অর্থসংক্রান্ত বিভিন্ন আইনে গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন এনে ‘অর্থসংক্রান্ত কিছু আইন (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। সোমবার রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে অধ্যাদেশটি প্রণয়ন করেন। ইতোমধ্যেই এটি বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা ১০৬ সংশোধন করে সিকিউরিটিজ থেকে প্রাপ্ত সুদের ওপর উৎসে কর কর্তনের হার পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। কোম্পানি করদাতাদের জন্য উৎসে করের হার ধরা হয়েছে ১৫ শতাংশ এর আগে, সিকিউরিটিজে সুদ আয় থেকে উৎসে করের হার ছিল সর্বজনের জন্য সমান ১০ শতাংশ। নতুন সংশোধনের ফলে কোম্পানি খাতে করভার কার্যত ৫ শতাংশ পয়েন্ট বেড়ে গেল।
অধ্যাদেশে আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা ১৬৩-এর উপধারা (১১) পুনর্লিখন করা হয়েছে। সংশোধিত বিধানে বলা হয়েছে, বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত মোটরযান থেকে সংগৃহীত অগ্রিম কর সংশ্লিষ্ট করবর্ষে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য হবে।
তবে এই সুবিধা কেবল বাণিজ্যিক যানবাহনের জন্য প্রযোজ্য হবে। ব্যক্তিগত গাড়ি বা অ-বাণিজ্যিক ব্যবহারের যানবাহনের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে না। এ ছাড়া করদাতার প্রকৃত আয় যদি অগ্রিম করের ভিত্তিতে নির্ধারিত আয়ের চেয়ে বেশি হয়, তবে অতিরিক্ত অংশে নিয়মিত কর দিতে হবে।
অধ্যাদেশের দ্বিতীয় অধ্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ সংশোধন করা হয়েছে। নতুন বিধান অনুযায়ী, সরকার এখন থেকে গেজেট প্রজ্ঞাপন বা বিশেষ আদেশের মাধ্যমে যেকোনো পণ্য, পণ্য শ্রেণি বা সেবাকে ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক কিংবা অগ্রিম কর থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে।
এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে। অধ্যাদেশে সই করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী।
কর বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে আয়কর ও ভ্যাট উভয় ক্ষেত্রেই হার ও প্রক্রিয়াগত অস্পষ্টতা দূর হয়েছে। বিশেষ করে সিকিউরিটিজে উৎসে করের নতুন হার এবং বাণিজ্যিক যানবাহনের অগ্রিম করসংক্রান্ত বিধানগুলো রাজস্ব আহরণে স্বচ্ছতা ও ন্যায়সঙ্গতা আনবে।