বিশেষ সংবাদদাতা
- দেশ সম্পূর্ণ অনিশ্চয়তার দিকে চলে যাচ্ছে : বিএনপি
- রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রতিরোধে অঙ্গীকার প্রয়োজন : জামায়াত
আওয়ামী লীগের আমলে চোরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। চোরতন্ত্রে ছিলেন আমলারা, ব্যবসায়ীরা আর রাজনীতিবিদরা। এখন রাজনীতিবিদরা পালিয়ে গেছেন, ব্যবসায়ীরা ম্রিয়মাণ আর আমলারা পুরো শক্তি নিয়ে পুনরুজ্জীবিত বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো (সিপিডি) ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দুই ভাগ করা ঠিক আছে, এটি শ্বেতপত্রে বলা ছিল। কিন্তু দুই ভাগের প্রক্রিয়া যেভাবে হয়েছে তা ঠিক হয়নি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, তথ্য উপাত্ত নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যদি বাজেট তৈরি করা হয় তাহলে তা প্রত্যাশা পূরণ করবে না। তারা বলেন, একটা বড় ধরনের পরিবর্তন ছাড়া উন্নতি হবে না। নীতি পরিবর্তনের কারণে বৈদেশিক বিনিয়োগে আজ ভাটা পড়েছে।
একই অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পরিবেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়াই হবে এই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু এই মুহূর্তে বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে, আমরা কোথায় যাচ্ছি, কেউ জানি না। দেশ সম্পূর্ণ অনিশ্চয়তার দিকে চলে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের সহনশীল হতে হবে। পরস্পরের প্রতি সম্মানবোধ থাকতে হবে। সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাইফুল আলম খান বলেছেন, দেশে যেন রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি না হয় সে জন্যও আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া দরকার।
রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৫-২৬ : নীতিসংস্কার ও জাতীয় বাজেট শীর্ষক বহু অংশীজনের সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে ড. দেবপ্রিয় এসব কথা বলেন। সিপিডি ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম এর আয়োজন করে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী প্রধান অতিথি ছিলেন। সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল আলম খান মিলন, বিশ্বব্যাংকের প্রাক্তন প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন, সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান, মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) ড. এ কে এনামুল হক, উপাচার্য, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) অধ্যাপক ড. এম তামিম, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার, শরণার্থী ও অভিবাসী আন্দোলন গবেষণা ইউনিটের (আরএমএমআরইউ) অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো এবং নাগরিক প্ল্যাটফর্মের মূল গ্রুপ সদস্য অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শারমিন্দ নীলোরমি, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) সিইও মিসেস ফেরদৌস আরা বেগম, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ এবং রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক ড. কাজী ইকবাল, শ্বেতপত্র কমিটি ২০২৪ এর এগারো (১১) সদস্য এবং সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
উপস্থাপনায় ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের বেকারত্ব বেড়েছে ১৪ শতাংশ। একই সময়ে মূল্যস্ফীতির তুলনায় শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির হার অনেক নিচে। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি এখনো ঘুরে দাঁড়ায়নি। সরকার বিনিয়োগ উপাদানগুলো খুব বেশি উৎসাহিত করতে পারছে না। তিনি বলেন, আগামীর প্রবৃদ্ধি বিনিয়োগতাড়িত নাও হতে পারে। সেটি হবে ভোগতাড়িত।
সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ তুলে ধরে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণটা এই সরকারের জন্য একটা বড় বিষয় ছিল। তারা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তারা চেষ্টা করেছেন। এই সাথে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা স্থাপনের জন্য টাকার মূল্যমানের পতনকে আটকানোর চেষ্টা করেছেন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে উন্নত করার চেষ্টা করেছেন। বিদেশী দেনা যেসব বাকি ছিল তা শোধ করেছেন। টাকার বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক করার জন্য চেষ্টা আমরা লক্ষ্য করেছি। আইএমএফের কাছ থেকে প্রাপ্য বাড়তি ১.৩ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ফেরত আনার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে পুনর্গঠন করার জন্য সরকার এই মুহূর্তে পদক্ষেপ নিয়েছে।
কর আদায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা সন্তোষজনক না। গত কয়েক দশকে কর আদায় নিয়ে এত সমালোচনার পরও কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। কর-জিডিপি অনুপাত এখনো ১০ শতাংশের নিচে আছে। সাম্প্রতিককালে কর আদায়ে পরোক্ষ কর প্রত্যক্ষ করের তুলনায় এখনো বেশি। তিনি বলেন, বাজেটে রাজস্ব ব্যয়ের দু’টি খাত সবচেয়ে বেশি হচ্ছে, প্রথমটি সুদ ব্যয় আর দ্বিতীয়টি ভর্তুকি। সরকারের অর্থনীতি পরিচালনা কোনো ঘোষিত নীতিমালার আলোকে হচ্ছে না, তা চলছে অ্যাডহক ভিত্তিতে। তিনি বলেন, যেভাবে আলোচনা ব্যতিরেকে এনবিআরকে দু’ভাগ করা হয়েছে এবং পেশাজীবীদের জায়গাকে সঙ্কুচিত করে এবং অন্যান্য স্বায়ত্তশাসনের জায়গাকে আরো বেশি নিয়ন্ত্রণে রেখে এই পদ্ধতি ঠিক হয়নি। এটাকে ঠিকমতো করাটা এখন বড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেবপ্রিয় বলেন, দেশের মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য মুদ্রানীতি এখনও প্রতিফলিত হয়নি। ৮ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে এলে আমরা একটা সিগন্যাল পাবো।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যাত্রার বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। তিনি ১৯৭১ সালের অর্থনৈতিক ধস এবং প্রেসিডেন্ট নিক্সনের স্বর্ণ মান পরিত্যাগের সিদ্ধান্তের মতো বৈশ্বিক ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ইতিহাসের পরিবর্তন আমাদের বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সক্ষমতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হওয়া দরকার। বাস্কেট কেস ধরনের নেতিবাচক ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে একটি স্থিতিশীল ও ন্যায্য আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক কাঠামো গঠন করা দরকার।
র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক এম আবু ইউসুফ বলেন, এবার একটা ভিন্নধর্মী বাজেট হবে বলে আমরা আশা করি। কারণ বাজেট নিয়ে আগে যারা কথা বলেছে তারা এখন বাজেট প্রণয়ন করছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে যতগুলো কমিটি করেছে শ্বেতপত্র, টাস্কফোর্স ও কমিশন এসবের প্রতিফলন বাজেটে থাকা উচিত। কিছু প্রতিফলন এর মধ্যে দেখা গেছে। যেমন এবারের বাজেটের আকার কমছে, এডিপির আকার ও প্রকল্পের সংখ্যা কমানো হয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষা, সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো থাকবে। ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে রাজস্ব বাড়ানোর বিকল্প নেই।
ড. ম তামীম বলেন, বিদ্যুৎ খাতে কাঠামোগত পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। এখনো পর্যন্ত কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন দেখি নাই। কিন্তু বর্তমান সরকারের এটি করার সুযোগ ছিল। তিনি বলেন, শুধু দুর্নীতি একমাত্র দায় না। বার বার নীতি পরিবর্তন করা হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি ভালো করতে হলে নীতিমালায় যেতে হবে। তিনি বলেন, ভুল নীতির কারণে জ¦ালানি আমদানির ওপর নির্ভর হয়ে গেছি। ৬৯টি কূপ খননের পরিকল্পনার কথা শুনেছি। কিন্তু ফলাফল দেখছি না।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চুরি করে দেশ থেকে টাকা বিদেশে নিয়ে গেছে। মাথায় হাত বুলিয়ে সেই টাকা দেশে ফেরত এনেছে এমন নজির পৃথিবীর ইতিহাসে নেই।
ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, বাজেট যেন এমন হয়, সেটা যেযন বাসযোগ্য দেশ দিতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকে যে তথ্য আছে, তা লঘুতথ্য। সঠিক ও পর্যাপ্ত তথ্য নাই। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় আবার শ্রমবাজার খুলতে যাচ্ছে। কিন্তু পুরনো ব্যবস্থাতেই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এতে বড় পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। প্রবাসী আয় বাড়াতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার। এত বছর ধরে এ কথাটি বলা হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, ওষুধের দাম বেড়েছে। আমরা বিপদে আছি। এটা কিভাবে কমানো যায় সে পদক্ষেপ নেয়া দরকার।
বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. এনামুল হক বলেন, এ সরকারের এটিই একমাত্র বাজেট হলেও, আগামী বাজেটে ৫ আগস্টে তৈরি হওয়া মানুষের প্রত্যাশা ও লক্ষ্যের দিকনির্দেশনা দিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে ডাক্তারের সংখ্যা বাড়লেও নার্সের সংখ্যা বাড়েনি। তিনি বলেন, ৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হলে কর্মসংস্থান হবে শূন্য। এটাকে যদি বাড়ানো না যায় তাহলে দারিদ্র্য কমবে না। কর্মসংস্থানও বাড়বে না।
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের ওপর দিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য ‘মানবিক করিডোর’ এবং চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া কোনো অরাজনৈতিক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ নয়। তিনি বলেন, এখন মানবিক করিডোরের কথা বলছেন। এটি সেনসেটিভ ইস্যু, বাংলাদেশের সিকিউরিটির প্রশ্ন। জিও স্ট্যাটিজিক ডিসিশন। আপনারা তো এই ডিসিশনের দিকে যেতে পারেন না। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে ডিসিশনে যাচ্ছেন। একটা নন-পলিটিক্যাল গভর্নমেন্ট, একটা ইন্টেরিম গভর্নমেন্টের কি এসব সিদ্ধান্তে যাওয়ার দরকার আছে? বিএনপি নেতা বলেন, একটা ডেমোক্র্যাটিক সিদ্ধান্তের জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে। দেশের মালিকানা ফেরানোর জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, সেই আলোচনা বাদ দিয়ে বাকি সবকিছু আমরা করছি। এসবের মাধ্যমে আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) কী প্রমাণ করতে চাচ্ছেন?
