সাক্ষাৎকার

ভূকৌশলগত রাজনীতি কাজে লাগালে দক্ষিণ এশিয়ার চেহারা পাল্টে যাবে

প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব

রাশিদুল ইসলাম
মোস্তাফিজুর রহমান
Printed Edition
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব

মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবদুর রব বলেছেন ভূরাজনীতিকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর চেহারা পাল্টে যাবে। তিনি বলেন চিরশত্রু বলে কিছু নেই। চীন ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন হচ্ছে আবার অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। ভারত দার্জিলিং করিডোরের সুবিধা দিলে চীনের সাথে সড়কের মাধ্যমে বেল্ট ইনেশিয়েটিভে যোগ দিতে পারে বাংলাদেশ। ভারত তার নিরাপত্তা নিশ্চিত ও বিশেষ করে উত্তর ভারতের অস্তিত্ব রক্ষায় চীনের সহায়তা পেতে চাচ্ছে। একইভাবে নেপালকে ভারত শিলিগুড়ি করিডোর দিলে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সেতুবন্ধন হয়ে দাঁড়াতে পারে নেপাল। বাংলাদেশ আগেই উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য ট্রানজিট সুবিধা দিয়েছে। ভারত বাংলাদেশের মতো ভূরাজনীতি ও অর্থনীতি কাজে লাগাতে রাজি হলে দক্ষিণ এশিয়ার সবগুলো দেশ উপকৃত হবে। নয়া দিগন্তকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন আবদুর রব।

সাথে ছিলেন নয়া দিগন্তের হেড অব ডিজিটাল মোস্তাফিজুর রহমান। সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হলো আজ।

ভূরাজনীতি ছাড়াও রোহিঙ্গা ইস্যু, সাম্প্রতিক আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সংঘর্ষসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন এই প্রখ্যাত ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক।

নয়া দিগন্ত : চীনের বেল্ট ইনেশিয়েটিভকে কিভাবে দেখছেন, এর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন হতে পারে?

প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুর রব : প্যাসিফিক ওশান ছাড়া চীন কিন্তু প্রায় ল্যান্ড লক। চীনের আশিভাগের বেশি ভৌগোলিক অবস্থান পশ্চিমমুখী। মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে এথনিক রিলেশন ছাড়াও অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। নিরাপত্তা ও ইকোনমির জন্য কানেক্টিভিটি বলেন, বিপুল খনিজসম্পদ কাজে লাগানোর জন্য পাকিস্তানের সাথে সমুদ্র যাতায়াতের উদ্যোগ নিয়েছে। গ্লোবাল পোর্টগুলোর সাথে তারা মুক্তোর মালা সদৃশ একটা যোগাযোগ গড়ে তুলেছে। মহাসড়কের পর মহাসড়ক গড়ে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু চীনের মূল অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী সে কারণে বেল্ট ইনেশিয়েটিভের উদ্যোগ নিয়েছে চীন। বাংলাদেশ দার্জিলিং করিডোরের সুবিধা পেলে চীনের সাথে সড়কের মাধ্যমে বেল্ট ইনেশিয়েটিভে যোগ দিতে পারে। চীন ও ভারতের সম্পর্কের ওপর এটি নির্ভর করছে। ভারত তার নিরাপত্তা নিশ্চিত ও বিশেষ করে উত্তর ভারতের অস্তিত্ব রক্ষায় চীনের সহায়তা পেতে চাচ্ছে। নেপালকে ভারত শিলিগুড়ি করিডোর দিতে পারে। ভারত তা দিলে নেপাল চীন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সেতুবন্ধন হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু তার আগে ভারতের বিগ ব্রাদার সুলভ মনোভাব ত্যাগ করতে হবে। এটা করতে যেয়ে সার্ক অচল হয়ে গেছে। অথচ বাংলাদেশ এখনো চাচ্ছে সার্ককে সক্রিয় করতে। দূরদর্শিতার কথা বললে বলতে হয় ভূরাজনৈতিক বিবেচনায় বাংলাদেশ ভারতে ট্রানজিট দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপক কানেক্টিভিটি গড়ে তুলতে। আশার কথা বাংলাদেশ এখনো সেই অবস্থান ধরে রেখেছে। বঙ্গোপসাগরকে এ অঞ্চলের ল্যান্ডলক কান্ট্রিগুলোকে পণ্য পরিবহনের জন্য সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে চাচ্ছে। কিন্তু ভারত তা মোটেও সুনজরে দেখছে না।

নয়া দিগন্ত : ভবিষ্যতে তা হলে বাংলাদেশের পরাশক্তিগুলোর রণক্ষেত্রে পরিণত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে কী না?

