- ‘ডেঞ্জার জোন’ সিলেটে বড় ধরনের দুর্যোগের ঝুঁঁকি ক্রমেই তীব্র হচ্ছে
- ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক ধ্বংসলীলার আশঙ্কা
- ঢাকার ভূমিকম্প সিলেটের জন্য অশনিসঙ্কেত
- ২৩ ভবন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত
- ৮০ ভাগ ভবন মাটির সাথে মিশে যাওয়ার আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
- উদ্ধার প্রস্তুতি নেই
- গত দেড় দশকে সেমিনার সভা-সমাবেশ হলেও কার্যকর উদ্যোগই নেই
গত শুক্র শনিবার রাজধানীসহ দেশে পরপর কয়েকটি ভূমিকম্পে আতঙ্ক উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। দেশে ভূমিকম্পের অন্যতম ডেঞ্জার জোন হিসেবে চিহ্নিত সিলেটেও বেড়েছে আতঙ্ক ও উৎকন্ঠা। ভূমিকম্পের আতঙ্কে এখন দিন কাটছে সিলেট নগর ও আশপাশের ২৫ লাখ মানুষের। ভূমিকম্পে সিলেট বারবার কেঁপে উঠেছে।
২০২১ সালের মে মাসে মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে সিলেটে ২০ টি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর পরের চার বছরে সিলেটে আরো ২৫ বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে এসব ঘটনায় আতঙ্ক ও উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পড়লেও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। সিলেটের আশেপাশেই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হওয়ায় সবচেয়ে উৎকন্ঠার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কখনো সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয়ের ডাউকি ফল্ট, আবার কখনো উৎপত্তিস্থল সিলেট বিভাগের ভেতর। আবার কখনো রাজধানী শহর ঢাকায় এর কেন্দ্রবিন্দু। পর্যায়ক্রমে কম্পিত হওয়া একের পর এক ভূমিকম্পে আতঙ্কে দিন কাটছে সিলেট নগরবাসীর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকা স্থানীয় ফল্টগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠায় ভূমিকম্পের হার দ্রুত বাড়ছে। ভূতাত্ত্বিকভাবে ‘ডেঞ্জার জোন’-এ থাকা সিলেটে তাই বড় ধরনের দুর্যোগের ঝুঁঁকি ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সিলেট নগরীতে যমদূতের মতো দাঁড়িয়ে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ পুরনো ভবনগুলো বড় ধরনের আতঙ্ক তৈরি করেছে। বড় ভূমিকম্প হলে এসব ভবন ধসে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছেন নগরবিদ ও বিশেষজ্ঞরা।
তবুও এতদিন সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ও সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো উদাসীনই ছিল। তবে এবার নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো: সারওয়ার আলম রোববার নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, ‘সিলেট নগরীর ২৩টি বিপজ্জনক ভবন ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেগুলো খুব শিগগিরই ভেঙে ফেলা হবে। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি ভবন রয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকেই অপসারণের কাজ শুরু হবে।’
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য মতে, নগরীর অধিকাংশ পুরনো ভবনের নকশায় ভূমিকম্প প্রতিরোধী ব্যবস্থা নেই। তীব্র কম্পনে এগুলোতেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা। ঝুঁকির মধ্যে থাকা ভবনগুলোর মাঝে রয়েছে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক মার্কেট ও আবাসিক ভবন।
জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম বলেন, ‘সিলেট নগরীর ২৩টি বিপজ্জনক ভবন ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেগুলো খুব শিগগিরই ভেঙে ফেলা হবে। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি ভবন রয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকেই অপসারণের কাজ শুরু হবে। চিহ্নিত ভবনগুলোতে এখনো কেউ কেউ বসবাস করছে বা কাজ করছে। দ্রুত অপসারণ না করলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নাগরিকদের সুরক্ষার জন্যই আমরা জরুরি ভিত্তিতে ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসন ইতোমধ্যে একাধিক ওয়ার্কশপ করেছে। তবে উদ্ধারকাজে প্রধান সমস্যা হচ্ছে সঙ্কীর্ণ রাস্তা-ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে না পারলে রেসকিউ কার্যক্রম ব্যাহত হবে।’
