বিডিআর হত্যাকাণ্ডে আ’লীগ জড়িত

জাতীয় স্বাধীন কমিশনের প্রতিবেদন : হাসিনার ছিল ‘গ্রিন সিগন্যাল’, সমন্বয়কারী তাপস

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে দলগতভাবে জড়িত ছিল আওয়ামী লীগ। আর এতে মূল সমন্বয়কারী ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস। কমিশন আরো বলেছে, পুরো ঘটনাটি সংঘটিত করার ক্ষেত্রে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ ছিল। ওই ঘটনার সময় কিছু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং কয়েকজন সাংবাদিকের ভূমিকা ছিল অপেশাদার।

বিশেষ সংবাদদাতা
Printed Edition
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব:) আ ল ম ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিবেদন জমা দেন
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব:) আ ল ম ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিবেদন জমা দেন |পিআইডি

জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বিডিআর হত্যাকাণ্ডে দলগতভাবে জড়িত ছিল আওয়ামী লীগ। আর এতে মূল সমন্বয়কারী ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস। কমিশন আরো বলেছে, পুরো ঘটনাটি সংঘটিত করার ক্ষেত্রে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ ছিল। ওই ঘটনার সময় কিছু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং কয়েকজন সাংবাদিকের ভূমিকা ছিল অপেশাদার।

বিডিআর বিদ্রোহের নামে সংঘটিত বর্বরতম হত্যাযজ্ঞের বিষয় তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের এ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব:) আ ল ম ফজলুর রহমান ও অন্য সদস্যরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেন। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন : মেজর জেনারেল (অব:) মো: জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) মো: সাইদুর রহমান বীর প্রতীক, মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ যুগ্মসচিব (অব:), ড. এম আকবর আলী ডিআইজি (অব:), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো: শরীফুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মো: শাহনেওয়াজ খান চন্দন।

গতকাল রাতে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানান।

২০০৯ সালের পিলখানা ট্র্যাজেডি নিয়ে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের বহুল প্রতীক্ষিত রিপোর্ট প্রকাশে ১৬ বছর ধরে নানা প্রশ্ন, গুজব ও রাজনৈতিক বিতর্কে ঢাকা থাকা বিডিআর হত্যাকাণ্ডের অন্তরালের প্রেক্ষাপট, পরিকল্পনা ও জড়িত পক্ষগুলোর ভূমিকা নিয়ে কমিশনের পর্যবেক্ষণ তৈরি করেছে নতুন আলোচনার ঝড়।

জাতি অন্ধকারে ছিল : প্রধান উপদেষ্টা

প্রতিবেদন গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতি দীর্ঘদিন ধরে অন্ধকারে ছিল। আপনাদের কাজ সত্য উদ্ঘাটনের এক ঐতিহাসিক অবদান।”

তিনি আরো বলেন, “ইতিহাসের এই ভয়াবহতম ঘটনা নিয়ে জাতির বহু প্রশ্নের জবাব এই প্রতিবেদনে মিলবে। ভবিষ্যতের জন্য এটি একটি মূল্যবান দলিল।”

তদন্তের চ্যালেঞ্জ : নষ্ট আলামত, পালিয়ে যাওয়া সন্দেহভাজন

কমিশন প্রধান ফজলুর রহমান জানান, তদন্তের শুরু থেকেই তারা দেখতে পান- ঘটনার বহু আলামত ধ্বংস, সংশ্লিষ্ট অনেক ব্যক্তির দেশত্যাগ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের স্মৃতিভ্রংশ ও ভয়ের কারণে সাক্ষ্য সংগ্রহ ছিল কঠিন।

তার ভাষায়- “কারো বক্তব্য আমরা ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত শুনেছি। প্রত্যেক টুকরো তথ্য, পূর্ববর্তী তদন্ত, গোয়েন্দা রিপোর্ট- সবকিছু মিলিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কাঠামো দাঁড় করানো হয়েছে।”

কমিশনের বিস্ফোরক ফাইন্ডিংস

১. বিডিআর হত্যাকাণ্ড ‘পরিকল্পিত’; বহিঃশক্তি জড়িত

জাহাঙ্গীর কবির তালুকদারের বক্তব্যে উঠে আসে- বিদেশী শক্তির সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের লক্ষ্য ছিল সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করা।

২. আওয়ামী লীগের দলগত সম্পৃক্ততা

কমিশনের মতে- তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সংগঠিতভাবে ঘটনাটিকে পরিচালনা ও আড়াল করতে ভূমিকা রাখে।

স্থানীয় নেতারা ২০-২৫ জনের মিছিল নিয়ে পিলখানায় ঢোকে এবং বের হওয়ার সময় মিছিল ফুলে ওঠে ২০০ জনে। এই তথ্য কমিশনকে নাড়িয়ে দেয়।

৩. প্রধান সমন্বয়কারী : শেখ ফজলে নূর তাপস

কমিশনের ভাষ্য : “পুরো হত্যাকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রধান সমন্বয়কারী ছিলেন তৎকালীন এমপি শেখ ফজলে নূর তাপস।”এটি তদন্তের অন্যতম সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ উপসংহার।

৪. শেখ হাসিনার ‘গ্রিন সিগন্যাল’

আরো বিস্ফোরক দাবি- হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পূর্বাপর সময়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দিয়েছিলেন।

রাজপথে সংঘটিত দেশব্যাপী গুজব, বিভ্রান্তি ও সেনাবাহিনীর অনিষ্ক্রিয়তা কমিশনকে এই পর্যবেক্ষণে নিয়ে আসে।

৫. সেনাপ্রধান থেকে গোয়েন্দা সংস্থা- সব স্তরে ব্যর্থতা

কমিশন বলছে, সেনাবাহিনী ঘটনার শুরুতে অ্যাকশন নেয়ার সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও নিষ্ক্রিয় ছিল। রথ্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পূর্ণ মাত্রায় ব্যর্থ হয়। ট্র্যাজেডির সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব বিডিআর সদস্যদের সাথে যমুনায় বৈঠক করেন, তাদের পরিচয় নথিভুক্ত না করাই কমিশনকে গভীর সন্দেহে ফেলেছে।

৬. মিডিয়ার অপেশাদার আচরণ

কমিশনের মতে, কয়েকটি গণমাধ্যম ও কিছু প্রতিবেদকের আচরণ ছিল- ‘উস্কানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও অপেশাদার।’ এগুলো তৎকালীন সঙ্কটকে আরো জটিল করে তোলে।

ভবিষ্যতের জন্য সুপারিশ

কমিশন তাদের প্রতিবেদনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ দেয় :

ক. বাহিনীগুলোর কমান্ড কাঠামো পুনর্গঠন : বহিরাগত রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত পেশাদার নেতৃত্ব নিশ্চিত করা।

খ. সেনা, পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর সমন্বিত সঙ্কট-প্রোটোকল : বিভিন্ন সংস্থার যৌথ অপারেশন কাঠামো বাধ্যতামূলক করা।

গ. স্বচ্ছ তদন্ত ও নথিবদ্ধকরণ : গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা বিদ্রোহী অবস্থায় সব ব্যক্তির পরিচয়, ভিডিও-লগ সংরক্ষণ।

ঘ. ভিকটিম পরিবারগুলোর ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণ : হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের জন্য বিশেষ তহবিল।

ঙ. বিদেশী প্রভাব মোকাবেলায় কৌশলগত ইউনিট গঠন

৭৩৩টি অভিযোগ

কমিটি সর্বমোট ৭৩৩টি অভিযোগ পায় যার মধ্যে ৪০৫টি গৃহীত হয়, কমিটি কর্তৃক সুপারিশকৃত আবেদনের সংখ্যা ১১৪, কমিটির কার্যপরিধির আওতাবহির্ভূত আবেদন ২৪টি এবং ৯৯টির আবেদনকারীর ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ভঙ্গের, সাজা মওকুফের ও নৈতিক স্খলনজনিত বিষয় রয়েছে ।

আব্দুল হাফিজ জানান, আবেদনপত্র পর্যালোচনার জন্য গঠিত কমিটি গত ১৯ আগস্ট ২০২৫ তারিখে প্রথম সভা আহ্বান করে। বঞ্চিত অফিসারদেরকে সেন্ট্রাল অফিসার্স রেকর্ড অফিস, আইএসপিআর এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সংগঠন রাওয়ার মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং টিভি স্ক্রলের মাধ্যমে ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে আবেদন জমা দিতে বলা হয়।

জেনারেল আব্দুল হাফিজ জানান, নিজ নিজ বাহিনী কর্তৃক গঠিত বোর্ড যাদের বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করেছে তাদের বিরুদ্ধে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কোনো নৈতিক স্খলনজনিত শাস্তি কিংবা অভিযোগ ডোসিয়ারে লিপিবদ্ধ ছিল না।

এই কমিটি নিজ নিজ বাহিনী কর্তৃক গঠিত বোর্ডের সুপারিশ আমলে নিয়ে সেগুলোর বাইরেও কমিটি বিবেচনা উপযুক্ত আবেদনসমূহে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এবং আবেদনকারীর সাথে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সুপারিশ প্রদান করেছে।

অনেক আবেদনকারী সম্পর্কে কমিটির সদস্যবৃন্দ মতামত দিয়েছেন, আবেদনের যথার্থতা ও বঞ্চিত হওয়ার যৌক্তিকতা সম্পর্কে তাদের মতামত নির্মোহভাবে কমিটিতে উপস্থাপন করেছেন বলে জানান জেনারেল হাফিজ।

তিনি বলেন, কমিটি ভুক্তভোগী অফিসারদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের অধিনায়ক ও ঊর্ধ্বতন অফিসারদের সাথে ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের বঞ্চনা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে।

