সিমলিপাল অভয়ারণ্য

Printed Edition
সিমলিপাল অভয়ারণ্য
সিমলিপাল অভয়ারণ্য

লোপা জয়নুল আবেদীন

জানো, ভারতের ওড়িশা রাজ্যের একটি সংরক্ষিত এলাকা ‘সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান’। বাঘ সংরক্ষিত এলাকা হিসেবেও এর পরিচিতি আছে। সর্বোপরি এটি একটি অভয়ারণ্য।

সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান যেন প্রকৃতির এক আদুরে কন্যা; এক মায়াবী হাতছানি। সৌন্দর্য আর সম্পদে অনন্যা। যে গিয়েছে, যে দেখেছে সে-ই বুঝি মজেছে!

জীববৈচিত্র্যে অনন্যা সিমলিপালে উচ্চ মালভূমি, পাহাড়, পাহাড়চূড়া আর এসবকে ঘিরে থাকা বন, নদীনালা ও ঝরনাধারা- সব কিছু মিলে অপূর্ব নৈসর্গ।

সিমলিপালে রয়েছে ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ২৮২ প্রজাতির পাখি এবং ৩০ প্রজাতির সরীসৃপ। বাঘ, চিতাবাঘ, হাতি, সম্বর হরিণ, ছোট হরিণ, বন্যমহিষ, জংলিবিড়াল, বন্যশূকর, চারশিঙ্গা (হরিণবিশেষ), বড় বেজি, সাধারণ ল্যাঙ্গুর প্রভৃতি স্তন্যপায়ী দেখা যায় সংরক্ষিত এলাকায়।

লাল জংলিপেঁচা, পাহাড়ি ময়না, ঈগল, ধূসর হর্নবিল, মালাবার পাইড হর্নবিল প্রভৃতি পাখি রয়েছে এখানে। সাপ, কচ্ছপ, কুমির প্রভৃতি সরীসৃপ দেখা যায় এ উদ্যানে। ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপালে প্রথমে গড়া হয়েছিল একটি শিকার এলাকা। ১৯৫৬ সালে এখানে বাঘ সংরক্ষিত এলাকা গড়া হয়। ১৯৭৩ সালে একে প্রকল্প বাঘের (প্রজেক্ট টাইগার) অধীনে আনা হয়।

ওড়িশা সরকার সিমলিপালকে ১৯৭৯ সালে বন্যপশুপাখি অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা দেয়। তখন এর আয়তন ছিল প্রায় ২ হাজার ২০০ বর্গকিলোমিটার। ১৯৮০ সালে ৩০২ বর্গকিলোমিটার এলাকা জাতীয় উদ্যান হিসেবে একটি অভয়ারণ্য করার প্রস্তাব করে। পরে জাতীয় উদ্যানের আয়তন বাড়িয়ে করা হয় প্রায় ৮৪৬ বর্গকিলোমিটার।

১৯৯৪ সালে ভারত সরকার সিমলিপালকে জীবমণ্ডল সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে। ২০০৯ সালের মে মাসে ইউনেস্কো এই জাতীয় উদ্যানকে ‘জীবমণ্ডল সংরক্ষিত এলাকা’র তালিকায় সংযুক্ত করে।