প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুর রব : বাংলায় প্রচলিত প্রবাদ রয়েছে, ‘গরিবের বউ সবার ভাবী’। অর্থনৈতিক দিক থেকে, বাণিজ্যের দিক থেকে বা কানেক্টিভিটির দিক থেকে বাংলাদেশের ভূকৌশলগত অবস্থান, সমুদ্র পথ, চীন, আসিয়ান, সার্কের বাজার, এশিয়ান হাইওয়ে হয়ে চট্টগ্রাম থেকে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বিরাট সম্ভাবনার পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহ, এসপায়োনেজ বা মিলিটারি ম্যানুভারিং বলেন যদি এখানে একটা অবস্থান গড়ে তুলতে পারে, ইসরাইল যেরকম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ও পশ্চিমা দেশগুলোর একটা সিকিউরিটি পোস্ট বিকজ অব দি স্ট্র্যাটেজিক্যালি সিগনিফিকেন্ট লোকেশন, ঠিক একইভাবে ইন্ডিয়াকে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে, চীনকে নজরদারি করতে, তার ওপর আপারহ্যান্ডনেস বজায় রাখতে, তারপর মিয়ানমার সঙ্ঘাতময় অঞ্চলে পরিণত হয়েছে, এ জন্য বাংলাদেশ সবচেয়ে আইডিয়াল প্লেস। প্রায় ১৮ কোটি জনসংখ্যার এ দেশটি খুব দ্রুত অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করছে, অন্তত ট্রেড ও বিজনেসের জন্য আমরা একটা সম্ভাবনাময় অবস্থান ধরে রেখেছি। বাংলাদেশকে পরাশক্তিগুলোর রণক্ষেত্র করতে দেবো কি দেবো না তা নির্ভর করছে জাতির ওপর বা তার মুখপাত্র সরকারের ওপর। সরকার নতজানু হলে, দেউলিয়া হলে, দেশপ্রেমহীন সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে যেকোনো শক্তির কাছে মুখাপেক্ষী হলে শঙ্কা রয়ে যায়। সচেতন, আত্মনির্ভরশীল জাতির প্রতিনিধি হিসেবে দেশপ্রেমিক সরকার থাকলে ‘ওয়াইজ ডিপ্লোমেটিক ম্যানুভারিং’ করতে পারে। প্রাজ্ঞ কূটনৈতিক তৎপরতার সাথে সবার সাথে বন্ধুত্ব করবে, মাথা নত করবে না, স্বার্থের ক্ষেত্রে দিবে নিবে, মিলাবে মিলিবে। অতীতের মতো ক্ষমতালিপ্সু সরকার হলে কখনো এর দরজায় ধরনা, কখনো ওর দুয়ারে হাত জোর করব ক্ষমতায় থাকার জন্য। এটা নির্ভর করছে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ লোকেশনকে টিকে থাকার জন্য ডিভিডেন্ট হিসেবে কতটা ব্যবহার করব তার ওপর। এ গুরুত্বপূর্ণ লোকেশনকে ট্রেডে কাজে লাগাবো, ইকোনমিকে সমৃদ্ধ করব, পাশাপাশি নিরাপত্তাকে সংহত করব। গণমুখী সরকারের ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে।

নয়া দিগন্ত : রাজনৈতিক নেতৃত্ব কি বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক স্বার্থকে উপলব্ধি করতে পারছে? এত বড় স্বার্থকে সামাল দেয়ার মতো তাদের দূরদর্শিতা রয়েছে কি? রাজনীতিবিদদের মধ্যে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি মোকাবেলার প্রস্তুতি কি দেখতে পারেন?

