যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম ও ভারত থেকে চাল কিনছে সরকার। এই পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম, ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনা হবে। এ ছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে মোট দুই লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানিসহ ১১টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ‘সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ। এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় ৩ হাজার ১৯৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক শেষে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকারি পর্যায়ে (জি-টু-জি) দুই লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েটস কর্তৃক মনোনীত প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড’ এ গম সরবরাহ করবে। প্রতি মেট্রিক টন গম ৩০৮ ডলার দরে বাংলাদেশী মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ৮২৫ কোটি ৩১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।
বৈঠকে প্যাকেজ-০১-এর আওতায় আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড’ এ চাল সরবরাহ করবে। প্রতি মেট্রিক টন চাল ৩৫৯.৭৭ ডলার দরে বাংলাদেশী মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ২১৯ কোটি ৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।
বৈঠকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় বিএডিসি কর্তৃক চীন ও সৌদি আরব থেকে মোট এক লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৭৬৮.৭৫ ডলার দরে চীনের ‘বানিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড’ থেকে প্রতি প্যাকেজে ৪০ হাজার মেট্রিক টন করে তিনটি প্যাকেজে (প্যাকেজ নং ৪, ৫ ও ৬) মোট এক লাখ ২০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানিতে বাংলাদেশী মুদ্রায় ব্যয় হবে এক হাজার ১২৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
বাকি ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানি করা হবে সৌদি আরবের মা’এডেন থেকে। প্রতি মেট্রিক টন ৭৮৪ ডলার দরে বাংলাদেশী মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ৩৮৩ কোটি ৮৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।
এ ছাড়া বৈঠকে বিএডিসি কর্তৃক রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে অষ্টম লটের আওতায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির আরেকটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৩৫৬.২৫ ডলার দরে বাংলাদেশী মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ১৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
বৈঠকে সৌদি আরবের ‘সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি’ থেকে তৃতীয় লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৪৩৫ ডলার দরে বাংলাদেশী মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ১৫৯ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
অন্যান্যের মধ্যে বৈঠকে ‘ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন’ প্রকল্পের একটি প্যাকেজ কাজের দুটি লটের (প্যাকেজ নং ডব্লিউ-৩, লট-১ ও ২) কাজ সম্পাদনে দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে দুটি লটের কাজই পেয়েছে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ‘আইডিয়াল ইলেকট্রিক্যাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড’। এর মধ্যে লট-১-এ ব্যয় হবে ১২৮ কোটি ৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা এবং লট-২-এ ব্যয় হবে ১২৭ কোটি ৬৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।
এ ছাড়া বৈঠকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘ডিজিটাল সরকার ও অর্থনীতি শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের একটি প্যাকেজ কাজ বাস্তবায়নে ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ কাজটি করবে ‘স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম (প্রাইভেট) লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ৫১ কোটি ৮৫ লাখ ২৯ হাজার টাকা।
উল্লেখিত ১১টি মূল প্রস্তাবের বাইরে বৈঠকে দুটি প্রকল্পের ব্যয় সংশোধনের ( ভেরিয়েশন) প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ‘ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’-এর একটি প্যাকেজ কাজের ব্যয় ১২ কোটি ৯ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
আর পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের এক লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয় হ্রাসের ভেরিয়েশন প্রস্তাবটি বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়নি।