি (নাজনীন নাহার)। এখানে জিয়াউলকে জিজ্ঞাসাবাদের মূল উদ্দেশ্যই তথ্য উদঘাটন করা। তবে তার আইনজীবী পাশে থাকলে বিঘœ সৃষ্টি হবে। সেজন্য তদন্ত সংস্থা বলেছে তার সামনে বা মুখোমুখি রাখতে পারবেন না। এ ছাড়া তিনি (আইনজীবী) আরো কিছু বিষয় উত্থাপন করেছেন। অর্থাৎ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কে উপস্থিত থাকবে কে থাকবে না। আমরা খুব সুস্পষ্টভাবে দেখিয়েছি যে জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তদন্তকারী কর্মকর্তা যাকে প্রয়োজন মনে করবেন তাকেই পাশে রাখতে পারবেন। অনেক সময় আসামিদের কাছ থেকে তথ্য উদঘাটনের জন্য ভুক্তভোগীদের মুখোমুখি করা হয়, যেন সত্য বলতে বাধ্য হন আসামি।

তদন্তকাজকে বিঘ্নিত করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে তাজুল বলেন, সবসময় সিনক্রিয়েট করার চেষ্টা করেন তিনি। তদন্তের কাজগুলোকে বিঘ্নিত করতে আননেসেসারি অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে কোর্টের সময় নষ্ট করার চেষ্টা করেন। এসব বিষয় আমরা আদালতে তুলে ধরেছি যে এগুলো বিচারপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার শামিল। একই সাথে জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে যেসব প্রমাণ এসেছে তাও জানিয়েছি। কারণ একক ব্যক্তি হিসেবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অপরাধের সাথে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। সুতরাং এসব বিষয় যতটুকু সম্ভব সতর্কতার সাথে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে আইন অনুযায়ী যেন তদন্ত সংস্থা কাজ করতে পারে সেটা আমরা আদালতকে বলেছি।

ট্রাইব্যুনালে গুমের নতুন অভিযোগ : এ দিকে গতকাল রোববার গুমের নতুন একটি অভিযোগ নিয়ে ট্রাইব্যুনালে এসেছিলেন আমেনা আক্তার বৃষ্টি। ২০১২ সালে তিন মাসের ব্যবধানে তার স্বামী এবং দেবর ‘গুম’ হয়েছেন। এখনো তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে গুমের অভিযোগ প্রসঙ্গে আমেনা আক্তার বৃষ্টি নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমার স্বামীর নাম ফিরোজ খান কালো। ২০১২ সালের ২৪ আগস্ট তাকে চট্টগ্রামের ঈদগা কলোনির বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় র‌্যাবের পোশাক পরা কিছু লোকজন। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাইনি। এ ঘটনার তিন মাস আগে ২০১২ সালের ৩ এপ্রিল আমার দেবর মো: মিরাজ খানকে ঢাকার মিরপুর থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাক পরা লোকজন।’

আমেনা আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী ফিরোজ খান কালো’র জন্ম এবং বেড়ে ওঠা বরিশাল শহরে। তিনি বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া ২০নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। গুম হওয়ার ১৫ দিন আগে মজিবুর রহমান সরোয়ারের কাছে ফোন দিয়েছিলেন জিয়াউল আহসান। তিনি ছাত্রদল নেতাদের ‘কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে’ বলে সতর্ক করেছিলেন। এ দিকে আমার দেবর মো: মিরাজ খান কোনো ধরনের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল না। বড় ভাইয়ের রাজনীতির যোগসূত্রের কারণে তাকে গুম করা হয়েছে।’

আমেনা আক্তারের এক ছেলে রয়েছে। নাম আব্দুল্লাহ আল জিসান। সে এখন নবম শ্রেণীতে পড়ে। আমেনা আক্তার অশ্রুসিক্ত অবস্থায় বলেন, আমি মনে করি আমার স্বামী এখনো বেঁচে আছেন। এই গুমের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার হওয়া উচিত। কারণ আমি চাই না আমার মতো অল্প বয়সে কেউ স্বামীহারা হোক। আমার ছেলের মতো কেউ বাবা হারা হোক।