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ কোনো প্লেট সীমানার মাঝখানে না থাকায় এখানে সাধারণত শক্তিশালী ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় না। সর্বশেষ ১৯১৮ সালে শ্রীমঙ্গলে রিখটার স্কেলে ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের পর বিগত ১০৭ বছরে দেশের অভ্যন্তরে উৎপত্তি হওয়া ভূমিকম্পগুলো সবই ছিল ৫ রিখটার স্কেলের নিচে। তবে গত শুক্রবার সকালে নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় উৎপত্তি হওয়া ভূমিকম্পটি ৫.৭ মাত্রার। ১৯১৮ সালের পর দেশের অভ্যন্তরে উৎপন্ন ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এটি। মাটির উপরিভাগ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে এ ভূমিকম্পের উৎপত্তি হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতিও বেশি হয়েছে।
ভূতত্ত্ববিদদের মতে, বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ডাউকি (ভারত) ও বার্মা (মিয়ানমার) প্লেটের খুব কাছাকাছি হওয়ায় ভূমিকম্পের ডেঞ্জার জোনে অবস্থিত সিলেট। ডাউকি ফল্টের খুব কাছাকাছি অবস্থান হওয়ায় এ অঞ্চলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের শঙ্কা রয়েছে। ১৮৯৭ সালে ডাউকি ফল্টে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর ১২৯ বছরে আর বড় কোনো ভূমিকম্প হয়নি। ফলে এখানে বেশ শক্তি সঞ্চয় করে আছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত আনতে পারে আশঙ্কা ভূতত্ত্ববিদদের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিলেটে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ধ্বংসলীলা ডেকে আনবে। এ ধরনের ভূমিকম্পে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে সিলেট নগরীর ৮০ শতাংশ ভবন। তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা স্থানীয় ফল্ট বা চ্যুতিগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠায় ভূমিকম্পের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে ভূমিকম্পের ‘ডেঞ্জার জোনে’ থাকা সিলেটে দুর্যোগের আশঙ্কা বাড়ছে।
গত শুক্রবার ঢাকায় অনুভূত হওয়া ভূমিকম্প সিলেটে হলে পুরনো ভবনগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতো- এমন আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এতো ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ও সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো উদাসীন। দুর্যোগ মোকাবেলার সামর্থ্য না থাকলেও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো অপসারণে কার্যত কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না সিসিক। গত দেড় দশকে সেমিনার সভা সমাবেশ হলেও বাস্তবে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচতে কোনো উদ্যোগই নেই সিসিকের।
তথ্য মতে, ১৮৯৭ সালের ১২ জুন ডাউকি ফল্টে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যে ভূমিকম্পে সিলেটের অনেক নদীর গতিপথও বদলে গিয়েছিল; যা সিলেটের ইতিহাসে ‘বড় বইছাল’ নামে পরিচিত। এরপর বিভিন্ন সময় ওই ফল্ট থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে, তবে বড় ধরনের কোন ক্ষতি হয়নি। কিন্তু সক্রিয় থাকা এ ফল্ট বারবার বড় ভূমিকম্প ও দুর্যোগের ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য বলছে, ২০২১ সালের মে মাসে ১০ দিনের মধ্যে সিলেটে ২০ বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মধ্যে ডাউকি ফল্টের কাছে ছিল কয়েকটির উৎপত্তিস্থল। বাকিগুলোর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট বিভাগ। ২০২১ সালে দফায় দফায় ভূমিকম্পের পর কিছুটা নড়েচড়ে বসে সিসিক। ঘোষণা দেয়া হয় নগরের সব ভবন পরীক্ষা করার। পরবর্তীতে বাজেট সঙ্কটের অজুহাতে এ উদ্যোগ ভেস্তে যায়। ওই সময় ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ২২টি ভবন চিহ্নিত করা হয়। ভবনগুলোর কোনটি রঙ পাল্টে, আবার কোনটিতে ‘টুকটাক’ সংস্কার করিয়ে এখনো ঠিক আছে।
আবহাওয়া অধিদফতর সিলেটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত অন্তত সাতটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলই ছিল সিলেট বিভাগের, গোলাপগঞ্জ, জগন্নাথপুর, মাইজভাগ ও নবীগঞ্জে। এ ছাড়াও গেল দুই বছরে সিলেট ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রায় দেড় শতাধিকের চেয়ে বেশি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেটের আবহাওয়া অফিস।
রঙ পাল্টে বহালতবিয়তে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ১৮ ভবন