প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুর রব : দুর্ভাগ্যবশত এটা খুব কম, আছে একেবারে হতাশাব্যঞ্জক নয়, কিন্তু যেগুলো হওয়া উচিত, আমাদের অঞ্চল হিসেবে এরিয়াল এক্সটেন্টে আমরা ছোট্ট একটা দেশ। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের দেশ হলেও জাতি হিসেবে বিশাল জনসংখ্যার দেশ। ব্রিটেনের জনসংখ্যা ৬-৭ কোটি, ফ্রান্সের ৮-৯ কোটি, জার্মানির ১০ কোটি, আমরা তাদের চেয়ে ডাবল থেকেও বেশি। সম্মান রক্ষা করে ইরান, তুরস্ক এগিয়ে যাচ্ছে, কারণ দেশপ্রেমিক সরকার সেখানে রয়েছে। মহাশক্তিকে ভ্রুকুটি না করে তারা দেশের সরকারকে প্রাধান্য দেয়। তুরস্ক ও ইরানের ওপর অনেক আগ্রাসন এসেছে কিন্তু তারা তা মোকাবেলা করেছে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে। আমাদের রাজনীতিবিদরা যদি দুর্বলতা দেখান, অযোগ্যতা দেখান, তা হলে আমরা আরো সঙ্কটাপন্ন পরিস্থিতিতে পড়ব। সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে, অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্নে, সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের প্রশ্নে, সলিডারিটি, ইউনিটির প্রশ্নে আমাদের জাতীয় ঐকমত্যে আসতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোতে জ্ঞাননির্ভর দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব থাকা জরুরি। তা হলে তারা পারস্পরিক দার্শনিক মনোভাবের মধ্য দিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেও ঐক্য ধরে রাখতে পারবে। দেশের সার্বভৌমত্ব বা অখণ্ডের প্রশ্নে, নিরাপত্তার প্রশ্নে তারা একাট্টা হয়ে থাকতে পারবে। নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে শক্তিশালী করে তাদের রাষ্ট্রের নিরাপত্তা প্রতীকে পরিণত করতে হবে। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের হবে না। সামরিক কর্মকর্তাসহ আমলা, টেকনোক্রেট দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে।

একই সাথে জাতীয় স্বার্থ ও ঐক্যের বিষয়টি আমাদের প্রজন্মের মধ্যে লালিত স্বপ্নে পরিণত করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থায় এটি চর্চার মধ্যে আনতে হবে। নৈতিকতা ভাস্বর প্রজন্ম তৈরি করতে হবে। কারণ ভোগবাদী, ক্ষয়িষ্ণু ও সাময়িক লাভের ওপর ভিত্তি করে আমাদের প্রজন্মের যে সাইকি বা মনস্তত্ত্ব তৈরি হয়েছে, তারা পড়াশোনা শেষ করে বিদেশে চলে যাচ্ছে, ব্রেনড্রেইন তৈরি হয়ে গেছে, মেধাবী বাংলাদেশীরা ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপানে ছড়িয়ে আছে, ভারতে যাচ্ছে। ভোগবাদী মানসিকতার যূপকাষ্ঠে তারা আটকা পড়ে আছে। এটাই নিউকলোনিজমের নতুন এক পদ্ধতি। বার্ধক্যজনিত পুরনো মেন্টালিটির লোকজন রয়ে যাচ্ছি তাদের পক্ষে নতুন চিন্তা-চেতনা দেশপ্রেমিক উজ্জীবিত ধারা ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এখন চিন্তা-চেতনায় ফ্রেশ ব্লাডের তরুণদের ঢেলে সাজানো শিক্ষাব্যবস্থায় সম্পৃক্ত করতে হবে। মডার্ন সাইন্স টেকনোলজির মধ্যে নীতি নৈতিকতা সঞ্চার করে তরুণদের দীক্ষিত করে তুলতে না পারলে, সক্রিয় সংস্কৃতির চর্চা করতে না পারলে হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পূর্বশর্ত হচ্ছে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। স্বার্থপর লুটেরা যদি রাজনৈতিক নেতৃত্বে থাকেন তা হলে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা বিকিয়ে দেবে, অনেকটা দিয়েছে, এটা থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে।

নয়া দিগন্ত : হাসিনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উন্নতি হচ্ছে যেটা ভারত অপছন্দ করছে, বাংলাদেশের পাকিস্তানের সম্পর্ক উন্নয়নে এগিয়ে যাওয়া উচিত?

