উচ্ছ্বাস না থাকলেও আছে স্বস্তি

জসিম উদ্দিন রানা
Printed Edition

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। সিরিজ জয়ের উচ্ছ্বাস তেমন চোখে না পড়লেও, ভেতরে ভেতরে খেলোয়াড়দের মুখে প্রশান্তির হাসি। ২-১ ব্যবধানে জয়টা এসেছে টিমওয়ার্কে, দৃঢ় মনোবলে ঘরের মাঠের মানসিকতায়। মিরপুরে শেষ ওয়ানডেতে জয়ের পরই খেলোয়াড়রা বিশ্রাম দুই দিন। এরপরই চট্টগ্রামে আগামীকাল সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হচ্ছে নতুন চ্যালেঞ্জ তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ।

এই সংস্করণে বাংলাদেশ সবসময়ই একটু অগোছালো, আবার হুট করেই জ্বলে ওঠার ক্ষমতাও রাখে। ওয়ানডের মতো স্থিরতা এখানে কম, তাই কোচ চ্যান্ডিকা হাথুরাসিংহে চাইছেন শুরুতেই আগ্রাসী মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামতে। লিটন, তানজিদ, শান্তরা নিজেদের ছন্দ ধরে রাখতে চান, অন্য দিকে অভিজ্ঞ মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহরা দলে না থাকায় রিশাদ হোসেনের বোলিংয়ে নতুন মাত্রা এসেছে, আর তরুণ তৌহিদ হৃদয় দলে এনেছেন আত্মবিশ্বাস।

প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকাও চায় ওয়ানডের হার ভুলে নতুনভাবে শুরু করতে। টি-২০ তাদের স্বাচ্ছন্দ্যের ফরম্যাট। পাওয়ারহিটারদের দলে থাকায় চট্টগ্রামের ব্যাটিং-বান্ধব উইকেটে তাদের বিপক্ষে বোলারদের জন্য পরীক্ষা কঠিনই হবে।

বাংলাদেশের লক্ষ্য নিজেদের ছন্দ ধরে রেখে ছোট ফরম্যাটেও জয়ের ধারাবাহিকতা তৈরি করা। ওয়ানডে জয়ের পর এবার টি-২০ সিরিজ জয় পেলে তা হবে টিম টাইগার্সের আত্মবিশ্বাসে এক নতুন জোয়ার। সবকিছু ঠিক থাকলে চট্টগ্রামের আকাশে আবারও উড়তে পারে লাল-সবুজ উচ্ছ্বাসের পতাকা। নতুন একটা সিরিজ শুরুর আগে যে আত্মবিশ্বাস লাগে, ওয়ানডে সিরিজ থেকে তা পাওয়ার কথা বাংলাদেশের। বিশেষ করে শেষ ওয়ানডেতে ওপেনিংয়ে সাইফ-সৌম্যের ব্যাটিং দৃঢ়তায় স্পিন সহায়ক কালো উইকেটেও তিন শ ছুঁই ছুঁই রান, অতঃপর স্পিন দংশনে ১১৭ রানেই শেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রেকর্ড ১৭৯ রানে জয়। ওপেনিং জুটিতে প্রাণ ফিরে পাওয়া ইত্যাদি কম নয়। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের একধাপ ওপরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থাকলেও টি-২০তে ৯ নম্বরে থাকা বাংলাদেশের তিন ধাপ ওপরে, ৬ নম্বরে ক্যারিবীয়নরা।

শাই হোপ কী করতে পারেন, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দেখিয়েছেন। বিরুদ্ধস্রোতে লড়াই করে জিতিয়েছেন দলকে। টি-২০ সিরিজেও তাকে নিয়ে আশায় ড্যারেন স্যামি। টি-২০ উপযোগী রোমারিও শেফার্ড, গুদাকেশ মোতি কিংবা রভম্যান পাওয়েলরা নিজেদের খেলাটা খেলতে পারলে বাংলাদেশের জন্য কঠিন হয়ে যেতে পারে সিরিজ। চোটের কারণে বাদ পড়া পেসার শামার জোসেফের বদলি হিসেবে কোনো পেসার না নিয়ে বাঁ হাতি স্পিনার খ্যারি পিয়েরকে অন্তর্ভুক্ত করেছে সফরকারীরা।

চেনা কন্ডিশনের সাথে ছন্দে থাকাটাই এই মুহূর্তে বড় শক্তি বাংলাদেশের। মিরাজ প্রশংসায় ভাসিয়েছেন রিশাদ ও সাইফকে, ‘২-৩ বছরে এমন একটা জায়গায় চলে এসেছে, যা দলের জন্য আশীর্বাদ। সাধারণত আমরা লেগিদের খেলাতে চাই না। বোলিংয়ে এবার তার নিয়ন্ত্রণটা অনেক ভালো ছিল। বিদেশী লিগে খেলে সে আরো আত্মবিশ্বাসী। অনেকে মনে করেছে, সাইফ টেস্ট খেললে ওয়ানডে খেলতে পারবে না। সে টি-২০তে যেভাবে খেলেছে, ওয়ানডেতে যেভাবে খেলল, তাতে সে অনেক আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। আমরা বিশ্বকাপের আগে এভাবে খেলাতে চাই, যেন বোঝা যায় কোন পজিশনে কে ভালো করছে।’