সিসিকের তালিকানুযায়ী, নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো হলো- কালেক্টরেট ভবন-৩, সমবায় ব্যাংক ভবন মার্কেট, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাবেক কার্যালয় ভবন, সুরমা মার্কেট, বন্দর বাজার এলাকার সিটি সুপার মার্কেট, মিতালী ম্যানশন, দরগা গেইটের আজমীর হোটেল, মধুবন মার্কেট, কালাশীল এলাকার মান্নান ভিউ, শেখঘাটের শুভেচ্ছা-২২৬, চৌকিদেখী এলাকার ৫১/৩ সরকার ভবন। যতরপুরের নবপুষ্প-২৬/এ, জিন্দাবাজারের রাজা ম্যানশন, পুরানলেন এলাকার ৪/এ কিবরিয়া লজ, খারপাড়ার মিতালী-৭৪, মির্জাজাঙ্গালের মেঘনা-এ-৩৯/২, পাঠানটুলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর বাগবাড়ী এলাকার ওয়ারিছ মঞ্জিল একতা-৩৭৭/৭, হোসেইন মঞ্জিল একতা- ৩৭৭/৮ ও শাহনাজ রিয়াজ ভিলা একতা-৩৭৭/৯, বনকলাপাড়া এলাকার নূরানী-১৪, ধোপাদিঘী দক্ষিণপাড়ের পৌর বিপণী ও পৌর শপিং সেন্টার, এবং পূর্ব পীরমহল্লার লেচুবাগান এলাকার ৬২/বি- প্রভাতী, শ্রীধরা হাউস।
২০১৯ সালে কয়েক দফা ভূমিকম্পের পর নগরে জরিপ চালিয়ে রাজা ম্যানশন, মিতালী ম্যানশন, সুরমা মার্কেট, সিটি সুপার মার্কেট, মধুবন সুপার মার্কেট, সমবায় মার্কেটসহ সাতটি বিপণীবিতানকে ১০ দিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। একই সময়ে নগরের প্রায় ৪২ হাজার বহুতল ভবন পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিল সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। কিন্তু অর্থ সঙ্কটে সেই উদ্যোগ আর এগোয়নি।
তবে এখন এ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ২৩টি ভেঙে ফেলা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও পুর প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম নয়া দিগন্তকে বলেন, ঢাকার ভূমিকম্প সিলেটের জন্য অশনি সঙ্কেত। তার মতে, ঢাকায় ৫.৭ মাত্রার যে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে সেটির উৎপত্তিস্থল ‘মধুপুর ফল্ট লাইন’ এতদিন নিষ্ক্রিয় ছিল। হঠাৎ করে এটি সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। সিলেটে এ রকম বিভিন্ন নিষ্ক্রিয় লাইন রয়েছে। গত কয়েক বছরে এগুলো থেকে ছোট ছোট ভূমিকম্প হয়েছে। এতদিন ডাউকি ফল্ট লাইনে সবার নজর ছিল। এখন সময় এসেছে নিষ্ক্রিয় ও ছোট ফল্ট লাইনগুলোকেও গুরুত্ব দেয়ার।
সিলেটে ৫.৭ মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হলে পুরনো ভবনগুলো ধ্বংসস্তূূপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে ড. জহির বিন আলম বলেন, ঢাকায় নতুন বিল্ডিংগুলোর ক্ষতি কম হয়েছে। সিলেটে এ রকম ভূমিকম্প হলে পুরনো ও নন-ইঞ্জিনিয়ারিং বিল্ডিংগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ও এনভায়রনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মুশতাক আহমেদ নয়া দিগন্তকে বলেন, বর্তমানে সিলেটের অধিকাংশ স্থাপনাই উচ্চ মাত্রার ভূকম্পন সহ্য করতে সক্ষম নয়। সিলেট শহরে প্রায় ৪২ হাজার ভবন রয়েছে। এ সবের বেশিরভাগই পুরনো ও দুর্বল, যেগুলো মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পেই ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, সিলেট শহরে গড়ে ওঠা প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ ভবন নির্মাণে যথাযথ বিধিমালা মানা হয়নি। ফলে ভূমিকম্প হলে এ অঞ্চলে বিপুল প্রাণহানি ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার বলেন, ‘সিলেট মহানগরীতে যে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো রয়েছে সেই ভবনগুলোর সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা খুব শিগগিরই একটি পদক্ষেপ নেবো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ হুমায়ুন আখতার এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা গবেষণায় দেখেছি যে, বাংলাদেশের ভূমিকম্পের দু’টি উৎস আছে। একটি উত্তরের দিকে আছে, আরেকটা হচ্ছে পূর্ব দিকে। উত্তরের দিকটা হলো ডাউকি ফল্ট (ডাউকি চ্যুতি)। যে ভূমিকম্প হলো সেই হিমালয়ন মেইন ফ্রন্টাল থ্রাস্ট বেল্টে। সেটা আমাদের ভূমিকম্পের আরেকটি উৎসস্থল ডাউকি ফল্টেরই কাছাকাছি।
তিনি বলেন, সিলেট থেকে কক্সবাজার বা চট্টগ্রাম পর্যন্ত এ অংশটা খুব বিপজ্জনক। কেন না এখানে হাজার বছরের ওপরে বড় ভূমিকম্প হয়নি; অর্থাৎ যে শক্তিটা জমা হয়ে রয়েছে বা ক্রমাগত জমা হচ্ছে, গত এক হাজার বছরেও এটা শক্তিটা ছাড়েনি। এটা যেকোনো সময় বড় আকারের ভূমিকম্পের স্থান হয়ে উঠতে পারে।
আমরা গবেষণায় দেখেছি, এখানে ৮ দশমিক ২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তিসম্পন্ন ভূমিকম্প সৃষ্টি হওয়ার মতো শক্তি জমা হয়ে আছে। আর এটি যেকোনো সময় আঘাত হানতে পারে।



