২০২১ সালের নভেম্বর মাসে বিশ্বের প্রযুক্তি দুনিয়ায় যুক্ত হয়েছে নতুন এক মাত্রা। এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি সামনে আনলো মাইক্রোসফটের ওপেনএআই। চ্যাটজিপিটি এআইয়ের এক অন্যতম আবিষ্কার, যা আমাদের জীবনে যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। প্রযুক্তির এই আবিষ্কার জীবনকে অনেক সহজ করেছে। যেকোনো প্রশ্ন করলেই সহজে উত্তর দিয়ে দেয় সে। শুধু গুরুগম্ভীর আলোচনা নয়, সে লিখে দেয় কবিতা। রেসিপি থেকে শুরু করে গণিত সমাধান, ভার্সিটির অ্যাসাইনমেন্ট, রিপোর্টের সব ধরনের কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
নতুন সুবিধা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’র জন্য তৈরি নতুন ‘জিপিটি-৫’ মডেল আগের সব সংস্করণের তুলনায় শক্তিশালী, বুদ্ধিমান ও নিরাপদ বলে জানিয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই। শুধু তাই নয়, নতুন মডেলটি পিএইচডি স্তরের সমান দক্ষ বলেও দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম অল্টম্যান নতুন মডেলটিকে চ্যাটজিপিটির নতুন যুগের সূচনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার ভাষ্যে, নতুন মডেলটি আগের মডেলগুলোর তুলনায় আরও স্মার্ট, দ্রুত ও কার্যকর।
জিপিটি-৫ মডেল এরই মধ্যে প্রযুক্তিবিশ্বে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জিপিটি-৫ মডেলের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলো ভুয়া তথ্য শনাক্তকরণের দক্ষতা। ব্যবহারকারীদের সাথে আগের মডেলগুলোর তুলনায় যোগাযোগের সক্ষমতাও বেশি রয়েছে মডেলটির। ওপেনএআইয়ের তথ্যমতে, চ্যাটজিপিটি-৫ তিনটি সংস্করণে ব্যবহার করা যাবে। জিপিটি-৫, জিপিটি-৫ মিনি ও জিপিটি-৫ ন্যানো। ব্যবহারকারীরা জিপিটি-৫ ও মিনি সংস্করণ বিনা মূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে জিপিটি-৫ প্রো সংস্করণের জন্য মাসে ২০০ ডলার খরচ করতে হবে। নতুন মডেলটি ওপেনএআইয়ের সব সেবায় একীভূত করা হয়েছে। ফলে যুক্তি বিশ্লেষণ, ছবি তৈরি, ওয়েব ব্রাউজ বা ভয়েস মোডসহ সব কাজেই মডেলটি কাজ করবে।
জিপিটি-৫ মডেলের মাধ্যমে কোডিং ও লেখার সময় পিএইচডি স্তরের দক্ষতা দেখা যাবে। এরই মধ্যে কোডিংয়ের ক্ষেত্রে জিপিটি-৫ আগের সব মডেলের তুলনায় ভালো ফল করেছে। শুধু তাই নয়, যুক্তি বিশ্লেষণ ও ত্রুটি সমাধানেও দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। এ ছাড়া টেক্সট প্রম্পট দিয়ে এক মিনিটের মধ্যে একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ অ্যাপ তৈরি করতে পারে জিপিটি-৫।
বাজারে আসতে না আসতেই বিতর্কের মুখে পড়েছে চ্যাটজিপিটি। ব্যবহারকারীদের দাবি চ্যাটজিপিটি-৪-ই ভালো ছিল। ওপেনএআই দাবি করছে, জিপিটি-৫ মডেলে এই সমস্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। নতুন মডেলের ত্রুটির হার ‘ওথ্রি’ সংস্করণের তুলনায় ৬৫ শতাংশ এবং জিপিটি-৪ এর তুলনায় ২৬ শতাংশ কম। পাঁচ হাজার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বাইরের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পরীক্ষা চালিয়ে এর নির্ভরযোগ্যতা ও স্থায়িত্ব বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে কোনো বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য জানা না থাকলে অযৌক্তিক কোনো উত্তর দেবে না জিপিটি-৫।
অনলাইনে অনেকেই অভিযোগ জানিয়েছেন চ্যাটজিপিটি-৫ নিয়ে। কারো দাবি, চ্যাটজিপিটির নতুন সংস্করণ খুব বেশি ‘এনগেজ’ হয় না! ছোট ছোট উত্তরে কাজ সারে। অনেক সময় সাধারণ উত্তর দিতেও সমস্যায় পড়ে যায়। আবার অনেকেরই দাবি, চ্যাটজিপিটি-৪-এর তুলনায় অনেক বেশি সংগঠিত হলেও আলাপচারিতায় অনেক পিছিয়ে চ্যাটজিপিটি-৫।



