ক্রীড়া প্রতিবেদক
দুই ওপেনার যখন ১০ রান করতে পারেন না, ৮২ বলে যখন বাউন্ডারি হয় না, তখন সহজে অনুমেয় ম্যাচটি কেমন ছিল। শেষ ১৪ বলে যখন চার উইকেট হারাতে হয় তখন এটিকে অসহায় আত্মসমর্পণ বললে অত্যুক্তি হবে না। রানের ডাবল যখন বল খেলতে হয় তখন এটিকে ওয়ানডের আদলে টেস্টই বলা যায়। অবশ্য শেষদিকে রিশাদের ১৩ বলে এক চার ও দুই ছক্কায় ২৬ এবং তানভীরের চার বলে এক ছক্কায় ৯ রান ঘুম ভাঙিয়েছে উপস্থিত দর্শকদের। এরপর বল হাতে ৬ উইকেট নেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। ৯ ওভার বল করে ৩৫ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি। এতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৭৪ রানে জিতে ১-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
এক সময় যেখানে বাংলাদেশ ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে ছিল ছয়ে, এখন তারা দশে এবং এটা এক সিরিজের ফল নয়। গত আট ওয়ানডে সিরিজে জয় এসেছে মাত্র একটিতে। তার চেয়েও উদ্বেগের, ব্যাটিং লাইনআপের ভঙ্গুরতা যেন ক্রমেই বেড়েই চলেছে। টপ অর্ডার থেকে মিডল অর্ডার- সব জায়গায় অনিশ্চয়তা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে আবারো ব্যর্থতার ছবি আঁকল বাংলাদেশ। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৪৯.৩ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২০৭ রানে থামে মিরাজের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের ক্ষত ভুলে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামলেও শুরুটা ছিল ভীষণ হতাশার। প্রথম ওয়ানডেতে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার সাইফ হাসান এবং অনেকদিন পর দলে ফেরা সৌম্য সরকার দু’জনেই আউট হয়ে গেছেন। সাইফ ছয় বলে তিন এবং সৌম্য করেছেন ছয় বলে চার রান। আট রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে বাংলাদেশ।
শুরুর ধাক্কা সামাল দিতে নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয় কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। তবে ব্যাটে ছিল না সেই আত্মবিশ্বাসের ছাপ। ধীরগতির ব্যাটিংয়ে শান্ত ৬৩ বলে করেন মাত্র ৩২ রান। অপরদিকে হৃদয় ছিলেন কিছুটা ইতিবাচক। ৯০ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলে তিনিই ছিলেন দলের সর্বোচ্চ স্কোরার। হৃদয়ের বিদায়ের পর দলের দায়িত্ব নেন অভিষিক্ত মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। দেশের ১৫৪তম ওয়ানডে ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হওয়া এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার টিকে থেকে দলের হাল ধরেন। অভিষেকেই বেশ নিভৃতে খেললেও ফিফটির দ্বারপ্রান্তে থামেন অঙ্কন। ৭৬ বলে ৪৬ রান করে রোস্টন চেইজের বলে বোল্ড হন। এর আগে চেইজের শিকার হন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও, যিনি ২৭ বলে করেন ১৭ রান।
ইনিংসের শেষ দিকে বাংলাদেশের রান একটু গতি পায় রিশাদ হোসেনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে। দুইটি ছক্কা ও একটি চার মেরে মাত্র ১৩ বলে ২৬ রান করেন তিনি। শেষ ওভারে তানভীর ইসলামের একটি ছক্কায় ২০০ রানের কোটা পার করে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত চার বলে ৯ রানে অপরাজিত থাকেন তানভীর।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেডন সিলস তিনটি, জাস্টিন গ্রেইভস ও রোস্টন চেইজ দু’টি করে এবং একটি করে উইকেট পান রোমারিও শেফার্ড এবং খায়েরে পিয়েরে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : টস ওয়েস্ট ইন্ডিজ (ফিল্ডিং)
বাংলাদেশ : ৪৯.৪ ওভারে ২০৭ (হৃদয় ৫১, অঙ্কন ৪৬, নাজমুল ৩২, রিশাদ ২৬, মিরাজ ১৭; সিলস ৩/৪৮, চেজ ২/৩০, গ্রিভস ২/৩২)।