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে আমীর খসরু বলেন, ইন্টেরিম সরকারের ওপর খুব বেশি প্রত্যাশাও নেই। কারণ এ ধরনের সরকারের কিছু লিমিটেশন আছে। তারা জনগণের মেন্ডেট নিয়ে দেশ পরিচালনা করছে না। তারা পাবলিক ফিডব্যাক, জনগণ ও বিজনেস কমিউনিটির নার্ভ ফিল করতে পারে না। তিনি বলেন, এই সরকারের ওপর মানুষের যেটুকু এক্সপেকটেশন সেটা একটু ভিন্ন। ডেমোক্র্যাটিক অর্ডারে ফিরে যাওয়ার জন্য যে কাজগুলো করা দরকার সেটাই হচ্ছে এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু আমরা সেখানে কতটুকু এগোচ্ছি? তিনি বলেন, এই সরকারের ওপর মানুষের যেটুকু এক্সপেকটেশন সেটা একটু ভিন্ন। ডেমোক্র্যাটিক অর্ডারে ফিরে যাওয়ার জন্য যে কাজগুলো করা দরকার সেটাই হচ্ছে এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু আমরা সেখানে কতটুকু এগোচ্ছি? আনসারটেনিটির মাধ্যমে যেখানে স্থিতিশীলতা থাকবে না, সেখানে মানুষ ইনভেস্টমেন্টেও ভরসা পাবে না। আগামী দিনের বাংলাদেশ কেমন হবে, এ সরকার কতদিন থাকবে, নির্বাচন কবে হবে, আগামী নির্বাচনের পর বাংলাদেশ কোথায় যাবে, এ বিষয়গুলো সবার মনে কাজ করছে। কিন্তু আমরা কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।
তিনি বলেন, এই যে একটা ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম হলো, আমরা স্বাগত জানাই। তবে আমরা মনে করি ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম কোনো সরকারের দায়িত্ব না। বরং আমাদের সবার দায়িত্ব। এখানে ইনভেস্টমেন্টের অবশ্যই দরকার আছে। নির্বাচিত সরকার ছাড়া তো সেভাবে ইনভেস্টমেন্ট আসবে না। ইনভেস্টমেন্ট ছাড়া কোনো দেশই চলতে পারবে না। কারণ ইনভেস্টমেন্ট ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো দেশই উন্নতি করতে পারে না।
আমীর খসরু বলেন, এমপ্লয়মেন্ট ক্রিয়েট করতে হলে আপনাকে প্রথমেই আমাদের প্রাইভেট সেক্টরে ইনভেস্ট করতে হবে। সেটা দেশে হোক বা বিদেশে। সেই জায়গাটিতে যে কনফিডেন্স দরকার, যে রোডম্যাপ দরকার, যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা দরকার, শর্টটার্ম, মিডটার্ম বা লংটার্ম সেটা তো কেউ করতে পারছে না। সবাই অপেক্ষা করছে, পরবর্তী পদক্ষেপ কী কেউ বুঝতে পারছে না। কারণ দেশে এখন না কোনো ইলেকটেড সরকার আছে, না কোনো রোডম্যাপ আছে, যার ওপর ভরসা করে মানুষ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান বলেন, আমরা দেখছি যে দেশের একটা বড় অংশ বেকার। শিক্ষিত ও অশিক্ষিত। আমাদের দেশ ছোট দেশ, এখানে শিল্পায়ন কম হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমরা বৈদেশিক কর্মসংস্থানের প্রতি বেশি জোর দিতে পারি। ভারতের লোকেরা মধ্যপ্রাচ্যের সব জায়গায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমরা বেশ পিছিয়ে আছি। এ ক্ষেত্রে আমাদের পদক্ষেপ নেয়া দরকার।
তিনি বলেন, আমাদের একটা বড় সমস্যা হলো দুর্নীতি। রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার হওয়া দরকার আমরা দুর্নীতির ভেতরে প্রবেশ করব না। গত ১৬ বছর বা তার আগেও দুর্নীতি হয়েছে। তিনি বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দিকে আমাদেরকে বাজেটে নজর দিতে হবে। নজর দিতে হবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের প্রতি। এখানে বাজেট না কমিয়ে আরো বাড়ানো যায় কি না।