একীভূত ৫ ইসলামী ব্যাংকে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি বিএসইসির

তাদের দাবি- সরকার ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের সুরার বিষয়টি যেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখছে, একই রকমভাবে শেয়ারহোল্ডারদের বিষয়টিও বিবেচনা করা উচিত।

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
Printed Edition

ইসলামী ধারার পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। এ পাঁচটি ব্যাংকই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। তাই পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরণে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পাওয়া তথ্য অনুসারে, দুর্বল ও তারল্য সঙ্কটে ভুগতে থাকা পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্তে আমানতকারীদের সম্পূর্ণ সুরার কথা বলা হলেও ব্যাংকগুলোর শেয়ারহোল্ডার সাধারণ বা ুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এমন কোনো তথ্য পায়নি সংস্থাটি। তাই বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরণে এ চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুযায়ী, একীভূতকরণের েেত্র সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কোনো তিপূরণ পাবেন না। নতুন ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে। তবে সেখানে ওই পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের কোনো শেয়ার থাকবে না। এসব ব্যাংকের শেয়ার নতুন করে ইস্যু করা হবে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসলামী ধারার পাঁচ ব্যাংকের বর্তমান অবস্থার জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দায় নেই। এ জন্য দায়ী ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকেরা এবং তারা চিহ্নিত। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা দরকার বলে তারা মনে করছেন। তারা বলছেন, যেহেতু এখানে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দায় নেই, তাহলে তাদের শেয়ার কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে? এ কারণে পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণের েেত্র সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরণ বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি। তাদের দাবি- সরকার ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের সুরার বিষয়টি যেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখছে, একই রকমভাবে শেয়ারহোল্ডারদের বিষয়টিও বিবেচনা করা উচিত।

গভর্নরকে দেয়া চিঠিতে বিএসইসি জানিয়েছে, একীভূত করতে যাওয়া ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এবং এক্সিম ব্যাংক পিএলসির বর্তমান এই অবস্থার জন্য কোনোভাবেই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা দায়ী নন। ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ-২০২৫-এর ধারা-৭৭ এ বর্ণিত দায়ী ব্যক্তিগণ ব্যাংকগুলোর এই অবস্থার জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী, যা ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশে স্বীকৃত। উক্ত পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণের েেত্র সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরণে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করার কথা জানিয়েছে বিএসইসি।

১. ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিটে প্রদর্শিত সম্পদ মূল্যায়নের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর লাইসেন্স, ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্ক, কায়েন্ট বেজ, হিউম্যান রিসোর্স বেজ, সার্ভিস ডেলিভারি মেকানিজম এবং ব্র্যান্ড ভ্যালু ইত্যাদি মূল্যায়ন করে বিক্রয় মূল্য বিবেচনায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নির্ধারণ করা।

২. ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিটে প্রদর্শিত সম্পদ মূল্যায়নের পাশাপাশি ব্যাংক প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে সংরতি জামানত এবং দায়ী ব্যক্তিপণের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করে আদায়যোগ্য অর্থ বিবেচনায় নিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ নির্ধারণ করা।

৩. ধারা-৭৭ এ বর্ধিত দায়ী ব্যক্তিগণ কর্তৃক ধারণকৃত শেয়ার ব্যতীত অন্যান্য সাধারণ শেয়ারহোল্ডারগণ বা সাধারণ বিনিয়োগকারী কর্তৃক বিনিয়োগকৃত অর্থ সাধারণ বিনিয়োগকারীর ন্যূনতম স্বার্থমূল্য বিবেচনা করে একীভূতকরণের অনুপাত নির্ধারণ করা।

৪. উপরি উক্ত মূল্যায়ন বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংক পাঁচটির সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ মূল্য অনুপাতে ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা। ব্যাংকগুলোতে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ মূল্য অনুপাত নির্ধারণ ও তা ঘোষণা না করে অথবা সাধারণ বিনিয়োগকারী কর্তৃক ধারণকৃত শেয়ারের এক্যুইজেশন মূল্য নির্ধারণ এবং তা ঘোষণা না করে স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে তালিকাচ্যুত না করার কথাও গভর্নরকে দেয়া চিঠিতে জানিয়েছে বিএসইসি।