কমিটির অনুসন্ধানে জানা যায়, আবেদনকারীদের মধ্যে ছয়জন অফিসারকে তাদের আত্মীয়-স্বজনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার দরুন বা জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অপবাদ দিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে বিভিন্ন মেয়াদে (১ বছর হতে ৮ বছর পর্যন্ত) গুম করে রাখা হয়, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এমনকি একজন অবসরপ্রাপ্ত অফিসারকে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়, পরবর্তীতে উক্ত অফিসারের স্ত্রীকে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এক বছরের শিশুসহ বিনা বিচারে দুই দফায় দীর্ঘ ছয় বছর কারাগারে রাখা হয়।

তদন্তে আরো জানা যায়, কিছু সংখ্যক অফিসার ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে বিডিআর হত্যাযজ্ঞের নারকীয় ঘটনায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় সোচ্চার ছিলেন, তাদের মধ্যে পাঁচজনকে একটি ভুয়া ঘটনা (ব্যারিস্টার তাপস হত্যা প্রচেষ্টা মামলা) সাজিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করে।

তদন্তে জানা যায়, পাঁচজন অফিসার ১/১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ডিজিএফআইতে কর্মরত থাকাকালীন তাদেরকে মিথ্যা অভিযোগে কিংবা বিনা অভিযোগে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

তদন্তে বেরিয়ে আসে যে, কিছু অফিসার বিডিআর হত্যাযজ্ঞের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর দরবারে প্রশ্ন করার জন্য সেনাসদর কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এক পর্যায়ে উক্ত দরবারে ব্যাপক হইচই ও হট্টগোল হওয়ায়, পাঁচজন অফিসারকে অযথা দায়ী করা হয় এবং তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো প্রকার সুযোগ না দিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

চারজন কনিষ্ঠ অফিসার (লেফটেন্যান্ট পদবির) ধর্মীয় আচার-আচরণ নিয়ম-নিষ্ঠার সাথে পালন করার কারণে তাদেরকে কোনো একটি দলের অনুসারী হিসেবে অথবা জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে অন্যায়ভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় বলেও বেরিয়ে আসে তদন্তে।

তদন্তে দেখা যায়, ২৮ জন বিদ্যমান নীতিমালা অনুসরণ করে পদক্ষেপ গ্রহণ সত্ত্বেও গুম, অপহরণ, অবৈধভাবে আটক রেখে অমানসিক নির্যাতন ও জেরা, লোক দেখানো প্রহসনের তদন্ত ও বিচারহীন, আইন-বহির্ভূত কার্যকলাপে এই সব কর্মকর্তারা নানাবিধ বঞ্চনা, নির্মম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, বর্ণনাতীত পারিবারিক ও সামাজিক লাঞ্ছনা এবং প্রভৃতি আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনীতে বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার ১১৪ জন কর্মকর্তা সম্পর্কে সুপারিশ প্রদান করা হয়েছে। তাদেরকে (যার জন্য যা প্রযোজ্য) স্বাভাবিক অবসর প্রদান, পদোন্নতি, অবসর পূর্ব পদোন্নতি, বকেয়া বেতন ও ভাতা এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি প্রদান করার জন্য কমিটি সুপারিশ করে। এর মধ্যে চারজনকে চাকরিতে পুনঃবহাল (ৎব-রহংঃধঃব) করার জন্য কমিটি সুপারিশ করে।

নৌবাহিনীতে বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার ১৯ জন কর্মকর্তাকে (যার জন্য যা প্রযোজ্য) স্বাভাবিক অবসর প্রদান, পদোন্নতি, অবসরপূর্ব পদোন্নতি, বকেয়া বেতন ও ভাতা এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি প্রদান করার জন্য কমিটি সুপারিশ করে।

বিমানবাহিনীতে বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার ১২ জন কর্মকর্তাকে (যার জন্য যা প্রযোজ্য) স্বাভাবিক অবসর প্রদান, পদোন্নতি, অবসরপূর্ব পদোন্নতি, বকেয়া বেতন ও ভাতা এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি প্রদান করার জন্য কমিটি সুপারিশ করে।

আবেদনকারীদের মধ্যে ১২৫ জন সেনা, ৫১ জন নৌ এবং ২৫ জন বিমানবাহিনীর সদস্য।

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে মো: আশরাফ উদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ তারিক উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় নিরাপত্তার নতুন প্রশ্ন

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) আব্দুল হাফিজ এবং স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি।

কমিশনের রিপোর্ট- সরকারের নীতি, সেনাবাহিনীর মনোবল, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি- সব ক্ষেত্রেই নতুন করে আলোচনার ক্ষেত্র সৃষ্টি করেছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের এই প্রতিবেদন শুধু একটি অতীত ঘটনার তথ্য-উন্মোচন নয়; এটি রাষ্ট্রের সমগ্র নিরাপত্তা কাঠামো, রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণ, সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্বের দায়বদ্ধতা এবং গোয়েন্দা ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাসের প্রশ্ন সামনে এনেছে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এর প্রভাব তাৎক্ষণিকই নয়, দীর্ঘমেয়াদেও গভীর হয়ে উঠতে পারে।