দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সিলেট জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়ে প্রতিদিনই জমা পড়ছে অভিযোগ। গত দুই মাসে জমা হয়েছে অভিযোগের পাহাড়।
দুদক কর্তৃপক্ষ বলছেন, এসবের ৬০ ভাগের তদন্ত চলছে। আমলযোগ্য না হওয়ায় বাকি ৪০ ভাগই বাতিল হয়ে গেছে।
পারিবারিক বিরোধ থেকে শুরু করে ব্যবসা বাণিজ্য এমনকি ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরেও দুদকের কাছে অভিযোগ জমা পড়ছে। আবার নাম পরিচয়বিহীন অভিযোগও দুদকে জমা পড়ে। ফলে দুদকের সিলেট কার্যালয়ে জমা পড়া অভিযোগের চল্লিশ ভাগই আমলে নিতে পারে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে এগুলো বাতিল করতে হয়। বাকি ষাট ভাগ অভিযোগেরও তদন্তকালে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ে। ফলে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংবলিত অভিযোগ নিয়েও দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়তে হয় তদন্ত কর্মকর্তাদের। এমন তথ্য পাওয়া গেছে দুদক কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে।
দুদক সিলেটের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, জেলা কার্যালয়ে প্রতি মাসে প্রায় ৫০টি অভিযোগ আসে। একই সাথে বিভাগীয় কার্যালয়েও সমপরিমাণ অভিযোগ জমা হয়। দু’টি কার্যালয়ের যৌথভাবে মাসে প্রায় ১০০টি অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ অনুসন্ধানের জন্য নির্বাচিত হয়।
সিলেট জেলা কার্যালয়ের গত দুই মাসের অভিযোগ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আগস্টে জেলা কার্যালয়ে ৪২টি অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্যে ২১টি প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য নেয়া হয়, সাতটি দুদক কমিশনে পাঠানো হয় ও ১৪টি প্রাথমিক বাছাই কমিটির সভায় বাতিল করা হয়।
অক্টোবর মাসে ৪৫টি অভিযোগ জমা হয়, এর মধ্যে ৯টির প্রকাশ্য অনুসন্ধান হয়, ৯টি দুদক কমিশনে প্রেরণ করা হয় ও ২১টি প্রাথমিক বাছাই কমিটির সভায় বাতিল করা হয়।
জানা গেছে, সিলেটের অন্যান্য দফতরের মতো ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরেও অনেকে দুদকে অভিযোগ করেন। আর এসব অভিযোগ নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। কেবল হয়রানির উদ্দেশ্যে মিথ্যা অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকার আহবান রয়েছে দুদকের।
এ বিষয়ে সিলেটে দুদকের উপপরিচালক রাফী মো: নাজমুস্ সা’দাৎ নয়া দিগন্তকে বলেন, আমাদের কাজ মূলত ঘুষ, অবৈধ সম্পদ অর্জন, অর্থপাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সরকারি সম্পদ ও অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত অভিযোগের ওপর। তবে বেশির ভাগ অভিযোগ আসছে এসবের বাইরের। অনেক অভিযোগে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকে না। যেমন-কার কোথায় কী অবৈধ সম্পত্তি আছে তা উল্লেখ থাকে না। তাই সেগুলো বাছাই কমিটির সভায় বাতিল হয়ে যায়।
তিনি জানান, সম্পূর্ণ তথ্যযুক্ত অভিযোগগুলোর ওপর আমরা অনুসন্ধান পরিচালনা করি। অভিযোগ জমা হলে তা প্রথমে যাচাই-বাছাই করা হয়। প্রয়োজন হলে দুদক কমিশনে প্রেরণ করা হয়, সেখানে উচ্চপর্যায়ের সভার মাধ্যমে সেগুলো বাছাই করা হয়। এরপর আবার জেলা কার্যালয়ে ফিরে আসে, তারপর কমিশনে জমা দেয়া হয়। অনুসন্ধান শুরু হয় এবং প্রতিবেদন তৈরি করে পাঠানো হয়।