প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব : আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে পরিষ্কার বলা আছে সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্যই সার্ক সৃষ্টি হয়েছিল। দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন হবে। বাংলাদেশে চমৎকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজ করছে। শহীদ জিয়াউর রহমান এসব লক্ষ্য নিয়েই উদ্যোগটা নিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত ভারতের বড় ভাই সুলভ মনোভাবে তা বেশি দূর আগাতে পারেনি। বাংলাদেশ ভারতের সাথে সৌহার্দ্য ও সমতার ভিত্তিতে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক চায়। বাংলাদেশের সার্বভোমত্বকে ভারত সম্মান করবে, পরিবেশগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে ভারতকে। ভারত থেকে ৯০ ভাগ পানি আসে। আমরা ভারতকে ট্রানজিট দিয়েছি। শিলিগুড়ি করিডোর ব্যবহারের সুযোগ ভারত দেয়নি। এ করিডোরে রেললাইন দিয়ে বাংলাদেশ নেপালের সাথে সরাসরি পণ্য রফতানি করতে পারে। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে অখণ্ডতা নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা ভারতের সাথে সৌহার্দ্য রাখব। আধিপত্য কিংবা আমাদের পলিসি মেকিংয়ে তারা নাক গলাবে না।

পাকিস্তান যেহেতু এ অঞ্চলের দেশ, আগে এক দেশ থাকলেও তাদের অন্যায়, শোষণের কারণে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে, অনেক রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ পেয়েছি, কিন্তু চিরস্থায়ী দোশত-দুশমনের মতো কোনো কনসেপ্ট নেই। ব্রিটেনের অধীনে একসময় যুক্তরাষ্ট্র ছিল, এখন দুটি দেশ সবচেয়ে বড় বন্ধু। ভিয়েতনামে যুক্তরাষ্ট্র ম্যাসাকার করেছে, কারপেট বোম্বিং, নাপাম বোমা, কিলিংস কী না হয়েছে, এখন তারা বেস্ট পার্টনার। বাংলাদেশও বাইল্যাটারেলের পাশাপাশি মাল্টিল্যাটারেল সম্পর্ক গড়ে তুলবে। হিংসা, জিঘাংসা নয় আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ সব দেশের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে পাকিস্তানের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। অর্থনৈতিক সমস্যা কাটিয়ে উঠছে দেশটি। প্রযুক্তি, পারমাণবিক শক্তি, প্রতিরক্ষায় পাকিস্তান এগিয়ে গেছে। বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ বিমান, ট্যাংক রফতানি করছে। একটু দূরের হলেও পাকিস্তানকে ভালো প্রতিবেশী হিসেবে পাবে বাংলাদেশ। চাল ও তুলা উৎপাদনে দেশটি এগিয়ে আছে, মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি যা বাংলাদেশ আমদানি করে উপকৃত হতে পারে। ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া পাকিস্তান থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি করছে, এসব দেশের চেয়ে বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছে। রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সাথে ভারত নিরাপত্তা চুক্তি করছে, বাংলাদেশ তার নিরাপত্তা স্বার্থ বজায় রাখতে চীন ও পাকিস্তানের সাথে চুক্তি করতে পারে। পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন হলে ভারতের মনোবেদনার কারণ নেই। ভারত যদি চীনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে তা নিয়ে পাকিস্তান বা বাংলাদেশের মনোবেদনার কারণ নেই। সার্কের সদস্য দেশগুলোর সাথে চমৎকার সম্পর্ক খুবই প্রয়োজন। বিগ ব্রাদারলি অ্যাটিচিউড কেউ দেখাতে পারবে না।