রাজধানীর সড়কের ভয়াল দশা

খালিদ সাইফুল্লাহ
Printed Edition

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে পদ্মা সেতুগামী সড়কের ফাইওভার-সংলগ্ন পশ্চিম লেনে পুকুর সদৃশ অসংখ্য গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে যানবাহনের যেন চলা দায়। রিকশা-মোটরসাইকেল প্রায়ই এ সড়কে দুর্ঘটনায় পড়ছে। অন্যান্য গাড়ি চলছে ঝুঁকি নিয়ে। অনেক দিন ধরেই সড়কটির বেহাল দশা। সম্প্রতি বর্ষার কারণে ক্ষতিগ্রস্ততার পরিমাণ বেড়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এ সড়কের দিকে কোনো নজর আছে বলে মনে হয় না। একইভাবে রাজধানীর অধিকাংশ সড়কেরই ভয়াবহ অবস্থা। মানিকনগর বিশ্বরোড থেকে রামকৃষ্ণ মিশনগামী এবড়ো থেবড়ো সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গেলে শরীরের হাড় ব্যথা হয়ে যায়। কোনো কোনো জায়গায় একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। তখন গাড়ি চলাচল করতে চালকদের আরো বিপদে পড়তে হয়।

রাজধানীর গুলশান ও প্রগতি সরণির যানজট কমাতে বাড্ডার গুদারাঘাট থেকে শাহজাদপুর পর্যন্ত লেকপাড় সড়ক উদ্বোধন করা হয়েছিল। কিন্তু উদ্বোধনের ৮ বছরেও এ সড়ক সংস্কার করা হয়নি। এখন সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জায়গায় গর্তে যানবাহনের চাকা আটকে যাচ্ছে। ছোট যানবাহনগুলো উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। তার পরও সড়কটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। একইভাবে গুদারাঘাট থেকে হাতিরঝিল পর্যন্ত (দক্ষিণ বাড্ডা) সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তের কারণে সড়কে নিয়মিত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

একইভাবে পল্টন, মতিঝিল, দৈনিকবাংলা, আরামবাগ, নয়াপল্টন, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, গুলিস্তানসহ রাজধানীর প্রায় প্রতিটি বড় ও ছোট সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। এসব সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

যাত্রাবাড়ী সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী সহিদুল ইসলাম বলেন, এ সড়কটি অনেকদিন ধরেই খানাখন্দ হয়ে চলাচলের পুরোপুরি অনুপোযোগী হয়ে গেছে। বড় বড় গর্তে পানি জমে থাকে। পাশ দিয়ে হাঁটতে গেলেও গাড়ির চাকার পানি গায়ের জামায় এসে লাগে। অনেক সময় রিকশায় বসে থাকলেও কাদাপানি ছিটে গায়ে লেগে কাপড় নষ্ট হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কোনো চোখ আছে বলে মনে হয় না। এ রাজধানীতে রাস্তার ভালোমন্দ দেখার কি কেউ নেই? প্রথমে ইটবালু দিয়েওতো ভরে দেয়া যায়। তারপর ভালো করে পুনর্নির্মাণ করতে পারে। কিন্তু সব কিছুই যেন চলছে খেয়াল খুশিমতো। নাগরিকদের ভোগান্তি দেখার কেউ নেই।

আরকে মিশন রোড দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী আরিফ বিল্লাহ বলেন, মানিকনগর বিশ্বরোড থেকে নামলেও সড়কের যে ভয়াবহ অবস্থা তা বলার মতো নয়। কয়েক বছর ধরেই এ অবস্থা। বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। এতে রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন সামান্য বৃষ্টি হলেও রামকৃষ্ণ মিশনের সামনের সড়কে পানি জমে যায়। তখন ভাঙা রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে রিকশা, মোটরসাইকেল প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন মতিঝিলগামী হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। ফলে খারাপ সড়কটির কারণে প্রতিনিয়ত মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো: বোরহান উদ্দিন নয়া দিগন্তকে বলেন, যাত্রাবাড়ীর ওই সড়কটির উন্নয়নে ইতোমধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। আশা করছি আগামী দুই মাসের মধ্যে সড়কটি ঠিক হয়ে যাবে। এ ছাড়া রাজধানীর অন্যান্য জায়গার সড়কে যেসব গর্ত তৈরি হয়েছে সেগুলো সংস্কারেও আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি।