সাক্ষাৎকার

সাইবার বুলিংয়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা প্রয়োজন : উমামা ফাতেমা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি উমামা ফাতেমা ডাকসু নির্বাচনে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল থেকে ভিপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।

হারুন ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
Printed Edition
উমামা ফাতেমা
উমামা ফাতেমা |সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানই প্রধান প্রতিশ্রুতি

দীর্ঘ ছয় বছরের প্রতীক্ষার পর আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। এবারের নির্বাচন মূলত পাঁচটি বড় গোষ্ঠীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার রূপ নিয়েছে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ, ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থীজোট, বাম সমর্থিত প্রতিরোধ পর্ষদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। প্রতিদ্বন্দ্বী এই প্রধান পাঁচটি জোটের ভিপি প্রার্থীরা কথা বলেছেন দৈনিক নয়া দিগন্তের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নয়া দিগন্তের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হারুন ইসলাম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি উমামা ফাতেমা ডাকসু নির্বাচনে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল থেকে ভিপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তিনি ক্যাম্পাসে দলীয়করণ বা বিরাজনীতিকরণ নয়, বরং একটি রাজনৈতিকভাবে সচেতন অ্যাকাডেমিক পরিবেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

নয়া দিগন্ত : ডাকসু নির্বাচনের আয়োজনে কোনো ত্রুটি দেখতে পাচ্ছেন কি না?

উমামা ফাতেমা : সেভাবে ত্রুটি বলা যাবে না; বরং আয়োজনে বেশকিছু অসঙ্গতি লক্ষ করা যাচ্ছে। এগুলো সমাধান করলেই হবে। যেমন নির্বাচনের সময়ে অনেক বিভাগে পরীক্ষা পড়েছে। এতে ডাকসুর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন শিক্ষার্থী ও প্রার্থীরা। ভোটের তারিখের সাথে পরীক্ষার তারিখের সমন্বয় আনতে হবে। তাই আমাদের দাবি- নির্বাচনের আগে পরীক্ষা পেছাতে হবে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা যেন নির্বিঘেœ পরীক্ষা দিতে পারেন আবার নির্বাচনও যেন নির্বিঘেœ সম্পন্ন হয়।

নয়া দিগন্ত : নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো দাবি আছে কি আপনার?

উমামা ফাতেমা : এ মুহূর্তে আমাদের কনসার্ন ফলাফল ঘোষণার সময় নিয়ে। আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি যে, ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর ফলাফল ঘোষণায় দেরি হলে ফলাফল পরিবর্তন করতে পারে। এ ক্ষেত্রে একটি পক্ষের কথা বিবেচনায় নিতে হবে। সুতরাং ফলাফল ঘোষণা করতে বেশি সময় নেয়া যাবে না। এ ছাড়াও হলের কাছাকাছি কোনো জায়গায় ভোট কেন্দ্র হলে ভালো হয়, যেমন অ্যাকাডেমিক ভবনে। অর্থাৎ হলের কাছের কোনো অ্যাকাডেমিক ভবনে ভোট কেন্দ্র হলে ভালো হয়।

নয়া দিগন্ত : প্রচার-প্রচারণায় কোনো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন কি?

উমামা ফাতেমা : বর্তমানে রাত ১০টা পর্যন্ত হলে নির্বাচনী প্রচার চালানো যায়; কিন্তু শিক্ষার্থীরা রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত লাইব্রেরিতে থাকে। অনেকে টিউশনে যায়। এতে প্রচারণার সময় পাওয়া যাচ্ছে না। সুতরাং হলে নির্বাচনী প্রচারণার সময়সীমা বাড়ানো উচিত। এ ক্ষেত্রে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত করার দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়াও হলে প্রবেশ ও বের হওয়ার বিধিবিধান শিথিল করতে হবে। যদি দৃশ্যমান প্রচারণা না চালানো যায়, তাহলে কিভাবে তারা ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে প্রার্থীরা পরিচিত হবেন।

নয়া দিগন্ত : নারী প্রার্থীরা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আপনার কিছু বলার আছে?

উমামা ফাতেমা : শুধু প্রার্থীরা নন, আমাদের অনেক বোনও সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। নারী প্রার্থীদের সাইবার বুলিং ও হয়রানি রোধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হলেও প্রশাসন এখনো তা করেনি। ডাকসু নির্বাচন সামনে রেখে বিশেষ সাইবার সেল গঠন করা সময়ের দাবি বহির্প্রকাশ। সিদ্ধান্তটি প্রশাসনকে পুনঃবিবেচনার দাবি জানাচ্ছি।

নয়া দিগন্ত : প্রচারণা করতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সাড়া কেমন পাচ্ছেন?

উমামা ফাতেমা : মেয়েদের ভালো সাড়ার পাচ্ছি। তারা ভোট প্রদানে অনেক বেশি আগ্রহী। প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসব-উদ্দীপনা ব্যাপক দেখতে পাচ্ছি। এই উৎসব বিদ্যমান থাকুক।